×

খেলা

বিসিবি ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন পাপন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২১, ০৭:৪৬ পিএম

বিসিবি ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন পাপন

২০১২ সাল থেকে বিসিবির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন নাজমুল হাসান পাপন

বিসিবি ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন পাপন

বৃহস্পতিবার এজিএমে অংশ নিয়েছেন ১২০ জন কাউন্সিলর

দীর্ঘ ৪ বছর পর এজিএম আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চলমান পরিচালনা পর্ষদ। হোটেল রেডিসনে অনুষ্ঠিত এজিএমে কাউন্সিলরদের সম্মতিক্রমে তিন বছরের আর্থিক বিবরণীর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটও অনুমোদন করা হয় এজিএমে। বোর্ডের দশম সভা শেষে এজিএমের তারিখ ২৭ জুলাই নির্ধারণ করা হলেও করোনার কারণে তা পিছিয়ে যায়। এজিএমে অংশ নিয়েছেন ১২০ জন কাউন্সিলর। এতে সভাপতিত্ব করেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ২০১২ সাল থেকে বিসিবির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। ক্রিকেটে এই সময়টা যথেষ্ট বলে মনে করেন পাপন, ‘ক্রিকেটে অনেক সময় দিলাম। নিউজিল্যান্ডে (দলের ম্যানেজার হিসেবে) জালাল ভাই গেলেন, জিম্বাবুয়েতে গেলেন ববি ভাই। তারা জানেন আমার অবস্থা। ভোর থেকে তো খেলা দেখেছিই, ওখানে ৭টা বাজলেই ফোন দিয়েছি, সকালের নাস্তা করার আগে সবার সঙ্গে কথা বলা, এরপর দল নিয়ে কথা বলা। আসলে ক্রিকেট অনেক সময় নিয়ে নিচ্ছে। ’

এর আগে সাবেক সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল পদ ছাড়লে বিসিবির ১৪তম সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন পাপন। এরপর আরও দুই বার তিনি বিসিবি সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। ক্রিকেট নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের আবেগের কথা কারো অজানা নয়। টাইগারদের খেলা থাকলে নিজে গ্যালারিতে উপস্থিত থেকে দলকে উৎসাহ দেন তিনি। আবার বাইরে থেকে তিনি নিয়মিত দলের খোঁজখবরও নেন। কিন্তু এমনটা হয়তো অদূর ভবিষ্যতে আর দেখা যাবে না। কারণ এবার তার বোর্ড থেকে সরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ( ২৬ আগস্ট)  বিসিবির এজিএম (বার্ষিক সাধারণ সভা) শেষে বোর্ড সভাপতি নিজেই এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।

নাজমুল হাসান পাপনকে শুধু বিসিবি সভাপতির মানদণ্ড দিয়ে বিচার করলে ভুল হবে। দল নির্বাচন থেকে একাদশ বাছাই, সবখানে সরব উপস্থিতি তার। দুই বারের নির্বাচিত সভাপতি পাপন এবার নির্বাচনে দাঁড়ানো নিয়ে কিছুটা রহস্য রেখে দিলেন। শেষ পর্যন্ত কি বিসিবির বড় কর্তার দায়িত্বে দেখা যাবে না তাকে?

বৃহস্পতিবার বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএম শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে এবার বোর্ড মিটিংয়ে ১ তারিখ বা ২ তারিখ যখনই হয় সেদিন একটু ধারণা পাবেন আপনারা ইলেকশন নিয়ে এটাতে কোন সন্দেহ নেই। এবারের ইলেকশনটা একটু আলাদা হবে। অন্যান্যবারের মতো নাও হতে পারে। আশা করি এটা এক্সেপ্টেড হবে, যেমনটা আমি প্রপোজ করেছি।’ এবার বোর্ড নির্বাচনে ব্যতিক্রম কিছুর আভাস দিলেও তিনি নির্বাচনে দাঁড়াবেন কিনা সে বিষয়ে সরাসরি কিছুই বলেননি পাপন। তবে জানিয়েছেন, ক্রিকেটে অনেক বেশি সময় ব্যয় করতে হয় তার। এতে নিজের ব্যবসাসহ অন্যান্য দিকগুলো সামলাতে বেশ হিমশিম খাচ্ছেন। তার স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় ডাক্তারও বলেছেন ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে। সেটি জানালেন পাপন। চলতি বছরের শেষদিকে অথবা আগামী বছরের শুরুর দিকে বিসিবির কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর এবারের নির্বাচনে তিনবারের বোর্ড সভাপতি পাপন অংশগ্রহণ করবেন না বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

[caption id="attachment_304345" align="aligncenter" width="1280"] বৃহস্পতিবার এজিএমে অংশ নিয়েছেন ১২০ জন কাউন্সিলর[/caption]

এজিএম শেষে পাপন বলেন, হারলে হারটা আমি মেনে নিতে পারি না, এটা আমার একটা খারাপ দিক। বাংলাদেশ দল হারলে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। আমার বউ-বাচ্চা সামনে আসে না। এজন্য ডাক্তার আমাকে ক্রিকেট থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দূরে যেতে বলেছে।

বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন আরও বলেছেন, বিগত চার বছরে মাঠের সাফল্য আমাদের প্রশংসায় ভাসিয়েছে। আমাদের কার্যক্রমে সবাই খুশি। এখন ছেলেদের জাতীয় দলে অনেক খেলোয়াড়। তারা ধারাবাহিক সাফল্য পাচ্ছে। মেয়েরা এশিয়া কাপ জিতেছে। ছেলেরা ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতেছে। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে বাংলাদেশের যুব বিশ্বকাপ জয়।

২০০০ সালের অক্টোবরে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত এজিএমে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠনের তাগিদ দেওয়া হলেও গত ২১ বছরে তার অগ্রগতি হয়নি। তবে এবারের এজিএমে আবারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, অতি দ্রুত আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা বাস্তবায়ন করা হবে।

আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠন করতে না পারায় সমালোচিত হয়েছে বোর্ড। তবে বোর্ড সভাপতি আশ্বস্ত করে বললেন, আমরা পাইলট প্রকল্প হিসেবে চট্টগ্রাম ও সিলেটে আঞ্চলিক ক্রিকেট কার্যক্রম শুরু করেছি। পুরোপুরি করতে পারিনি, সেটা আমাদের ব্যর্থতা। তবে আমরা বিভিন্ন জেলায় এ কার্যক্রম শুরু করবো। তবে অনেক জটিলতা রয়েছে। দুই জায়গায় করতে পেরেছি। সেই অভিজ্ঞতা সামনে কাজে লাগিয়ে সারাদেশে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠন করবো।’

গত চার বছরের মধ্যে বিসিবি একবারও এজিএম করতে পারেনি। জমে যাওয়া ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের অডিট রিপোর্ট বৃহস্পতিবার এজিএমে অনুমোদিত হয়েছে। জানা গেছে, গত তিন অর্থবছরে বিসিবি খরচ করেছে ৬৯২ কোটি, ৮৯ লাখ, ১৮ হাজার ৪৮০ টাকা। প্রধান অর্থ কর্মকর্তার প্রতিবেদনে ২০২০-২১ অর্থবছরে খরচ হয়েছে ২০৩ কোটি ৬৮ লাখ ১১ হাজার ৭২৬ টাকা। এটা এজিএমে অনুমোদন করিয়ে নিয়েছে বিসিবি। সব মিলিয়ে অঙ্কটা দাঁড়িয়েছে ৮৯৬ কোটি ৫৭ লাখ ৩০ হাজার ২০৬ টাকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App