২০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য গুচ্ছ পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদনের ফলাফল আজ (২৫ আগস্ট) দুপুর ১২ টায় প্রকাশিত হয়েছে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট (https://gstadmission.ac.bd/reg/check-elegiblility) এ শিক্ষার্থীদের এইচএসসি পরীক্ষার তথ্য দিয়ে ফল জানা যাচ্ছে। প্রাথমিক আবেদনে মনোনীত শিক্ষার্থী ১২০০ টাকা ফি দিয়ে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভর্তি পরিক্ষার জন্য চূড়ান্ত আবেদন করতে পারবে।

জানা যায়, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদন শেষ হয় গত ২৫ জুন। এ সময় পরীক্ষার জন্য আবেদন করেন ৩ লাখ ৬০ হাজার ৪০৬ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে (এ ইউনিট) ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪১ জন শিক্ষার্থী, মানবিক বিভাগে (বি ইউনিটে) ১ লাখ ৭ হাজার ৯৩৩ জন এবং বাণিজ্য বিভাগে (সি ইউনিট) ৫৭ হাজার ৬৩২ শিক্ষার্থী আবেদন করেন। মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগে কম আবেদন হওয়ায় এই দুই বিভাগের সকল শিক্ষার্থী চূড়ান্ত আবেদন করার সুযোগ পেয়েছেন।

শুধুমাত্র বিজ্ঞান শাখায় চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত আবেদন হওয়ায় প্রথম ধাপে ১ লাখ ৩১ হাজার ৯০৫ শিক্ষার্থী চূড়ান্ত আবেদন করতে পারবেন। এরপর প্রথম ধাপে চূড়ান্ত আবেদন করার পর কত সংখ্যক আবেদন পড়েছে তার উপর নির্ভর করে পরবর্তীতে প্রাথমিকে বাদ পড়া শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে চূড়ান্ত আবেদন করার সুযোগ পাবেন। বিষয়টি আজ প্রাথমিকে ফল প্রকাশত হওয়ার পর জানান গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, প্রতি ইউনিটে দেড় লাখ করে তিন ইউনিটে মোট সাড়ে ৪ লাখ পরীক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় বসানোর কথা ছিল। কিন্তু প্রাথমিক আবদেন অনেক কম হয়েছে। আমরা মনে করেছিলাম ১০ লাখ আবেদন করবে। কিন্তু সেখানে তিন বিভাগ মিলে সাড়ে ৩ লাখের বেশি আবেদন পড়েছে। অন্যদিকে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগে দেড় লাখেরও কম আবেদন। তাই বাণিজ্য ও মানবিকের সবাই প্রাথমিক আবেদনে মনোনীত হয়েছেন।

আর বিজ্ঞানে দেড় লাখের বেশি হওয়াতে চূড়ান্ত আবেদনের প্রথমে প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার শিক্ষার্থীকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এরপর বিজ্ঞান বিভাগে চূড়ান্ত আবেদন কতজন করে সেটা দেখে আমরা আবার দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় বাদ পড়া ৬২ হাজার ৯৩৬ জনের মধ্য থেকে ক্রমিক অনুসারে আবেদনের সুযোগ দিব।

এছাড়া গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মুনাজ আহমেদ বলেন, যেসব শিক্ষার্থীর মুঠোফোন নম্বরের সমস্যায় রয়েছেন তাদের জন্য ওয়েবসাইটে একটি অপশন চালু করা হবে। সেখান থেকে মুঠোফোন নম্বর পরিবর্তন করা যাবে। তবে সেবাটি সব শিক্ষার্থী পাবেন না। শুধু যোগ্য শিক্ষার্থীরাই নম্বর পরিবর্তন করে আবেদন করতে পারবেন।

এরআগে গত ২১ আগস্ট গুচ্ছভুক্ত উপাচার্যদের মিটিং শেষে ড. মুনাজ নূর ভোরের কাগজকে বলেছিলেন, আমরা প্রথমে ৬০০ টাকা করে ফি নেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু মিটিং এ ১২০০ টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরিস্থিত স্বাভাবিক থাকলে শিগগিরই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে আমরা পরিকল্পনা করেছি সশরীরে অক্টোবরের মধ্যেই যেন ভর্তি পরীক্ষা নিতে পারি।

প্রসঙ্গত, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন করা হবে উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির উপরে। বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য মোট তিনটি বিভাগে পরীক্ষা হবে। শিক্ষার্থীদের পছন্দের ক্রমানুসারে কমপক্ষে পাঁচটি পরীক্ষাকেন্দ্র সিলেক্ট করতে হবে। আবেদনকারী বর্তমানে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত থাকলে সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম ও অধ্যয়নের বিষয় সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করতে হবে। আবেদনকারীর শিক্ষার্থীর ছবি বর্গাকার, হালকা এক রঙের ব্যাকগ্রাউন্ড ও ছবির সাইজ ১০০ কিলোবাইটের নির্ধারিত ফরম্যাটে থাকতে হবে। উপাচার্যদের সভায় এ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, প্রথমবারের মতো ২০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভিত্তিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেগুলো হলো, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।

এছাড়াও রয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।