×

জাতীয়

প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ গঠনের অপেক্ষা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:০৮ এএম

রাজধানীর বঙ্গবন্ধন্ধু এভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ওপর ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল তিন বছর ধরে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে হাইকোর্টে। এ সময়ের মধ্যে কোনো বেঞ্চ নির্ধারণ করাও সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমানে ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন নিয়ম অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টে একটি বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন। বেঞ্চ নির্ধারণ হলেই শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক (মামলার রায়ের কপি, এফআইআরসহ যাবতীয় নথি) প্রস্তুত করা হয়েছে। দুই মামলায় সাড়ে ২০ হাজার পৃষ্ঠার ১ হাজার ৮০টি পেপারবুক তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলায় ১৩টি ভলিউমে মোট ৫৮৫টি পেপারবুক। এটি প্রায় সাড়ে দশ হাজার পৃষ্ঠার, এর মধ্যে আপিল ২২টি ও জেল আপিল ১২টি। অন্যদিকে বিস্ফোরক মামলায় ১১টি ভলিউমে মোট ৪৯৫টি পেপারবুকের পরিসর দশ হাজার পৃষ্ঠার। এতে আপিল ১৭টি ও জেল আপিল ১২টি। এখন হাইকোর্টের বেঞ্চ নির্ধারণ হলেই শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে।

এ মামলার আপিল শুনানির বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ গঠন করলেই শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে। আশা করছি, দ্রুত মামলাটির শুনানি শুরু করা সম্ভব হবে। চলতি বছরই যাতে এ মামলাটি হাইকোর্টে নিষ্পত্তি হয় সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, শুনানির প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ গঠন করলে তারিখ নির্ধারণে শিগগিরই ম্যানশন করা হবে। এই মামলার আপিল নিষ্পত্তির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

২০০৪ সালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। একটি হত্যা, অন্যটি বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে। এরপর বিচার শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। দুই মামলার রায়ে ৩৮ জনকে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের অন্য ধারায় ২০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ জন: বিচারিক আদালতের রায়ে ১৯ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়। তারা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, জঙ্গিনেতা মাওলানা তাজউদ্দিন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ বাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন। এদের মধ্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম সম্প্রতি কারাবন্দি অবস্থায় মারা গেছেন।

তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন : বিচারিক আদালতের রায়ে ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়। তারা হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপির নেতা হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, আরিফুল ইসলাম আরিফ, জঙ্গিনেতা মুফতি আবদুর রউফ, হাফেজ ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবদুল হান্নান ওরফে সাব্বির, মুরসালিন, মুত্তাকিন, জাহাঙ্গীর বদর, আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, আবু বকর সিদ্দিক ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মো. ইকবাল, রাতুল আহমেদ, মাওলানা লিটন, মো. খলিল ও শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App