শিক্ষাবোর্ডেই পাল্টে দেয়া হচ্ছে পাসের সনদ, গ্রেপ্তার ৭
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২১, ০২:৪৫ পিএম
নূর তাবাসসুমের মায়ের ফোনে একটি এসএমএস আসে, তার মেয়ের সার্টিফিকেটের নাম পরিবর্তন হয়ে নূর রিমতি হয়েছে। তারা স্কুলে গিয়ে যোগাযোগ করলে স্কুল থেকে শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করতে বলা হয়। শিক্ষা বোর্ডে গিয়ে দেখেন এসএসসির পাশাপাশি পিএসসি, জেএসসির সার্টিফিকেটেরও নাম পরিবর্তন হয়ে গেছে।
পরে ভিকটিমের পরিবার ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করে। মামলার তদন্তের ভার নেয় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এ ঘটনায় শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুর, রমনা ও চকবাজার এলাকা থেকে জালিয়াতি চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নূর রিমতি, জামাল হোসেন, এ. কে, এম মোস্তফা কামাল, মো. মারুফ, ফারুক আহম্মেদ স্বপন, মাহির আলমা ও আবেদ আলী। শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত নূর রিমতি ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় রাজধানীর সিটি মডেল কলেজ থেকে অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হয় । কিন্তু তার ইতালি যাওয়ার জন্য এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট প্রয়োজন। জাল সনদ তৈরির জন্য সে তার মামা গ্রেপ্তারকৃত জামাল হোসেনের মাধ্যমে এ. কে. এম মোস্তফা কামালের সঙ্গে তিন লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন । চুক্তি অনুযায়ী. মোস্তফা কামাল শিক্ষা বোর্ডের দালাল চক্র গ্রেপ্তারকৃত মারুফ, মাহবুব আলম, ফারুক আহম্মেদ স্বপন ও আবেদ আজাদের সংগে সমন্বয় করে নূর তাবাসসুমের সার্টিফিকেট সংক্রান্ত জেএসজি এবং এসএসসি পাসের সকল তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর তারা প্রথমে শিক্ষার্থীর বাবার নাম, মায়ের নাম সংশোধনের জন্য শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফরমেটে আবেদন করেন ।
ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, শিক্ষা বোর্ডের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের টাকার বিনিময়ে শিক্ষা বাের্ডের ওয়েবসাইটের রেজাল্ট আর্কাইভে নির্ধারিত ফরমেটে সংরক্ষিত কৃতকার্য প্রকৃত শিক্ষার্থী নূর তাবাসসুমের তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী নূর রিমাতির তথ্যসমূহ আপলোডের মাধ্যমে জাল সনদ তৈরি করে। পরবর্তীতে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে নেয়। এমনকি শিক্ষা বাের্ডের ওয়েবসাইটেও পরিবর্তিত শিক্ষার্থীর সংযোজিত তথ্য দেখায়।
তিনি আরও বলেন, এই প্রতারক চক্র ঢাকা শিক্ষা বাের্ডসহ অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন পরিক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখসহ অন্যান্য তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের তথ্য সংযোজন করে জাল সনদ তৈরির মাধ্যমে মোটা অংকের হাতিয়ে নেয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।