তালেবান সরকার গঠন করার আগে থেকেই আফগানিস্তানে চলছে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ। প্রতিবাদ আর বিক্ষোভ মূলত তালেবান এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। বন্দুক তাক করে, ফাঁকা গুলি ছুঁড়েও বিক্ষোভ থামাতে ব্যর্থ তালেবান।

মঙ্গলবার কাবুলে বড় একটি বিক্ষোভ হয়েছে পাকিস্তান দূতাবাসের সামনে। তালেবান ফিরে আসার পর থেকে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তান হস্তক্ষেপ করছে- এমন অভিযোগ তুলে হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।

গত রবিবার পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-র প্রধান ফায়েজ হামিদ দু’ দিনের সফরে কাবুলে যান। এ সফরে তালেবান কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেন তিনি। খবর ডয়েচে ভেলের।

পাকিস্তান দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ থামাতে এক বিক্ষোভকারীর বুকে এভাবেই বন্দুক তাক করেন এক তালেবান যোদ্ধা। তারপরও বিক্ষোভ থামেনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্ষোভের অনেক ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় টেলিভিশনেও দেখানো হয় বিক্ষোভের খবর। সেখানে এক নারী বলেন, ‘‘আমরা এখানে এসেছি আমাদের দেশ রক্ষা করতে। আফগানিস্তানে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে পাকিস্তান। আমরা জানতে চাই, তাদের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান এখানে কেন? এখানে তার কী কাজ?’’

এদিকে রাজধানী কাবুলে আরেকটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন সশস্ত্র তালেবান যো্দ্ধারা। কাবুলে নারীদের বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়া এক নারী বলেন, ‘‘তারা (তালেবান) অন্যায়কারী এবং তারা মোটেই মানুষ না। তারা আমাদের বিক্ষোভ করতে দিচ্ছে না। তারা মুসলমান না, তারা কাফের।’’

বিক্ষোভ মিছিলটি তখন আফগানিস্তানে পাকিস্তানের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ জানাতে পাকিস্তান দূতাবাসের দিকে এগিয়ে চলেছে। চারপাশ থেকে তাদের ঘিরে ফেলে তালেবান। তালেবানবিরোধী এক বিক্ষোভ মিছিলের পাশ দিয়ে যাবার সময় গাড়ি থেকেই স্লোগান দিতে শুরু করেন এক নারী।

মঙ্গলবারের বিক্ষোভের ছবিতে দেখা যায়, এক বিক্ষোভকারী উঁচিয়ে ধরেন আফগানিস্তানের সাবেক সরকারের পতাকা। মূলত, তালেবান ফেরায় আফগানিস্তানের নারীদের একটা অংশ নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। সাম্প্রতিক বিক্ষোভগুলোতে তাই নারীদের অংশগ্রহণ খুব বেশি। গত ৪ সেপ্টেম্বরও কাবুলে বিক্ষোভ মিছিল করেন নারীরা।

মঙ্গলবার হেরাত শহরেও নারীদের তালেবানবিরোদী বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা যায়। এক নারী বলেন, ‘‘আমাদের চাকরি এবং সমাজে অর্জিত মর্যাদা রক্ষার জন্য নারীদের এগিয়ে আসতে হবে। হয় এখন হবে, নয়তো কোনোদিনই নয়। হ্যাঁ, এমনই পরিস্থিতি এখন। আমরা সাহসী নই, আমরা আসলে নিজেদের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য বেপরোয়া।’’