পিএইচডি-মাস্টার্স ডিগ্রির কোনো মূল্য নেই: তালেবান শিক্ষামন্ত্রী
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:১০ পিএম
আফগানিস্তানের উচ্চশিক্ষাবিষয়ক মন্ত্রী আবদুল বাকি হাক্কানি। ফাইল ছবি
আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার এক মাসের কম সময়ের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার নতুন সরকার ঘোষণা করা হয়েছে। অন্তবর্তীকালের জন্য সরকার ঘোষণা করা হলেও দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত বিশ্ব নেতারা। নব নিযুক্ত তালেবানের শিক্ষামন্ত্রী শেখ মৌলভি নুরুল্লাহ মুনিরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে তাঁকে উচ্চশিক্ষার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
ওই ভিডিও বার্তায় তালেবান শিক্ষামন্ত্রীকে বলতে শোনা গেছে, পিএইচডি ডিগ্রি ও মাস্টার্স ডিগ্রির কোনো মূল্য নেই তাদের কাছে। তিনি বলছেন, আপনারা দেখছেন যে মোল্লা এবং তালেবানরা ক্ষমতায় আছে। তাদের কোনো পিএইচডি, এমএ বা এমনকি হাইস্কুলের ডিগ্রীও নেই। কিন্তু তারা এখন সবার থেকে বড়। ফলে পিএইচডি, মাস্টার্স ডিগ্রির কোন মূল্য তাদের কাছে নেই।
শেখ মৌলভী নূরুল্লাহ মুনিরের এমন মন্তব্য নেটমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। একজন টুইটার ব্যবহারকারী লিখছেন, এই লোকটি কেন শিক্ষা নিয়ে কথা বলছেন। আরেকজন লিখেছেন, উচ্চশিক্ষার মূল্য নেই! তিনি বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন। আরেকজন লিখেছেন, শিক্ষা সম্পর্কে এ ধরনের লজ্জাজনক চিন্তাভাবনার ব্যক্তিদের ক্ষমতায় থাকার অর্থ হলো; যুব ও শিশু সমাজকে ধংস করা।This is the Minister of Higher Education of the Taliban -- says No Phd degree, master's degree is valuable today. You see that the Mullahs & Taliban that are in the power, have no Phd, MA or even a high school degree, but are the greatest of all. pic.twitter.com/gr3UqOCX1b
— Said Sulaiman Ashna (@sashna111) September 7, 2021
তালেবানের নতুন 'অন্তর্বর্তীকালীন সরকার' এর নেতৃত্বে থাকবেন মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। এছাড়া তালেবানের নীতি-নির্ধারণী পরিষদের প্রধান মোহাম্মদ হাসান আখুন্দকে দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে তালেবান।
ক্ষমতা দখলের পর সশস্ত্র সংগঠনটি বলেছিল, তারা আগের মতো আফগানিস্তানে কট্টর শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেব না। কিন্তু তালেবানের এই কথা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সন্দেহ রয়েছে। তালেবান বলেছিল, তারা আফগানিস্তানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গড়বে। কিন্তু গতকাল তালেবান যে সরকারের ঘোষণা দিয়েছে, তা মোটেই অন্তর্ভুক্তিমূলক নয়। তালেবান সরকারের মন্ত্রিসভায় কোনো নারীকে রাখা হয়নি।
এদিকে আফগানিস্তানের সদ্যঘোষিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ‘শরিয়াহ আইন’ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান তালেবানের দখলে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে দেখা যায়নি তাঁকে। তবে গতকাল তিনি একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর এই প্রথম আখুন্দজাদা কোনো বিবৃতি দিলেন। আখুন্দজাদার বিবৃতিটি ইংরেজিতে প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমি দেশবাসীকে এটা নিশ্চিত করতে চাই যে ইসলামিক আইন ও শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নে এ সরকার কঠোর পরিশ্রম করে যাবে।
বিবৃতিতে আখুন্দজাদা বলেন, ভবিষ্যতে আফগানিস্তানের সব কর্মকাণ্ডই পরিচালিত হবে শরিয়াহ আইন অনুসারে। তালেবানের নতুন সরকার দেশটিতে দীর্ঘ মেয়াদে শান্তি, অগ্রগতি ও উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাবে।