×

সম্পাদকীয়

গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরবে কখন?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১:২৪ এএম

গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরবে কখন?

গণপরিবহনে নৈরাজ্য নিয়ে লেখালেখি কম হয়নি। এখনো হচ্ছে। কোনো পরিবর্তন হয়েছে। হয়নি। বরং ক্ষেত্র বিশেষে বেড়েছে। এখন করোনাকাল চলছে। করোনাকে পুুঁজি করে ভাড়া নৈরাজ্য বেশি হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা তো দূরের কথা। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভায় বক্তারা গণপরিবহনে নৈরাজ্য নিয়ে নতুন করে অভিযোগ তুলেছেন। তারা বলছেন, গণপরিবহনে যাত্রী হয়রানি, ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় ও নৈরাজ্য চরমে পৌঁছেছে। সড়ক পরিবহন নতুন আইন থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে ২৩ হাজার মানুষ মারা যায়। অথচ করোনায় প্রথম বছরে মারা গেছেন ৬ হাজার মানুষ। পৃথিবীর সব দেশের মধ্যে বাংলাদেশে সড়কে নৈরাজ্য, হয়রানি এবং ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। জীবনের অধিকার সবচেয়ে বড় অধিকার। এ অধিকার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের এ বক্তব্যের সঙ্গে আমরাও সহমত পোষণ করছি। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনের পর থেকে এখন পর্যন্ত বাস-মিনিবাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া তিন দফায় বৃদ্ধি করেছে সরকার। প্রতিবারই পরিবহন মালিকরা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার হার মেনে চলার অঙ্গীকার করেছেন। কিন্তু বাস্তবে সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাড়াই আদায় করা হয়েছে। ঢাকা শহরের প্রায় ২ কোটি মানুষের ৮০ ভাগই নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণিভুক্ত। এরা গণপরিবহনের ওপর নির্ভরশীল। করোনাকালীন এই দুঃসময়ে সাধারণ মানুষের এই নির্ভরশীলতাকে পুঁজি করে পরিবহন মালিকরা বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন। এতে করে সকালবেলা ঘর থেকে বেরিয়ে অফিসমুখী বাস ধরতে গিয়ে প্রতিদিনই অনাকাক্সিক্ষত বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন কর্মজীবী মানুষ। পরিবহন খাতে এই নৈরাজ্য দিনের পর দিন চলতে পারে না। মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। কোথাও যাত্রীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজারও দেয়া হয় না। এ অবস্থায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গণপরিবহন চলাচলে বিধিনিষেধসহ বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। করোনা দুর্যোগের কারণে এ সময়ে গণপরিবহনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ স্বাস্থ্য সতর্কতা অবলম্বন। গণপরিবহনগুলোতে গাদাগাদি করে যাত্রী নেয়ার নিয়ম না থাকলেও তা কমই কার্যকর হতে দেখা যায়। অন্তত এ সময়ের জন্য হলেও নির্দিষ্ট আসনের অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার প্রবণতা বন্ধ করতেই হবে। পাশাপাশি সংকটে গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়ার ভোগান্তিটা যাত্রীসাধারণকে যেন পোহাতে না হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে। যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে তা পুষিয়ে নেন পরিবহন মালিকরা। সরকারকে সংঘবদ্ধ এই চক্রকে প্রতিহত করতে এগিয়ে আসতে হবে। যাত্রীসাধারণের বৃহত্তর স্বার্থেই অবিলম্বে এই অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধ করা উচিত বলে আমরা মনে করি। কেবল সরকারের সতর্কতাই যথেষ্ট নয় বরং আমরা মনে করি, বাস মালিক সমিতিসহ চালক ও যাত্রী সবারই সচেতন হওয়া জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App