×

সম্পাদকীয়

রেল হাসপাতাল আধুনিকায়ন হবে কখন?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১:১০ এএম

রেলপথ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চুক্তি হলেও গত ছয় বছরে কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণকে দায়ী করা হচ্ছে। এতে রেলকর্মীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। জানা গেছে, রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্মিত ১৪টি হাসপাতাল ও ১৮টি ডিসপেনসারি কাম হাসপাতালের মধ্যে ৮টি ডিসপেনসারি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ১০টিতে কোনো ফার্মাসিস্ট নেই। মাত্র ২৫ শতাংশ ডাক্তার, নার্স ও স্টাফ দিয়ে চলছে হাসপাতালগুলো। শতাধিক সার্জনের স্থলে রয়েছেন মাত্র ১৩ জন। ৩০ জন মহিলা ডাক্তারের স্থলে মাত্র ২ জন আছেন। তিনটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সবগুলোই নষ্ট। ঢাকা ও চট্টগ্রাম রেলওয়ের আটটি হাসপাতালের মধ্যে দুটি বেশ বড়। এর মধ্যে কমলাপুর রেলওয়ে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৮৬ সালে। রেল মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম-দুর্নীতি, বাজেট স্বল্পতা এবং রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার ছাপ হাসপাতালটির সর্বত্র দৃশ্যমান। ৭৫ শয্যার মধ্যে বর্তমানে ৪১ শয্যায় রোগী ভর্তি করা হয়। সম্পদের অপ্রতুলতায় বাকি শয্যাগুলো নামেমাত্র রয়েছে। আটটি কেবিন ও সার্জিক্যাল ওয়ার্ড থাকলেও তাতে নেই অনেক সুযোগ-সুবিধা। রক্ত, মূত্র ও এক্স-রের মতো কিছু প্রাথমিক পরীক্ষা ছাড়া অন্য গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সুযোগ নেই। নেই আধুনিক সার্জারি, আইসিইউ ও এইচডিইউর সুবিধা। হাসপাতালটি আধুনিকায়নের দাবি দীর্ঘদিনের। সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করে রেলওয়ের কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও উন্নত চিকিৎসাসেবা দেয়ার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে কমলাপুরের রেলওয়ে হাসপাতালটিকে জেনারেল হাসপাতালে রূপান্তর করে। নামকরণেই যেন শেষ। আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। গতকাল ভোরের কাগজের সঙ্গে আলাপকালে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন রেলওয়ে হাসপাতাল উন্নয়ন হয়নি বলে স্বীকার করে বলেছেন আগামীতে হাসপাতালের উন্নয়নের জন্য সচেষ্ট হবেন। আমরাও চাই এ বিষয়ে সরকার নজর দিক। রেল খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির খবর প্রায়ই খবরের শিরোনাম হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের এই করুণ দশা নিয়ে নাগরিকরা দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষুব্ধ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতিবেদনেও রেলে সীমাহীন দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। এ খাতে নৈরাজ্য না থামানো পর্যন্ত এর কোনো উন্নতি হবে না। অথচ জনপ্রিয় এই পরিবহনের উন্নতির জন্য কর্তাব্যক্তিরা দিনের পর দিন শুধু প্রতিশ্রæতিই দিয়ে এসেছেন। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিগত এক-দেড় দশকে রেলপথে বিনিয়োগ ও নানা উন্নয়ন প্রকল্প নেয়া হলেও তা রেলসেবায় প্রাণ সঞ্চার করতে পারেনি। রেল হাসপাতালের বেলায় একই প্রতিশ্রæতি শুনে আসছি। রেলওয়ে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও এ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা পথ সুগম হবে বলে প্রত্যাশা রাখছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App