×

সম্পাদকীয়

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে : টিকা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১:০৬ এএম

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে : টিকা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে

আগামী ১২ সেপ্টেম্বর প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ব্যাপারে ইতোমধ্যে ইতিবাচক সুপারিশ করেছে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। ওই সুপারিশের আলোকেই আজ চূড়ান্ত ঘোষণা আসার কথা। এটা স্বস্তির খবর। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবারো মুখর হয়ে উঠবে শিক্ষার্থীদের পদচারণায়। পাশাপাশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলারও প্রস্তুতি রাখতে হবে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের বিষয়টি সামনে আসছে। প্রায় দেড় বছরের মাথায় সচল হবে দেশের স্কুল, কলেজ, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসা। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি পাঠদান বন্ধ আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি দফায় দফায় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ঘোষণায় এ ছুটি ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ সময়ে প্রায় পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাসূচি এলোমেলো হয়ে গেছে। এক দশক ধরে পূর্বনির্ধারিত শিক্ষাসূচি অনুযায়ীই চলছে শিক্ষাব্যবস্থা। দীর্ঘ এই ক্ষতি কীভাবে পোষানো হবে তার বিশ্লেষণ করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত ২৪ আগস্ট জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয়। এ দীর্ঘ বন্ধের কারণে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যালয় খোলার পর ঝরে পড়ার হার বাড়বে বলে মনে করছেন তারা। বেড়েছে শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ে। শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতিও বিপুল। বিষয়গুলো ভাবনায় আনা জরুরি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন সংসদ টেলিভিশনে ক্লাস প্রচার আর কিছু প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে পড়াশোনা করে ক্ষতি পোষানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তাতে খুব একটা লাভ হয়েছে বলে মনে হয় না। করোনার প্রাদুর্ভাব কমে এলে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সরকার সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পটভূমি তৈরি হয়েছিল গত ১৮ আগস্ট। ওই দিন অনুষ্ঠিত সচিব সভায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এ ক্ষেত্রে তিনি দুটি দিক গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখার পরামর্শ দেন। একটি হচ্ছে, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি, আরেকটি টিকা দেয়ার বিষয়। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুব তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। সে অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তোড়জোড় চলছে। তবে দুই শর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া সংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্মতি দিয়েছে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। একটি হচ্ছে, জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে, আরেকটি হচ্ছে শিক্ষক-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টদের টিকা দেয়ার কাজটি শেষ করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে এখনো ৭-৮ দিন বাকি। এ সময়ের মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা দ্রুত শেষ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি স্কুলগামী যাদের বয়স ১৮-এর নিচে তাদেরও ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে সরকার কাজ করছে। এটিও দ্রুত বাস্তবায়নে যেতে হবে। প্রতিষ্ঠান খোলার পর যেটুকু সময় হাতে আছে তার ওপর ভিত্তি করে সিলেবাস, কারিকুলাম নতুন করে কাস্টমাইজড করার বিষয়েও শিক্ষকদের গুরুত্ব দিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App