×

জাতীয়

হাওর এলাকায় শিগগিরই শুরু হবে উড়াল সেতুর নির্মাণ কাজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৭:২৯ পিএম

হাওর এলাকায় শিগগিরই শুরু হবে উড়াল সেতুর নির্মাণ কাজ

শনিবার সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে সংবর্ধনা ও সুধী সমাবেশে এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। ছবি: ভোরের কাগজ

হাওর এলাকায় শিগগিরই শুরু হবে উড়াল সেতুর নির্মাণ কাজ

শনিবার মধ্যনগর উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

হাওর এলাকায় শিগগিরই শুরু হবে উড়াল সেতুর নির্মাণ কাজ

মধ্যনগরে সংবর্ধনা ও সুধী সমাবেশে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ছবি: ভোরের কাগজ

হাওর এলাকায় শিগগিরই শুরু হবে উড়াল সেতুর নির্মাণ কাজ

অনুষ্ঠানে ফুলের জলসায় অতিথিরা।

হাওর এলাকার উন্নয়নে সরকার এরই মধ্যে বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছে জানিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় উড়াল সেতুর কাজ শিগগিরই শুরু হবে। এ বিষয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, ‘উড়াল সড়ক কি? শেখ হাসিনার বাংলাদেশ এখন উড়াল দিয়েছে। আপনারা জানেন না? দেখছেন না? সুতরাং উড়াল বাংলাদেশে উড়াল সেতু হবে। এটা অনেক ছোট জিনিস, কোনো চিন্তা করবেন না। প্রধানমন্ত্রী হাওর এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছেন। হাওরের মানুষের যত দুর্ভোগ রয়েছে তা ক্রমান্বয়ে দূর করা হবে।’ 

শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মধ্যনগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে গণসংবর্ধনা ও সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষুধা দারিদ্র্য মুক্ত সমৃদ্ধিশালী একটি দেশ গড়তে কাজ করে গেছেন। সে স্বপ্ন পূরণ করতে অনেক আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলেন। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন পূরণ করার আগেই অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয় সপরিবারে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা ছিলেন দিশহারা। মানুষের উন্নতি হয়নি। খাদ্য ঘাটতি পূরণ হয়নি। সমাজ ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। শিক্ষা স্বাস্থ্যসহ কোনো বিষয়ে উন্নতি হয়নি। তাই মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমস্ত বাংলাদেশ ঘুরে মানুষকে জাগ্রত করেছেন। মানুষকে সচেতন করেছেন। এখন বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, মধ্যনগর থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়েছে। উপজেলা হওয়ার সুফল ভোগ করবেন চারটি ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ। মধ্যনগরবাসী উপজেলা পেয়ে আনন্দিত। মানুষের আনন্দে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আনন্দিত। নতুন এই উপজেলার উন্নয়নের জন্য আমি সব কিছু করব। কারণ বাংলাদেশের এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে উন্নয়ন হচ্ছে না। 
[caption id="attachment_306786" align="aligncenter" width="700"] মধ্যনগরে সংবর্ধনা ও সুধী সমাবেশে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

এসময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি, সুনামগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট, জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, পৌরসভার মেয়র নাদের বখত।

নারীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক পরিশ্রম করেন উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আমরা যখনই কোনো প্রকল্প তৈরি করি প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে প্রশ্ন করেন এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মেয়েদের কি কি উপকার হবে? তিনি মেয়েদের সম্পর্কে অত্যন্ত আন্তরিক। এছাড়া বয়স্ক মানুষ, শিশু ও প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য তিনি চিন্তা করেন। বিশেষ করে সুনামগঞ্জের হাওরের মানুষের জন্য তিনি দিনরাত চিন্তা করেন।

[caption id="attachment_306783" align="aligncenter" width="720"] শনিবার মধ্যনগর উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।[/caption]

এর আগে সকাল ১১ টায় নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলা পরিদর্শন করেন দুই মন্ত্রী। এসময় তারা স্থানীয় নেতাকর্মী, সরকারি চাকুরীজীবীদের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসে মতবিনিময় সভা করেন। মতবিনিময় সভাশেষে মধ্যনগর বাজারে উপজেলা বাস্তবায়ন পরিষদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গণ সংবর্ধনা ও সুধী সমাবেশ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের উপজাতি শিল্পীদের মনোজ্ঞ নৃত্য উপভোগ করেন আগত অতিথিরা।

এদিকে দুই মন্ত্রীর আগমনে সকাল থেকে হাজারো নেতাকর্মী ভীড় করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে। দলে দলে মিছিল করে বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী উপস্থিত হন অফিসের সামনে।

[caption id="attachment_306790" align="aligncenter" width="824"] অনুষ্ঠানে ফুলের জলসায় অতিথিরা।[/caption]

নেতাকর্মীরা নেচে-গেয়ে ব্যানপার্টি নিয়ে মধ্যনগর থানাকে উপজেলায় উন্নতি করায় আনন্দ উল্লাস করে স্লোগানে স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান তারা।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সালে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর, চামরদানী, বংশীকুণ্ডা উত্তর ও বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ এই চারটি ইউনিয়ন নিয়ে মধ্যনগর থানা গঠিত হয়। ১৯৮৭ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে মধ্যনগর থানাকে উপজেলায় উন্নীত করার জন্য প্রাথমিকভাবে কার্যক্রম শুরু করা হয়। এরপর এই দাবিতে বিভিন্ন সময়ে মধ্যনগর বাজারে অনশন, মানববন্ধন ও হরতালের মতো কর্মসূচিও পালন করা হয়। ২০০১ সালের ৯মে নিকার ৮৬তম বৈঠকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধ্যনগর থানাকে উপজেলায় রূপান্তরিত করার জন্য অনুমোদন দেন। কিন্তু ২০০৩ সালের ১৮ জানুয়ারি নিকার ৮৮তম বৈঠকের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই অনুমোদনটি বাতিল করে দেন। এ অবস্থায় মধ্যনগরের চার ইউনিয়নের বাসিন্দাদের স্বপ্ন থমকে যায়।

এরপর ২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ তালুকদারকে সভাপতি ও সঞ্জিত তালুকদার টিটোকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট মধ্যনগর উপজেলা বাস্তবায়ন পরিষদ গঠন করা হয়। এরপর এলাকাবাসীর সহায়তায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ নিয়ে আবারও আবেদন করা হয়। অবশেষে দীর্ঘ ৩৪ বছর পর গত ২৬ জুলাই প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় এই প্রতীক্ষার অবসান ঘটে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App