×

রাজধানী

ডিএনসিসির বাজেটে গুরুত্ব পেয়েছে করোনা ও শিক্ষা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২১, ০৮:২০ পিএম

ডিএনসিসির বাজেটে গুরুত্ব পেয়েছে করোনা ও শিক্ষা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের চলতি (২০২১-২২) অর্থবছরের জন্য চার হাজার ৮০৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বাজেট চূড়ান্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিদায়ী (২০২০-২০২১) অর্থবছরের ২ হাজার ৮৩৩ কোটি ৩২ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদিত হয়েছে। বাজেটটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এরই মধ্যে স্থানীয় সরকার পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

নতুন এ বাজটে করোনা মহামারি; শিক্ষাবৃত্তি; শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইনে ক্লাস নেয়া; নিম্ন আয়ের জনপদ ও বস্তিবাসির নিরাপত্তা জোরদার এবং দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ট্যাক্সের পরিধি বাড়াতেও নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। গত ১২ জুলাই ডিএনসিসির দ্বিতীয় পরিষদের সপ্তম করপোরেশণ সভায় এই বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়।

প্রস্তাবিত বাজেটে দেখা গেছে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিলো ৯৬১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে এর পরিমান দাঁড়ায ৭৩১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। অন্যান্য আয় ধরা হয়েছে ১৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিলো ১২ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এর পরিমান দাঁড়ায ৭৯ কোটি ১০ লাখ টাকা। সরকারের অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিলো ১০০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এর পরিমান দাঁড়ায ৩৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

সরকারি বিশেষ অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। যা গত বছরও ছিলো ৫০ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে এসে দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এই চারটি খাত থেকে মোট আয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৩৬৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিলো এক হাজার ১২৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে এসে দাঁড়িয়েছে ৮৬৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। সরকারি/বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৪৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিলো তিন হাজার ১০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে এসে দাঁড়ায় এক হাজার ৪২৪ কোটি ২ লাখ টাকা।

বাজেটে রাজস্ব্ ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিলো ৬১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে এসে দাঁড়িয়েছে ৫২০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। অন্যান্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরেও ছিলো ১৩ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এসে দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি টাকা।

উন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে নিজস্ব উৎস ও সরকারি অনুদান থেকে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিলো ৬৪৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে এসে দাঁড়ায় ৪৮৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

সরকারি/বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প থেকে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৪৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। যা গতবছর ছিলো ৩ হাজার ১০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে মোট উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮১৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিলো ৩হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এসে দাঁড়ায় এক হাজার ৯১২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। সমাপনী স্থিতি ধরা হয়েছে ২৭৬ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিলো ২১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে এসে দাঁড়িয়েছে ৩৯০ কোটি টাকা।

সব মিলিয়ে বাজেটে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮০৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিলো ৪৫০৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। যা সংশোধিত বাজেটে এসে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৩৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

গত ১২ জুলাই অনুমোদন হওয়া বাজেট অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে এ বাজেট বাস্তবায়ন খুবই চ্যালেঞ্জিং। সেবা প্রদান নিশ্চিত করার জন্য অর্থের প্রয়োজন। অর্থ না থাকলে জনগণকে কাঙ্খিত সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে না। সিটি করপোরেশনকে সনাতনী পদ্ধতি থেকে একটি আধুনিক পদ্ধতিতে নিয়ে যেতে হবে। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও পদ্ধতি প্রয়োগ করে ডিজিটালাইজড সিটি করপোরেশন গড়ে তোলা হবে। উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন বিভাগে জনবলের সংকট রয়েছে। প্রায় ৪০ শতাংশ জনবল নিয়ে নগরবাসীকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আগামী অর্থ বছরে 'ডিজিটালাইজেশন' এর মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্সে নতুন ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে এবং পূর্বে এসেসমেন্ট করা বাড়ি ঘরের তথ্য সংগ্রহ করে ট্যাক্স হালনাগাদ করা হবে। ডিজিটাল কার্যক্রমের ফলে ট্যাক্সের পরিধি বৃদ্ধি পাবে। নগরবাসী ঘরে বসে ডিএনসিসির বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন এবং ট্যাক্স প্রদান করতে পারবেন। এতে ডিএনসিসি'র আয় বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, অভিজাত এলাকাসমূহে বিশেষ করে গুলশান, বারিধারা ও বনানী এলাকায় বাড়ি ভাড়ার হার বেশি। তাই ২০০৮ সালের রেট পুনঃনির্ধারণ করে অভিজাত এলাকায় ট্যাক্স নির্ধারণ করতে হবে।

মেয়র বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ঘরে বসে শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহণের জন্য ডিএনসিসি শিক্ষাবৃত্তি তহবিল গঠন করবে। সেখান থেকে অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে। শিক্ষার্থীদের মনোযোগী করার জন্য অনলাইনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন এবং পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই সাথে প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বৃত্তি প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া করোনা ও দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে নতুন বাজেটে। নিম্ন আয়ের জনপদ ও বস্তিবাসীর আবাসস্থল নিরাপদ রাখার জন্য ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানো হবে। বস্তিবাসীদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। ডিএনসিসি'র একটি অঞ্চলকে (অঞ্চল-৩) পাইলট হিসেবে ধরে থার্ড পার্টির মাধ্যমে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলেও জানান ডিএনসিসি মেয়র।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App