×

অর্থনীতি

রেমিট্যান্সে ভাটা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:২৫ পিএম

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ভাটা পড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসেই কমেছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এ সূচক। চলতি বছরের আগস্ট মাসে দেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এসেছে ১ দশমিক ৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। টাকার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা) যার পরিমাণ ১৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা, যা গত জুলাইয়ের চেয়ে ৫২২ কোটি টাকা কম।

জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ৯০ হাজার (এক দশমিক ৮৭ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার বা ১৫ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা। তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছে আগস্ট মাসে।

গত ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-অগাস্ট সময়ে ৪৫৬ কোটি ১৫ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে গত বছরের প্রথম দুই মাসের চেয়ে রেমিট্যান্সপ্রবাহ কমেছে ১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ।

মহামারি করোনা ভাইরাসের মধ্যেও অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। ওই অঙ্ক ছিল আগের বছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বা ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। টাকার অঙ্কে ওই অর্থের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১০ হাজার ১১৫ কোটি টাকা, যা ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরের ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার জাতীয় বাজেটের এক-তৃতীয়াংশের বেশি।

প্রসঙ্গত, দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন দেশে থাকা সোয়া কোটি বাংলাদেশির পাঠানো অর্থ। দেশের জিডিপিতে সব মিলিয়ে রেমিট্যান্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটেও এ প্রণোদনা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয় সরকার।

অর্থাৎ একজন প্রবাসী বাংলাদেশে ১০০ টাকা পাঠালে তার সঙ্গে আরো দুই টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন তিনি। এছাড়াও ঈদ ও বিভিন্ন উৎসবে বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরকারের প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি আরো এক শতাংশ দেয়ার কথা বলা হয়। এসব কারণে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা।

এ সময়ে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এরপর ডাচ–বাংলা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক। এসব অর্থের বেশিরভাগই এসেছে ১০টি দেশ থেকে। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, ওমান, কাতার, ইতালি ও সিঙ্গাপুর। রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার : রেমিট্যান্সপ্রবাহ কমলেও বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। গতকাল বুধবার দিন শেষে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার দেখা গেছে।

গত ২৯ জুন প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ৪৬ বিলিয়ন (৪ হাজার ৬০০ কোটি) ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মে-জুন মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। পরে তা আবার বেড়ে ২৩ আগস্ট ৪৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে উঠে। ২৪ আগস্ট আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ১৪৪ কোটি ৮০ লাখ (প্রায় ১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন) ডলার এসডিআর (স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস) ঋণ-সহায়তা রিজার্ভে যোগ হওয়ায় এক লাফে তা বেড়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App