×

খেলা

ফিলিস্তিনের দুর্বলতা কাজে লাগাতে চান জেমি ডে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৪৬ পিএম

ফিলিস্তিনের দুর্বলতা কাজে লাগাতে চান জেমি ডে

তিন জাতি প্রতিযোগিতায় ফিলিস্তিনের বিপক্ষে প্রথম মাঠে নামার আগে শিষ্যদের পরামর্শ দিচ্ছেন প্রধান কোচ জেমি ডে। আজ নতুন পদ্ধতিতে দল সাজাবেন বলে জানিয়েছেন জেমি

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হতে আর এক মাস বাকি। আর দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ফুটবল প্রতিযোগিতায় মাঠে নামার আগে নিজেদের আরো ভালোভাবে প্রস্তুত করার জন্য তিন জাতি টুর্নামেন্টে অংশ নিতে এখন কিরগিজস্তানে রয়েছেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) নিজেদের প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী ফিলিস্তিনের মুখোমুখি হবে জেমি ডের শিষ্যরা। আর এ ম্যাচটিতে এখন ভালো ফলাফল করার পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন কোচ জেমি ডে। সম্পূর্ণ নতুন ফরমেটে দল সাজাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তাছাড়া ফিলিস্তিন দলের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে ম্যাচের ফলাফল নিজেদের করে নেয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। তিন জাতির এ প্রতিযোগিতায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক কিরগিস্তানের বিপক্ষে ১-০ গোলের ব্যবধানে হেরেছে ফিলিস্তিন। বাংলাদেশ দল আগের চেয়ে এবার অনেক শক্তিশালী। কিরগিস্তানে যাওয়া দলটিতে রয়েছেন চারজন প্রবাসী ফুটবলার। তাদের খেলার মানও ভালো। আর এতে করেই এখন বাংলাদেশের প্রত্যাশার জায়গাটি বড় হয়েছে। দুই দলের এ লড়াই স্বাগতিক কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকের স্পার্তাক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে। ফিলিস্তিন ম্যাচ শেষে ৭ সেপ্টেম্বর কিরগিজস্তানের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। এরপর কিরগিজস্তানের অনূর্ধ্ব-২৩ দলের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে জামালদের প্রস্তুতি শেষ হবে।

কোচ জেমি ডে ভালো কিছুর প্রত্যাশায় থাকলেও শক্তির বিচারে বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে। সর্বশেষ ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৮তম স্থানে। অন্যদিকে ফিলিস্তিন রয়েছে ১০২তম স্থানে। বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের বিপক্ষে কখনো জয়ের মুখ দেখেননি। দুই দলের শেষ দুই দেখায় দুইবারই জয় পেয়েছে ফিলিস্তিন। আর দুটি ম্যাচেই তারা জয় পেয়েছিল ২-০ ব্যবধানে। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য হলো একটি ড্র। ২০০৬ সালে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে ১-১ গোলে ফিলিস্তিনিদের রুখে দিতে সমর্থ হয়েছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। জেমি ডে ভালো কিছুর প্রত্যাশা করছেন ঠিকই তবে তার প্রধান লক্ষ্য হলো এই ম্যাচগুলোর মাধ্যমে সাফের আগে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়া।

ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ম্যাচটিতে নিজের পরিকল্পনা ও প্রত্যাশার কথা বলতে গিয়ে জেমি বলেন, ‘এই তিন ম্যাচে আমরা অবশ্যই ভিন্ন কৌশলে, ফরমেশনে খেলার চেষ্টা করব। দেখব সাফের জন্য আমরা বিকল্প কোনো কৌশল রপ্ত করতে পারি কিনা, দেখব। যেহেতু এই ম্যাচগুলো আমরা সাফের প্রস্তুতির জন্য খেলছি, অবশ্যই ভিন্ন কৌশল নিয়ে এই তিন ম্যাচে কাজ করব। সবাইকে এটার সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার সুযোগও দিব। ম্যাচগুলো ছেলেদের জন্য কঠিন হবে সঙ্গে ভালো অভিজ্ঞতাও হবে।’

এখন শক্তি ও র‌্যাঙ্কিংয়ের বিচারে ফিলিস্তিন বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকায় ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য ভালো পরীক্ষা হবে বলেও মনে করেন জেমি। তবে তিনি এও জানিয়েছেন তার শিষ্যরাও এ ম্যাচটির জন্য অনেক কষ্ট করছে। ফলে এখন তিনি অপেক্ষায় আছেন জামাল-জিকোরা কেমন খেলেন। এ ব্যাপারে কোচ জেমি ডে বলেন, ‘ফিলিস্তিন ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি। গত তিন-চার দিন ছেলেরা অনুশীলনে অনেক চেষ্টা করেছে। কিরগিজস্তানের বিপক্ষে ওদের (ফিলিস্তিনের) প্রথম ম্যাচ দেখেছি ওরা কতটা ভালো, শক্তিশালী ও দৃঢ়তাপূর্ণ দল। আমরা এই ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি। কঠিন একটা ম্যাচ হবে এবং ছেলেদের জন্য এটা ভালো একটা পরীক্ষা হবে।’ নতুন দুইজন প্রবাসী ফুটবলারসহ তিন জাতির এ প্রতিযোগিতার জন্য নতুন করে চারজনকে ডেকেছেন জেমি ডে।

তিনি জানিয়েছেন তাদের সবাইকে সুযোগ দেয়া হবে, যেন তারা তাদের পরখ করে নিতে পারেন। আবার জেডি ডেও তাদের সম্পর্কে একটি ধারণা পান। প্রবাসী ফুটবলার হিসেবে আগে থেকেই ছিলেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও তারিক কাজী। নতুন হিসেবে ফ্রান্স প্রবাসী ১৮ বছর বয়সী নাইব মোহাম্মদ তাহমিদ ইসলাম ও কানাডা প্রবাসী ২৫ বছর বয়সি রাহবার ওয়াহেদ খান ডাক পেয়েছেন। এ প্রতিযোগিতার জন্য নতুন চারজনের মধ্যে বাকি দুজন হলেন উত্তর বারিধারার গোলরক্ষক মিতুল মারমা ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডিফেন্ডার মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান। সবার খেলার বিষয়ে নিশ্চিত করে জেমি ডে বলেন, ‘সব খেলোয়াড়ই এই তিন ম্যাচের যে কোনো একটিতে খেলার সুযোগ পাবে। আমি নতুন চারজনকেই আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতা দিতে চাই। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ম্যাচে কে সুযোগ পাবে বলতে পারছি না। তবে তারা এই টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাবে।’

নিজেদের খেলা শেষ তিনটি ম্যাচের মধ্যে একটি ম্যাচেও জয়ের স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ। জামালরা সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে গত জুন মাসে। সেবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে খেলে ৩-০ গোলে হারে। এর আগে ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে হারে ২-০ গোলের ব্যবধানে। ভারত ও ওমানের বিপক্ষে খেলার আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১-১ গোলের ড্র করে ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখিয়েছিল জেমি ডের শিষ্যরা। কিন্তু পরবর্তী দুটি ম্যাচে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এবার বাংলাদেশ ভালো কিছু করতে চায় তিন জাতির এ প্রতিযোগিতায়। আর ভালো কিছু যদি সত্যিই হয় তাহলে সাফের জন্য তা ভালো হবে।

বাংলাদেশ সাফ ফুটবলের শিরোপা সর্বশেষবার জয় করে ২০০৩ সালে। সেবার ঘরের মাটিতে খেলেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এরপর আর কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপার স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ। ফলে ধীরে ধীরে দেশীয় ফুটবলের জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে। এখন ফুটবলের পুরনো যৌবন ফিরিয়ে আনার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের একটি বড় সাফল্য প্রয়োজন। আর দলে এখন নতুন, পুরাতন খেলোয়াড়দের মিশেলে রয়েছে সেরা কয়েকজন খেলোয়াড়। এখন ফুটবলের নতুন ভবিষ্যতের জন্য মালদ্বীপে পহেলা অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App