×

জাতীয়

জগতের মঙ্গল কামনায় জন্মাষ্টমী পালিত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২১, ১০:২৬ পিএম

যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্য ও ধর্মীয় আচারানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হলো ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জম্ম তিথি-জম্মাষ্ঠমী উৎসব। তবে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির মধ্যে এবারে জম্মাষ্টমী উৎসবটি একটু ভিন্নভাবে পালিত হয়। তবে অন্যবারে উৎসবের অন্যতম অঙ্গ ‘শোভাযাত্রা’ কোভিটের কারণে এবারে বাতিল করা হয়েছে। শুধুমাত্র মন্দিরে মন্দিরে মোটামুটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজাপাঠ , গীতাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে পূর্জার্চ্চণা শেষে প্রসাদ বিতরণ ও একে অপরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে জম্মাষ্টমী অনুষ্ঠান পালিত হয়। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণীদেন। অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভাও।

সোমবার (৩০ আগস্ট) করোনাভাইরাস মহামারী থেকে মুক্তির প্রার্থনা আর দেশের কল্যাণ ও মানুষের মঙ্গল কামনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্মাষ্টমী উৎসব। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রায় ৫ হাজার ২শ বছর আগে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে জম্মগ্রহণ করেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তার জন্মতিথিকেই জন্মাষ্টমী হিসেবে পালন করে থাকেন অনুসারীরা।

সোমবার সকালে মন্দিরে মন্দিরে ও অনেক বাসা বাড়িতে চণ্ডীপাঠ ও গীতাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে পালিত হয় অনুষ্ঠানমালা। সনাতন ধর্মের অবতার হিসেবে প্রেম, সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্যই পৃথিবীতে শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভূত হন বলে ভক্তদের বিশ্বাস। ভক্তরা তাঁকে সত্য ও প্রেমের দেবতা বলেও জ্ঞান করেন। কেন্দ্রীয়ভাবে নানা আনুষ্ঠানিকতায় শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি উদযাপন করছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এবং ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন কমিটি। তবে মহামারীর কারণে জন্মাষ্টমীর সেই শোভাযাত্রা এবারও হয় নি। শুধুমাত্র পূজা অর্চনার ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে উৎসবটি পালিত হয়। তবে রং-বেরংয়ের আলোয় মন্দির সজ্জিত করা হয়। ভক্তরা রঙিন পোষাকে সেজে পূজাস্থলে উপস্থিত হন।

মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি নেয়। কর্মসূচির মধ্য ছিল সকাল ৮টায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞ। দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটে পূজাপরিষদের সভাপতি মিলন দত্তের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চূয়ালী অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও বিশেষ অতিথি বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক আসীম কুমার উকিল, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, নির্মল চ্যাটার্জী ও ক্যানাডা থেকে ভার্চূয়ালী যুক্ত হন শৈলেন দত্ত। এসময় বক্তারা বলেন, যে কারণে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আগমন মর্তে ঘটেছিল ‘দুষ্টের দমন ও সৃষ্ঠের পালন’, তা আজো প্রাসঙ্গিক, আজো শ্রীকৃষ্ণের মতাদর্শ বিশেষভাবে প্রযোজ্য। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় এবং হিংসা,দ্বেষ, অধর্ম, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতা দুরীকরণে এবং দুর্জনের বিনাশে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বানী ও মতাদর্শ আজো প্রাসঙ্গিক।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি বলেন, মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি শুভ জন্মাষ্টমী পালন করা হয়। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি কাজল দেবনাথ বলেন, সনাতন ধর্ম মতে অধর্ম ও দুর্জনের বিনাশ এবং ধর্ম ও সুজনের রক্ষায় কৃষ্ণ যুগে যুগে পৃথিবীতে আগমন করেন।

এদিকে চট্রগ্রামের সীতাকুণ্ডের শংকর মঠ ও মিশনের অত্যান্ত ভাবগম্ভীর ওধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জম্মতিথি উৎযাপন করা হয়। মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ বলেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে আমরা জন্মাষ্টমী উৎসব পালন করেছি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যুগে যুগে বিভিন্ন রূপে পৃথিবীতে অসুর নিধন করে সদ্য প্রতিষ্ঠা করেছেন।

এদিকে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) জন্মাষ্টমী উপলক্ষে স্বামীবাগ আশ্রমে ছয়দিন দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। রাজধানীর স্বামী ভোলানন্দ গিরি আশ্রম, প্রভূ জগদবন্ধু মহাপ্রকাশ মঠ, রাধামাধব জিও দেব বিগ্রহ মন্দির, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, রাধা গোবিন্দ জিও ঠাকুর মন্দির, শিব মন্দির, রামসীতা মন্দির ও মাধব গৌড়ীয় মঠসহ বিভিন্ন মন্দির, পূজামন্ডপ ও ধর্মীয় সংগঠন জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App