×

অপরাধ

টাকার বিনিময়ে করোনা টিকার এসএমএস পাইয়ে দিত তারা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০২:১৯ পিএম

টাকার বিনিময়ে করোনা টিকার এসএমএস পাইয়ে দিত তারা

প্রতারণার অভিযোগে আটককৃত আসামিরা

রাজধানীর মুগদা হাসপাতাল এলাকা থেকে করোনা টিকা দেয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তারা হলো, মো. নুরুল হক (৪৭), মো. সাইফুল ইসলাম (৩০), মো. ইমরান হোসেন (২৩) ও দুলাল মিয়া (৩৭)। এ সময়  প্রতারণায় ব্যবহৃত চারটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

দেশজুড়ে চলমান করোনা ভাইরাসের ভ্যাক্সিন কর্মসূচীকে পুঁজি করে প্রতারণার ফাঁদ পাতে এ চক্র। যেহেতু ভ্যাক্সিন পেতে অনলাইনে নিবন্ধন শেষে ক্ষুদে বার্তা (এসএমএস) পাওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর বিশেষ করে বিদেশগামীদের টিকা গ্রহনে বাধ্যবাধকতা।

তাদের অনেক ক্ষেত্রে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, কারো টিকিট কাটা থাকে। তাদের টিকা গ্রহনে তাড়া থাকে। এই সুযোগেই দ্রুত এসএমএস প্রাপ্তির প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে আড়াই থেকে পাঁচ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলো চক্রের সদস্যরা। এখন পর্যন্ত অন্তত দুই শতাধিক মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা।

খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রবাসীদের টিকা দেয়ার জন্য সরকার সাতটি হাসপাতাল নির্ধারন করে দিয়েছে। চক্রটি প্রবাসীদের টার্গেট করেই সেসব হাসপাতালের সামনে ঘোরাফেরা করতে থাকে। টিকা পেতে বিভিন্ন তাড়ার কারণে প্রবাসীরা নির্ধারিত হাসপাতালে যোগাযোগ করেন।

আর তখনই প্রতারক চক্রটি দ্রুত এসএমএস পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়। টাকা নেয়ার পর অনেকে স্বাভাবিক ভাবেই এসএমএস পেয়ে যেতেন, তখন এই প্রতারকরা নিজেরা ক্রেডিট নিতো। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তদবির করে দুই-একটি মেসেজ দেয়ার ব্যবস্থা করতো। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা প্রলোভন দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়।

যারা এসএমএস পেতেন তারা সাধারণত অভিযোগ করেননি। কিন্তু টাকা দিয়েও মেসেজ না পেয়ে অনেকে অভিযোগ করেছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ জনের তথ্য পাওয়া গেছে, যাদের কাছ থেকে আড়াই থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এই চক্রের হোতা নুরুল হক। আটক সাইফুল ও ইমরান হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে ভিকটিমদের দ্রুত এসএমএস পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখাতো। এরপর রাজি হলে তাদেরকে নুরুল হকের কাছে নিয়ে যাওয়া হতো, সেখানে টাকা নিয়ে টাকা নির্ধারন করা হয়। টাকার পরিমানের উপর নির্ভর করে ভিকটিমদেরকে দুলালের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে কতোদিনের মধ্যে মেসেজ পাবে সেই নিশ্চয়তা প্রদান করেন দুলাল।

নুরুল দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন, ইমরান একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরিরত। সাইফুল রমনা এলাকার চা বিক্রেতা, তিনি একসময় একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে আউটসোর্সিংয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দুলাল মিয়া একটি হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক হিসেবে কর্মরত। তাদের অবস্থান ও পেশার কারণে বিদেশগামীদের সঙ্গে সংযোগ তৈরি হয়। তারা মুগদা, শাহবাগ, রমনা, শেরেবাংলা নগর, মিরপুর, মহাখালীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় ছিলো।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আটক দুইজন সরকারি প্রতিষ্ঠানে আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত থাকার সুবাদে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে তাদের পূর্ব পরিরিচয় ছিলো। তাদের কাছ থেকে আমরা ২-৩ জনের তথ্য পেয়েছি, যাদের মাধ্যমে হয়তো ১০-১৫ টি মেসেজ তারা পাঠাতে পেরেছে।

বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো। এছাড়া, মামলার তদন্তে জড়িত অন্যদের তথ্য বেরিয়ে আসবে, সে অনুযায়ী পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App