তথ্য মন্ত্রণালয় ওটিটি প্লাটফর্ম বিষয়ে নীতিমালার খসড়া প্রস্তুত করেছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আজ সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা জানান।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধান কাজ ‘রেগুলেটরি জব’; নীতি, নীতিমালা তৈরি করে গণমাধ্যমের বিকাশকে এগিয়ে নেয়া। ওটিটি প্লাটফর্ম একটি ক্রমবর্ধমান বাস্তবতা। কিন্তু ওটিটি প্লাটফর্মে সিনেমা, নাটক, ওয়েব সিরিজ বা কোনো কন্টেন্ট রিলিজ করতে হলে এখনো অনুমোদনের ব্যবস্থা নেই। আমি ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছি যে তারা কিভাবে বিষয়টিকে দেখভাল করছেন। তারা ফেব্রুয়ারি মাসে একটি নীতিমালা জারি করেছে, সেখান থেকে পরিচালিত সমস্ত ওটিটি প্লাটফর্মকে এই নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। সেই নীতিমালার ব্যত্যয় হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা ইতোমধ্যেই নীতিমালার প্রাথমিক খসড়া তৈরি করেছি। যা সহসাই প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করতে পারবো।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ওটিটি প্লাটফর্মের কন্টেন্ট এতো বিস্তৃত এবং ব্যাপক যে, সেন্সর বোর্ডের মাধ্যমে সেন্সর করা দুরূহ কাজ। কারণ বছরে ৫০টি বা ১০০টি সিনেমা রিলিজ হয়, সেটি সেন্সর করা সহজ। কিন্তু ওটিটি’র হাজার কন্টেন্ট সেন্সর করা সহজ নয়। সেকারণে ভারতসহ অন্যান্য দেশে যেভাবে করা হচ্ছে সেভাবে আমরাও একটি নীতিমালা করব।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সম্পর্কে ড. হাছান বলেন, বর্তমানে গণমাধ্যমের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যুক্ত হয়েছে। সামাজিক মাধ্যম মানুষকে মতপ্রকাশের অবারিত সুযোগ করে দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সমাজে নানাধরণের অস্থিরতা তৈরি, সরকার ও ব্যক্তির বিরুদ্ধেও অপপ্রচার চালানোর সুযোগ হিসেবেও এটির ব্যবহার লক্ষণীয়। মূলধারার গণমাধ্যমগুলো সঠিকভাবে কাজ করেছে কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশ-বিদেশ থেকে করোনাকালেও অনেক গুজব রটানো এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয় এই ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনতে অনলাইন সংবাদ পোর্টাল, আইপি টিভি’র রেজিস্ট্রেশন দেয়া শুরু করাসহ অনেকগুলো কাজ করেছে। বিদেশে বসে যারা অনলাইন পোর্টাল ব্যবহার করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। এক্ষেত্রে সার্ভিস প্রোভাইডারদের থেকে সবসময় সহযোগিতা পাইনা। এজন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যারা বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে যে দেশ থেকে অপপ্রচার চালায় সেই দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিএনপি’র ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি’ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, বিএনপি একথা ২০১৪ সালের নির্বাচনের বহু আগে থেকেই বলে আসছিল। সেই নির্বাচন বানচালে ৫শ’ ভোট কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল, নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ বহু মানুষকে হত্যা করেছিল। এরপরও নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও হুমকি-ধামকি দিলেও নির্বাচনে তারা অংশ নিয়েছে। সেই নির্বাচনে তারা যদি শুরু থেকেই সিরিয়াস থাকত, তাহলে আরো ভালো ফলাফল পেতো। এখনো নির্বাচনের সোয়া দুই বছর বাকী। বিএনপিকে অনুরোধ করব, এবার ভুলের পুণরাবৃত্তি করলে আপনাদের দল আরো ছোট হয়ে যাবে।