×

মুক্তচিন্তা

বিদ্যুৎ ভোগান্তির চরম পর্যায়ে নাসিরনগরবাসী

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:০৩ এএম

বিদ্যুৎ ভোগান্তির চরম পর্যায়ে নাসিরনগরবাসী
সাংস্কৃতিক রাজধানী-খ্যাত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত সর্বোত্তরের উপজেলা হচ্ছে নাসিরনগর। ইতিহাস ঐতিহ্যে ভরপুর ও জ্ঞানী-গুণীদের বিশেষ অবদানের জন্য এ উপজেলা বাংলাদেশে সর্বাধিক পরিচিত। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্রযাত্রায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে এ উপজেলায়ও। ইতোমধ্যে নাসিরনগর উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তারপরও এ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের তালবাহানা ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট এখন চরম পর্যায়ে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। করোনার ক্লান্তিলগ্নে পল্লী বিদ্যুতের তালবাহানায় ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও ছোট বড় কলকারখানাগুলো এখন বন্ধের মুখে। প্রচণ্ড তাপদাহে শিশু, বয়োবৃদ্ধসহ মানুষের কষ্টের সীমা নেই। করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। নীল আকাশে কালো মেঘের আভাস পেলেই নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুৎ এক প্রকার ভয় পেয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়। পল্লী বিদ্যুতের তার ছিঁড়তে কোনো ঝড়-ঝাপটা বা বিশাল আকারের বাতাস কিংবা টর্নেডোর প্রয়োজন হয় না। অল্প বাতাসে তার ছিঁড়ে যাওয়া বা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এমন বাজে অজুহাত পল্লী বিদ্যুতের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। তাদের এমন ভেলকিবাজিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রিক সব ব্যবসায়ীকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম, মানুষ ছটফট করছে অসহ্য গরমে। তার ওপরে বিদ্যুতের অসহনীয় বিভ্রাটে এখন নাকাল অবস্থা। কোনো না কোনো সমস্যা লেগেই থাকছে। অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে বিদ্যুতের সরবরাহ। এমন ভ্যাপসা গরমের মধ্যে বিদ্যুতের এমন বিভ্রাটে মানুষ অস্থির হয়ে উঠেছে। লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। নাসিরনগরের বিদ্যুৎ যায় ঘণ্টায় ঘণ্টায়। অতি তাপমাত্রায় লোডশেডিং, বৃষ্টিপাতে লোডশেডিং, লাইন মেরামতে লোডশেডিং, ত্রæটি-বিচ্যুতিতে লোডশেডিং- এ যেন খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করিয়েই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন করে রাখার রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। নাসিরনগর উপজেলায় প্রতিনিয়ত ঘন ঘন বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার লুকোচুরি খেলা চলছেই, রাতে বিদ্যুৎ না থাকলে পুরো গ্রাম, মহল্লাজুড়ে ঘুটঘুটে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যায়। ফলে বেড়েই চলছে চুরি ও ডাকাতি। বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার এমন দুঃসহ খেলায় সর্বত্রই মানুষ ত্যক্ত-বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো চলছে বেহাল অবস্থায়। বিদ্যুতের অভাবে অফিস আদালতেও ঠিকমতো কাজ হচ্ছে না। হাসপাতালগুলো চলছে আরো অমানবিকভাবে, লোডশেডিংয়ের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে রোগীর অপারেশন, এক্স-রে, ইসিজি ইত্যাদি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। গ্রামের রীতি অনুযায়ী সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে যখনই স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিলে হাজির, ঠিক তখনই বিদ্যুৎ নামক সোনার হরিণ মহাশূন্যে পালিয়ে বেড়ায়। প্রচণ্ড গরমে হারিকেন বা মোমবাতি জ্বালিয়েও পড়াশোনা করার কোনো উপায় থাকে না, এর ওপর আবার মশার উপদ্রব। সাম্প্রতিককালে ডেঙ্গুও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, বারবার লোডশেডিংয়ের ফলে মশার কামড় থেকেও রক্ষা পাচ্ছে না শিক্ষার্থীসহ উপজেলাবাসী। সবমিলিয়ে নাসিরনগরের জনগণ এখন অসহায়ত্বে দিনাতিপাত করছে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও পল্লী বিদ্যুতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সুদৃষ্টি কামনা করছি। অতিদ্রুত বৈদ্যুতিক সমস্যার নিখুঁত সমাধান আসবে বলে প্রত্যাশা করছি। তোফায়েল আহমেদ রামীম শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ, ঢাকা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App