×

সারাদেশ

সাতক্ষীরায় চেক জালিয়াতির মামলায় আটক ১

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২১, ১১:২৩ এএম

সাতক্ষীরায় চেক জালিয়াতির মামলায় আটক ১

আটককৃত আসামি আমিনুর রশিদ সুজন

দীর্ঘ ১০ মাস পর সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের ৬ লাখ টাকার চেক জালিয়াতি ও আত্মসাৎ মামলায় আমিনুর রশিদ সুজন নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

বুধবার ভোররাতে সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের বুলারাটি গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। আটককৃত আমিনুর রশিদ সুজন (৩৮) সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের বুলারাটি গ্রামের সৈয়দুল আলমের ছেলে।

তিনি দি সান পত্রিকার সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ও দৈনিক কালেরকন্ঠ পত্রিকার সাতক্ষীরার বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বরত।

এদিকে শেখ আমিনুর রশিদ সুজন আটক হওয়ার পরে আতঙ্কে রয়েছে জেলা পরিষদের কথিত অফিস সিন্ডিকেট এর সদস্যরা। এই চক্রের সদস্যরা দীর্ঘ দিন ধরে জেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রণ করছে। এই চক্রের কাছে হয়না এমন কোন কাজ নেই।

দুর্নীতি জালিয়াতি সহ বিভিন্ন ঘটনায় এ যাবত জেলা পরিষদের কয়েকজন বরখাস্ত হয়েছে। দুদকের হাতে ঘুষের টাকা সহ আটকও হয়েছেন। এছাড়া এই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন দুর্নীতি মামলার আসামি। এই চক্রের হাত অনেক লম্বা।

সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়াছিন আলম চৌধুরী জানান, সোনালী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখায় জেলা পরিষদের নামে খোলা একাউন্টের চেকের তিনটি পাতা চুরি হয়। সেই চেকের পাতায় জাল স্বাক্ষর করে সোনালী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখা থেকে একটি পাতায় ৮ লাখ টাকা উত্তোলনের ঘটনা ঘটে।

পরবর্তীতে আরও একটি চেক নিয়ে টাকা উত্তোলনকালে ঘটনাটি জেলা পরিষদকে অবহিত করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি বুঝতে পেরে প্রতারক ব্যাংক থেকে সটকে পড়ে।

তিনি জানান, পরবর্তী এ ঘটনায় জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং ৭২, তারিখ ২৮.০৮.২০ ইং।

মামলাটি তদন্তকালে সোনালী ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমিনুর রশিদ সুজনকে আটক করা হয়েছে। সে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এ ঘটনায় অন্য আর কারা জড়িত সে ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তিনি আরো জানান, তাকে আদালতের তুলে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।

অপরদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের হিসাব রক্ষক আবু হুরায়রার সহকারী মোশারফ জেলা পরিষদের চেক, অথরাইজসহ সকল অর্থনৈতিক হিসাব নিয়ন্ত্রনে রাখেন। তার জানার বাইরে কিছুই হয়না।

এছাড়া অফিসের নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নাজমুল হোসেন ও উচ্চমান সহকারি রাকেশ মল্লিকের সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেট প্রকল্প পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা আদায় ও চেক ছাড় করার জন্য নিজেদের ও অফিস কর্মকর্তাদের নাম করে অর্থ আদায়ের অভিযোগ আছে। ইতিমধ্যে নাজমুল হোসেন, রাকেশ মল্লিক ও মোশারফ নামে বেনামে অনেক সম্পদের মালিক বনে গেছে। তদন্ত করলে সঠিক তথ্য উঠে আসবে।

এদিকে চেক জালিয়াতির শেকড় সন্ধানে সকল বিষয়াদি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিচ্ছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। অফিসের কয়েক জনের উপর তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে। চেক জালিয়াতি ও অর্থ আত্বসাত এর ঘটনায় পুলিশি তদন্ত শেষে অফিস সিন্ডকেটসহ এই ঘটনার সাথে জড়িত সকলের মুখোশ উন্মোচন হবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়াছিন আলম চৌধুরী আরো জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে আটক আমিনুর রশিদ সুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমরা রিমান্ড আবেদন করেছি। বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পরে তদন্ত শেষে জড়িতদের নাম প্রকাশ করা হবে।

অফিসের কেউ জড়িত আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ধারনা করা হচ্ছে অফিসের লোক জড়িত থাকতে পারে তবে এখনই সব বলা সম্ভবনা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App