×

জাতীয়

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ‘গণঅভ্যূথানে’র ডাক বিএনপির

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৭:৪৬ পিএম

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ‘গণঅভ্যূথানে’র ডাক বিএনপির

বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচনায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। ছবি: ভোরের কাগজ

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ‘গণঅভ্যূথানে’র ডাক বিএনপির

বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচানায় বিএনপি নেতাকর্মীরা। ছবি: ভোরের কাগজ

‘গণঅভ্যুত্থান’ গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আজকে আমাদের দায়িত্ব বিএনপির নেতা হিসেবে, কর্মী হিসেবে দেশের সমস্ত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দলের প্রতিষ্ঠবার্ষিকীর উন্মুক্ত আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই ঘোষণা দিয়ে নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি নেয়া আহবান জানিয়েছেন।

মির্জা ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলীমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান ও আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

ফখরুল বলেন, সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে আজকে আমাদেরকে অবশ্যই এই যুদ্ধে জয়লাভ করতে হবে এবং এই স্বৈরাচারি, এই হাসিনার সরকারকে পরাজিত করে আমাদেরকে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দে্শে ফিরিয়ে আনতে হবে।

[caption id="attachment_305437" align="aligncenter" width="700"] বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচানায় বিএনপি নেতাকর্মীরা। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপির ইতিহাস হচ্ছে এই দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, ৪৩ বছরের ইতিহাস হচ্ছে এদে্শে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ইতিহাস, বিএনপির ইতিহাস হচ্ছে এই দেশে সত্যিকার অর্থে এই রাষ্ট্র ও এই জাতিকে একটা অস্তিত্ব প্রদানের ইতিহাস। তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তিনি আমাদেরকে একটা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন, তিনি যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরবর্তিকালে তাকে যখন রাষ্ট্র নির্মানের দায়িত্ব দেয় তখন তিনি আমাদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, জাতিকে নির্মান করার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তিনি আমাদেরকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শন দিয়ে আমাদের নিজেদের অস্তিত্বকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন যে, আমরা একটা স্বাধীন জাতি এই ভুখণ্ডে সেটাই হচ্ছে জিয়াউর রহমান ও বিএনপির সবচেয়ে বড় অবদান।

তিনি বলেন, আমাদের আওয়ামী লীগ বন্ধুরা সার্বক্ষণিকভাবে সারাক্ষণ বিএনপির বিরুদ্ধে বিশোদগার করে, আমাদের স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে খাটো করার চেষ্টা করে। আমাদের আপোষহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে খাটো করার চেষ্টা করে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবকে খাটো করার চেষ্টা করে।  বিএনপিকে খাটো করার চেষ্টা করে। তারা (আওয়ামী লীগ) যদি নিজেদেরকে একবার জিজ্ঞাসা করার চেষ্টা করে যে, তাদের অবদান কি এদেশের জন্য? তাদের অবদান হচ্ছে পাকিস্তানীদের কাছে আত্মসমর্পন, তাদের অবস্থান ভারতে পালিয়ে গিয়ে নেতা সাজা, নিজেদের মনে করে যে তারাই এদেশে স্বাধীনতা নিয়ে এসেছে।  তাদের অবদান গণতন্ত্রকে করে ধ্বংস করে দিয়ে ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার করা। তারা সেদিন দেশকে জাতিকে বাংলাদেশের আত্মাকে নিহত করেছিলো।

জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপি তার ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই উন্মুক্ত আলোচনা সভা হয়। মিলনায়তনের বাইরেও শত শত নেতা-কর্মীর সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। পবিত্র কোরআন তেলোয়াত ও দোয়া অনুষ্ঠানের পর জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে এই আলোচনা সভা শুরু হয়।

৪৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে মিলনায়তন ও আশপাশে জাতীয় ও দলীয় পতাকা, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতিকৃতি দিয়ে বর্ণিলভাবে সাজানো হয়। ‘শুভ শুভ শুভ দিন, বিএনপির জন্মদিন’, বাংলাদেশের অপর নাম জিয়াউর রহমান’খালেদা জিয়ার সংগ্রাম চলছে, চলবে, তারেক রহমানের সংগ্রাম চলছে, চলবে’ ইত্যাদি শ্লোগানে নেতা-কর্মীরা তাদের সরব উপস্থিতি জানান দেয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যা্ন তারেক রহমান লন্ডন থেকে বক্তব্য রাখেন যা বড় ডিজিটাল পর্দায় দেখানো হয়।

১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রমনা বটমূলে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।

স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের লক্ষ্য একটি-এই স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ভবিষ্যতে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করা এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে এসে রাজনীতি করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দেয়া। সেজন্য আমাদের শ্লোগান হোক, অঙ্গীকার হোক, শপথ হোক- স্বৈরাচার হটাও, দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ওরা নিজেদের সকল ব্যর্থতাকে চাপা দেয়ার জন্য অত্যন্ত হৃদয় স্পর্শ করা একটা ইস্যুকে তারা সামনে এনে আমাদেরকে ব্যর্থ রাখতে চায়। হ্যাঁ এটার আমরা জবাব দেবো। তবে প্রকৃষ্ট জবাব হলো, এই সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠান।

চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ নেই-প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে জেড ফোর্সে সদস্য বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) বলেন, লে. কর্ণেল জয়নুল আবেদীনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নে জিয়াউর রহমানের লাশকে কবরে (চন্দ্রিমা উদ্যান) নামানো হয়েছে। জয়নুল নিজেও কবরে নেমেছিলেন। অথচ তারা বলে যে, কবরে লাশ নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App