×

সারাদেশ

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কলেজছাত্রীর গায়ে আগুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২১, ০১:৫০ পিএম

মানিকগঞ্জের ঘিওরে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক কলেজ ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের দ্বিমূখা গ্রামে।

অভিযুক্ত মো. শরিফ মিয়া (৪০) দুই সন্তানের জনক। আগুনে কাজল আক্তার নামের ওই কলেজ ছাত্রীর শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। গুরুতর আহত ওই ছাত্রী বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। অভিযুক্ত বখাটে মো. শরিফ মিয়ার বাড়ি একই এলাকায়। সে দুই সন্তানের জনক।

কাজল আক্তারের ফুফাতো ভাই ফজলুল হক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মিরান খাঁন বলেন, বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের দ্বিমুখা গ্রামের মৃত কাজী ময়নালের মেয়ে কাজল আক্তার (২৫) মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের বিএ ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী। ঐ গ্রামের বখাটে শরিফ মিয়ার (৪০) মেয়েকে প্রাইভেট পড়ানোর সময় এক পর্যায়ে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কৌশলে ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। দুই সন্তানের জনক মো. শরিফ মিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।

কাজলের মা বলেন, গত এক বছর আগে পারিবারিকভাবে মেয়ের মোবাইল ফোনে শিবালয় উপজেলার ফেচুয়াধারা গ্রামের সাউথ আফ্রিকা প্রবাসী সোহেল রানার সঙ্গে বিয়ে হয়। মেয়েটির বিয়ের পর থেকে ছেলেটিকে প্রত্যাখ্যান করলে শরিফ তাকে নানাভাবে উত্যক্ত করতে থাকে। স্বামী প্রবাসে থাকার দরুন কাজল তার বাবার বাড়ি থেকে পড়াশোনা চালিয়ে আসছিলেন। সোমবার রাতে বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে থাকায় কৌশলে ডেকে নিয়ে যায় বাড়ির পাশে কাঠ বাগানে। কথা কাটাকাটির পর বখাটে শরিফ কলেজ ছাত্রীর শরীরে হাতে থাকা বোতলে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর শরীরে ধাও ধাও করে আগুন জ্বলে উঠে। চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে শরিফ পালিয়ে যায়। মেয়েটি কাঠ বাগানের পাশেই পানি থাকায় শরীরে আগুন নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দেয়। আশে পাশের লোকজন তার চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে এসে মুমুর্ষ অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে।

মেয়েটিকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে স্থানীয় মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসা নেন। পরে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে রাজধানী ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার্ড করেন। তার অবস্থা সংকটজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

ঘটনা শোনার পর বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাফিজুর রহমান ও ঘিওর থানার ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭ টায় কাজল আক্তারের মা রেনু বেগম ঘিওর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

ঘিওর থানার ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছি। মেয়ের মা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঢাকার হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App