×

সম্পাদকীয়

গণপরিবহনে সেবার মান বাড়াতে নজরদারি জরুরি

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:১৯ এএম

রাজধানীতে গণপরিবহনে নৈরাজ্য ও যাত্রীসেবার মান নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। করোনার মধ্যে যেন আরো প্রকট হয়ে উঠেছে। আশা করছিলাম সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ পাসের পর সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে। চিত্র একেবারে ভিন্ন। গতকাল ভোরের কাগজে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে বারবার যাত্রীসেবার মান বাড়াতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নির্দেশনা দেয়া হলেও সংশ্লিষ্টরা এর তোয়াক্কা করেন না। বস্তুত পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা যাত্রীসেবার মান সমুন্নত না রেখে সরকারি নির্দেশনার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েই যাচ্ছে। এমন অবস্থা দুঃখজনক। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে যে কোনোভাবে সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর করতে হবে। ২০১৮ সালে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ছাত্ররা মাঠে নেমেছিল। তার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চলন্ত বাস থামিয়ে যাত্রীদের কাছে হয়রানি বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছে। সে সময় যাত্রী হয়রানি সত্যিই অনেক কমে গিয়েছিল। তখন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ পাস করা হয়। এরপর আর কোনো অগ্রগতি আমরা দেখিনি। আইনের প্রয়োগে বাধা নিয়ে প্রভাবশালীদের ভূমিকা লক্ষণীয়। বিআরটিএও সহযোগী নয়। আমরা মনে করি, এই আইন বাস্তবায়ন করতে হলে মূলে হাত দিতে হবে। বিআরটিএ স্বচ্ছ হলে সড়ক-মহাসড়কে নৈরাজ্য প্রায় কমে আসবে। অন্যদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে গত বছর থেকে কয়েক দফায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে চলাচলের অনুমতি দেয়ার আগে কিছু নির্দেশনা দিয়ে তা বাধ্যতামূলক করা হয়। স্বাস্থ্যবিধি মানার ঘোষণা কাগজ-কলমে সীমাবদ্ধ। বাস চলাচলের অনুমতি দেয়ার পর বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করে বাস মালিক সমিতি। নির্দেশনাগুলো হচ্ছে- মাস্ক ছাড়া কোনো যাত্রী গাড়িতে উঠানো যাবে না। চালক, সুপারভাইজার, হেলপার এবং টিকিট বিক্রিতে নিয়োজিতরাও মাস্ক পরবে। তাদের হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সাবান-পানি, হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী বহন করার পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যাত্রীদের কাছ থেকে বর্তমান ভাড়ার অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ ভাড়া আদায় করা যাবে। গণমাধ্যমে উঠে আসছে পরিবহনগুলো এসব নির্দেশনার কিছুই পালন করছে না। ঢাকা শহরের প্রায় ২ কোটি মানুষের ৮০ শতাংশই নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণিভুক্ত। এরা গণপরিবহনের ওপর নির্ভরশীল। করোনাকালীন দুঃসময়ে সাধারণ মানুষের এই নির্ভরশীলতাকে পুঁজি করে পরিবহন মালিকরা বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন। করোনা দুর্যোগের কারণে এ সময়ে গণপরিবহনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ স্বাস্থ্য সতর্কতা অবলম্বন। গণপরিবহনগুলোতে গাদাগাদি করে যাত্রী নেয়ার নিয়ম না থাকলেও তা কমই কার্যকর হতে দেখা যায়। অন্তত এ সময়ের জন্য হলেও নির্দিষ্ট আসনের অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার প্রবণতা বন্ধ করতেই হবে। আধুনিক, মানসম্পন্ন ও নিরাপদ সড়ক পরিবহন যে কোনো দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকেও গতিশীল করে। পরিবহন খাত এখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আঞ্চলিক যোগাযোগ ছাড়াও আন্তর্জাতিক অনেক বিষয় এখন পরিবহনে যুক্ত। তাই সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং এজন্য সময়ের ধারাবাহিকতায় সড়ক পরিবহন আইনে যে বিষয়গুলো সংযোজিত হয়েছে, তার কঠোর বাস্তবায়ন জরুরি মনে করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App