×

আন্তর্জাতিক

আফগানিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী কে এই মোল্লা আখুন্দ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৪৬ পিএম

আফগানিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী কে এই মোল্লা আখুন্দ

মোল্লা হাসান আখুন্দ: ফাইল ছবি

আফগানিস্তানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে তালেবান। সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোল্লা হাসান আখুন্দের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশ্বে সবার ধারণা ছিল, তালেবানের রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোল্লা আব্দুল গনি বরদারই হচ্ছেন তালেবানের প্রধানমন্ত্রী। তবে সরকার ঘোষণার পর সেই হিসাব-নিকাশ পাল্টে গেছে।

মোল্লা হাসান আখুন্দের বর্হিবিশ্বে তেমন পরিচিতি না থাকলেও তালেবানে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। ১৯৯৪ সালে কান্দাহারে মোল্লা ওমরের নেতৃত্বে যে ক'জন মাদ্রাসা-পড়ুয়া জাতিগত পশতুন যুবক তালেবান আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিলেন, মোল্লাহ হাসান আখুন্দ তাদের অন্যতম। বিবিসি বাংলাকে লন্ডনে আফগান সাংবাদিক ও আফগানিস্তানের রাজনীতির বিশ্লেষক সাইয়েদ আব্দুল্লাহ নিজামী বলেন, বিভিন্ন দেশের নেতারা অবাক হলেও, আফগানিস্তানে বা তালেবানের নেতা-কর্মীদের ভেতর এ নিয়ে তেমন কোনো বিস্ময় নেই। মোল্লা হাসান আখুন্দ তালেবানের মূল নেতৃত্বের অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন সদস্য। তালেবানের মধ্যে নেতৃত্ব এবং মাঠ পর্যায়ে তার গ্রহণযোগ্যতা, মর্যাদা-সম্মান অদ্বিতীয়।

আফগান সাংবাদিক আরও বলেন, গত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে লড়াইয়ে মোল্লা আখুন্দ ছিলেন তালেবানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতা। যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের সন্ত্রাসীর তালিকায় মোল্লাহ আখুন্দের নাম রয়েছে বলে আমেরিকার সঙ্গে আলোপ-আলোচনা চলার সময় তাকে এতদিন সামনে আনা হয়নি। কিন্তু সংগঠনের ভেতর তার প্রভাব মোল্লা বরদার বা অধিকাংশ নেতার চেয়ে সবসময়ই বেশি।

আফগানিস্তানের নতুন নেতা মোল্লা হাসান আখুন্দের জন্ম কান্দাহারে। সেখানেই মাদ্রাসায় তার পড়াশোনা। তার সত্যিকার বয়স নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। ধারণা করা হয়, তার বয়স ৬০ এবং ৭০ এর মাঝামাঝি। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা তালিকা অনুযায়ী তার বয়স ৭৬। তবে বয়স নিয়ে মত-বিরোধ থাকলেও তালেবানের বর্তমান শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বয়সে মোল্লা আখুন্দ সবচেয়ে বড়।

১৯৯৬ সালে তালেবান কাবুল দখল করে যখন সরকার গঠন করেছিল, তখন তিনি সেই সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন। বাইরের বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সে সময়কার তালেবান সরকারের অবশ্য তেমন কিছু করার ছিল না, কারণ মাত্র তিনটি দেশ – পাকিস্তান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত – তাদের স্বীকৃতি দিয়েছিল।

পরে উপ-প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন মোল্লা আখুন্দ। সেসময় মোল্লাহ ওমর ছিলেন আমির। ২০০১ সাল পর্যন্ত কার্যত তিনিই ছিলেন সেই তালেবান সরকারের প্রধান। তালেবানের ক্ষমতা হারানোর আগ পর্যন্ত মোল্লাহ ওমরের অত্যন্ত বিশ্বস্ত সহচর ছিলেন মোল্লা আখুন্দ।

২০০১ সালে ক্ষমতা হারানোর পর পাকিস্তানে পালিয়ে যাওয়া তালেবান নেতারা বালুচিস্তানের কোয়েটায় যে নেতৃত্ব পরিষদ গঠন করেন - যেটি রাহবারি শুরা বা কোয়েটা শুরা নামে পরিচিত - তাতে অন্যতম প্রধান ভূমিকা রাখতে শুরু করেন মোল্লা আখুন্দ। রাজনৈতিক কৌশল থেকে শুরু করে সামরিক কৌশল– সেই থেকে তালেবানের সব বিষয়ের কেন্দ্রে তিনি রয়ে গেছেন।

তালেবানের বর্তমান শীর্ষ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার সঙ্গে তার সম্পর্কও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। সংগঠনের সবাই তাকে খুব সম্মান করে, বিশেষ করে আমির-উল-মুমিনিন হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App