×

জাতীয়

শঙ্কা নিয়ে আনন্দের পাঠে ফেরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:৪২ এএম

শঙ্কা নিয়ে আনন্দের পাঠে ফেরা

দেড় বছর পর শিক্ষার্থীদের আগমন উপলক্ষে স্কুল কলেজ সাজানো হচ্ছে বর্ণিল সাজে।

** ৫৪৩ দিন পর খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান **
** বন্যার্ত এলাকায় এখনই খুলছে না **
** বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুলের কী হবে **

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলা হয়,  রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে কলেজ খুলে দেওয়া হচ্ছে। কলেজের সূচি অনুযায়ী ক্লাস শেষ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যেতে হবে। কলেজে বসে আড্ডা বা কোনো গল্প করা যাবে না। অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে। রাজধানীর অন্যতম নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ক্যাম্পাস ও ক্লাসরুম সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যেন কোনো শূন্যতা অনুভব না করে- সেজন্য এ আয়োজন।

শুধু এই দুই প্রতিষ্ঠানেই নয়, দীর্ঘ দেড় বছর করোনায় বন্ধ থাকার পর সারাদেশের স্কুল-কলেজের ক্লাসরুম খুলে দেওয়ার প্রাক্কালে দেশজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ছাত্রছাত্রী এবং তাদের সঙ্গে আসা সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরে আসার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, স্কুলে মাস্ক ছাড়া এলে কাউকে ঢুকতেই দেয়া হবে না। রাজধানীর একাধিক স্কুলে গিয়ে রঙিন বেলুনসহ নানা উপকরণ দিয়ে সাজাতে দেখা গেছে। স্কুলে শিশু-কিশোররা যেন নির্ধারিত দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করে, সে জন্য করিডোরে দাগ দিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে ফটকে বড় করে ব্যানার টানিয়ে লেখা হয়েছে, ‘নো মাস্ক, নো স্কুল’। অর্থাৎ মাস্ক ছাড়া এলে কাউকে ক্লাস করতে দেয়া হবে না।

স্কুল খোলা নিয়ে মিরপুরের একটি বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলের দুই শিক্ষার্থীর বাবা কাওসার চৌধুরী বলেন, স্কুল বন্ধ থাকায় বাচ্চারা অস্থির হয়ে গেছে। ওদের বাসায় আটকে রাখা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। স্কুলও খুলে দিচ্ছে। কিন্তু করোনার যে খবর শুনছি, তাতে ওদের স্কুলে পাঠানোর সাহস হচ্ছে না। তবু পাঠাতে হবে।

দিনাজপুরের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. মোমিনুল হাসান মোমিন বলেন, আমার ছেলে দিনাজপুরের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে পড়ে। আজ আমি তাকে স্কুলে পাঠাব। কিন্তু অনেক অভিভাবকই আছেন যাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তারা তাদের সন্তানকে রবিবার স্কুলে পাঠাবেন না। কয়েক দিন দেখে তারপর স্কুলে পাঠানো শুরু করবেন।

শরিয়তপুরের এক শিক্ষার্থী আরিফা আক্তার বলেন, দীর্ঘদিন পর আমাদের বিদ্যালয় খুলছে। আমাদের কাছে অনেক ভালো লাগছে। আমরা আবার বিদ্যালয় যাব, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে। আবার এক সঙ্গে পড়াশোনা ও খেলাধুলা করতে পারব। এটা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের। বাড়িতে বসে থাকতে আর ভালো লাগে না।

এদিকে বাংলাদেশ কিন্ডার গার্টেন স্কুল এবং কলেজ ঐক্য পরিষদ দাবি করছে ১০ হাজারের মতো স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। সংগঠনটির চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, রবিবার বোঝা যাবে কয়টা স্কুলে পাঠদান শুরু হয়। তিনি বলেন, যেসব কিন্ডার গার্টেন স্কুল এখনো চালু আছে তাদের ঘুরে দাঁড়াতে হলে সরকারি সহযোগিতা দরকার। কিন্তু আমরা সরকারের বিভিন্ন স্তরে ঘুরে কোনো আশ্বাস পাইনি। এর ফলে আজ বোঝা যাবে কয়টা স্কুলের তালা খোলে আরা কয়টা স্কুলের তালা বন্ধ থাকে।

সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখন এসব কিন্ডার গার্টেন স্কুল নিয়ে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা এবং গবেষণা ইনস্টিউটের অধ্যাপক কাজী আফরোজ জাহান আরা বলেন, এই মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফিরিয়ে আনা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই। অভিভাবকদের এমনভাবে বোঝাতে হবে, তাদের শিশুরা কাজ করে সাময়িকভাবে হয়তো টাকা পাচ্ছে। কিন্তু সেটা ভবিষ্যতে তাদের পরিবার এবং সমাজের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। ঝরে পড়া এসব শিশু স্কুলে ফিরে এলে কিন্ডার গার্টেন স্কুলগুলোকে চালানো যাবে।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেয়া ছাড়া স্কুলে পাঠাতে মানসিকভাবে প্রস্তুত নন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের অভিভাবকরা। এমনকি স্কুলগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরিভাবে মানা হবে কিনা- তা নিয়েও সন্দিহান তারা। সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন পর ক্লাসরুম খুলে দেয়া হলেও আনন্দের পাশাপাশি শঙ্কাও আছে। তবু ঘটছে দীর্ঘ অপেক্ষার সমাপ্তি। ৫৪৩ দিন বা এক বছর পাঁচ মাস ২৪ দিন বন্ধের পর আজ শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হবে স্কুল-কলেজ। প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর ২৩ দফা বাড়ানো হয় ছুটি। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও ২০২০ সালের এসএসসি-এইচএসসি ও সমমানের শিক্ষার্থীদের অটোপাস দেয়া হয়।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে ১১ দফা নির্দেশনা। চলতি বছর ও আগামী বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস হবে প্রতিদিন। অন্যান্য শ্রেণির ক্লাস সপ্তাহে একদিন। প্রাথমিক সমাপনী ও বার্ষিক পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে। তবে করোনা সংক্রমণ আবার বাড়লে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফের বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে শুক্রবার জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। একই কথা গতকাল শনিবার জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিও। স্কুল-কলেজ খোলার পর শিক্ষার্থীরা নিজ ক্যাম্পাসে বসে টিফিন খেতে পারবে না বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা কোনো টিফিন খেতে পারবে না। তাদের বাসা থেকে টিফিন খেয়ে আসতে হবে, প্রতিষ্ঠানে শুধু খাবার পানি সরবরাহ করবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের সময় ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। এদিকে শিক্ষার্থী কিংবা পরিবারের কেউ অসুস্থ বা করোনার উপসর্গ থাকলে তাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে না পাঠাতে অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়গুলো নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি টোমু হোজুমি এক বার্তায় বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের স্কুল আবারো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তকে ইউনিসেফ আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে। নিরাপদভাবে স্কুল খোলা রাখার জন্য অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীরা সরকারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও ঝুঁকি কিন্তু রয়েই গেছে। তবু আজ থেকে শুরু হচ্ছে ক্লাসরুমে পাঠদান। প্রস্তুত দেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্কুলে ফিরতে উন্মুখ শিক্ষার্থীরাও। এজন্য মানতে হবে নানা বিধিনিষেধ। শিক্ষক-অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে ৬৩টি নির্দেশনা। বদল আসবে, স্কুল-কলেজের চিরায়ত অনেক নিয়মকানুনে। ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ কামরুন নাহার বলেন, স্কুল খোলার যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ। ইতোমধ্যে প্রায় শতভাগ শিক্ষক-কর্মচারীকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে। আর স্বাস্থ্যবিধি যেন কঠোরভাবে মানা হয়, সেজন্য তদারকি দলও গঠন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রায় ১৭ মাস পর কাল বিদ্যালয় খুলছে। এজন্য ভিকারুননিসার প্রতিটি ক্যাম্পাস এবং ক্লাসরুমকে বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে। আর শিক্ষকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যেন শিক্ষার্থীদের কোনো চাপ না দিয়ে পড়াশোনাকে আনন্দদায়ক করে তোলা হয়।

ইস্কাটন গার্ডেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক দুলাল চন্দ্র চৌধুরী জানান, স্কুল খোলার প্রস্তুতি হিসেবে যাবতীয় কাজ শেষ। সরকারের নির্দেশনা মেনে প্রতিটি বিষয় বাস্তবায়ন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সব শিক্ষক-কর্মচারী টিকা নিয়েছেন। বিশেষ করে হাত ধোয়া এবং মাস্ক পরার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। স্কুল প্রাঙ্গণে হাত ধোয়া ও তাপমাত্রা পরিমাপ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সুরক্ষার ঘেরাটোপ মেনে ঢুকতে হবে ক্লাসে, ক্লাসরুমেও থাকবে দূরত্ব। একসঙ্গে হয়তো আসা হবে বিদ্যালয়ে, কিন্তু বসা হবে না পাশাপাশি। অ্যাসেম্বিলি হবে না, বাজবে না জাতীয় সংগীত। ক্লাস হবে সপ্তাহে একদিন, তাও সর্বোচ্চ দুটি। আর ক্লাস শেষেই ফিরতে হবে বাড়ি। আবাসিক হোস্টেল খোলা যাবে, তবে সেখানেও মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। পড়াশোনায় শিক্ষার্থীদের দেয়া যাবে না বাড়তি চাপ। গুরুত্ব দিতে হবে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে। নির্দেশনা আছে অভিভাবকদের প্রতিও। ছেলেমেয়েকে সময়মতো স্কুলে পাঠানোর পাশাপাশি, নিশ্চিত করতে হবে সুরক্ষার বিধি।

স্কুল খোলার খবরে ঘরবন্দি শিক্ষার্থীরা যেমন আনন্দে উদ্বেলিত তেমনি উচ্ছ¡সিত শিক্ষকরাও। তারা বলছেন, শিক্ষার্থীরাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাণ। তাদের পদচারণায় শ্রেণিকক্ষ মুখরিত না থাকলে পাঠদানের ‘মজাটা আসে না’। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের তিনজন শিক্ষকের সঙ্গে আলাপকালে তাদের এমন প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।

করোনাকালেই রাজধানীর ঢাকা কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দিয়েছেন অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্ল্যাহ খন্দকার। যোগদানের পর এখনো শ্রেণিকক্ষে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাননি তিনি। দীর্ঘদিন পর হলেও কলেজ খোলার খবরে উচ্ছ¡সিত এই শিক্ষক। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাণ। দীর্ঘদিন পর কলেজ খুলবে, আমরা শিক্ষার্থীদের দেখব, ক্লাস করাব- এ এক অন্যরকম আনন্দ। তিনি জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের কলেজ ক্যাম্পাসে বরণ করার জন্য আমরা ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেয়ার জন্য আমরা করোনা প্রতিরোধ বুথসহ নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া আমরা শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবস্থা নিয়েছি।

পুরান ঢাকার আরেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যায়ের সহকারী শিক্ষক মো. হারন বলেন, দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলায় আমরা খুবই আনন্দিত। এতদিন অনলাইনে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিয়েছি। এখন সশরীরে ক্লাস নিব। আসলে অনলাইনেতো শ্রেণিকক্ষের সেই মজাটা আসে না। অনেক দিন পর শিক্ষার্থীদের আগমনে স্কুল প্রাঙ্গণে সজীবতা ফিরে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আমাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে স্কুলে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।

নোয়াখালীর উত্তর চর বাগ্যা ইমান আলি বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারী নেই। তাই নিজের হাতেই শ্রেণিকক্ষসহ স্কুলের যাবতীয় সব কিছু পরিষ্কার করেছেন প্রধান শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন। তিনি জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এই স্কুলে শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। স্কুল বন্ধ থাকায় এরই মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা ছেড়ে শিশুশ্রমে যোগ দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য, দেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়।

তবে স্কুল আবার শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হবে। এটা একজন শিক্ষক হিসেবে আমার কাছে অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। লোকজন না থাকায় নিজেই এর প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিছুটা কষ্ট হলেও শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে ভালো লাগছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ্ বলেন, শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে স্বাস্থ্যবিধিবিষয়ক এমন অনেকগুলো স্লোগান তৈরি করে ক্যাম্পাসে টানিয়ে দিয়েছি এবং শিক্ষকদের বলে দিয়েছি তারা যেন এসব স্লোগান শিক্ষার্থীদের মুখস্ত করিয়ে দেন। আমি মনে করি শিক্ষার্থীদের এই সেøাগানগুলো মুখস্ত করিয়ে ও অনুশীলন করিয়ে দিলে তারা নিজের ইচ্ছায় স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করতে পারলে এটি খুব উপকারে আসবে। শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় স্বাস্থ্যবিধি মান্য করলে শিক্ষকদের তেমন বেগ পেতে হবে না। তা না হলে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে বারবার হিমশিম খাবেন এবং কম-বেশি স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App