×

পুরনো খবর

স্বাস্থ্যের গাড়িচালক মালেকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২১, ০৬:১৬ পিএম

স্বাস্থ্যের গাড়িচালক মালেকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

আবদুল মালেক ওরফে বাদল। ফাইল ছবি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে বাদলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলায় বাদীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে র‌্যাব-১ এর পুলিশ পরিদর্শক আলমগীর হোসেনসহ দুজন সাক্ষ্য দেন।

এরআগে আসামি মালেককে এদিন কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তার উপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। তবে বাদী আলমগীর হোসেন ও জব্দ তালিকার সাক্ষীর জবানবন্দি শেষ হলেও তাদের জেরা সম্পন্ন না হওয়ায় আদালত আগামীকাল (২৫ আগস্ট) বাদীদের জেরার জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজধানীর তুরাগ থানাধীন কামারপাড়াস্থ ৪২ নম্বর বামনেরটেক হাজী কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলার বাসা থেকে মালেককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, এক লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি জাল টাকা, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব জানায়, ড্রাইভার মালেকের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা, জাল টাকার ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। সে তার এলাকায় সাধারণ মানুষকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শক্তির মহড়া ও দাপট প্রদর্শনের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে এবং জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। এ ঘটনায় র‌্যাব-১ এর পুলিশ পরিদর্শক আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে অস্ত্র আইনেসহ পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন।

অস্ত্র মামলায় গত ১১ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১ ‌এর উপপরিদর্শক মেহেদী হাসান চৌধুরী ১৩ জনকে সাক্ষী করে আসামি মালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে ১৪ ফেব্রুয়ারি আদালত মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। এরপর গত ৪ এপ্রিল আসামি মালেকের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে অভিযোগ গঠন করেন।

এছাড়া গাড়িচালক কামালের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধান পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য অধিদফতরে সিন্ডিকেট করে সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা অবৈধভাবে আয় ও বিদেশে পাচার এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম গত বছরের ২২ অক্টোবর তাকে দুদকে তলব করা হয়।

জানা যায়, মালেকের স্ত্রীর নামে দক্ষিণ কামারপাড়ায় ২টি সাততলা বিলাসবহুল ভবন আছে। ধানমন্ডির হাতিরপুল এলাকায় ৪.৫ কাঠা জমিতে একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন আছে এবং দক্ষিণ কামারপাড়ায় ১৫ কাঠা জমিতে একটি ডেইরি ফার্ম আছে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত আছে বলেও জানা যায়।

তিনি স্বাস্থ্য অধিদফতরে ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংগঠন তৈরি করে নিজেই সেই সংগঠনের সভাপতি হন। এই পদের ক্ষমতাবলে তিনি স্বাস্থ্য অধিদফতরের ড্রাইভারদের ওপর একছত্র আধিপত্য কায়েম করেন। ড্রাইভারদের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির নামে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করতেন। এছাড়া তিনি স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক প্রশাসনকে জিম্মি করে বিভিন্ন ডাক্তারদের বদলি ও পদোন্নতি এবং তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করেছেন।

জানা গেছে, ড্রাইভার মালেক তার মেয়ে নৌরিন সুলতানা বেলিকে অফিস সহকারী পদে, ভাই আব্দুল খালেককে অফিস সহায়ক পদে, ভাতিজা আব্দুল হাকিমকে অফিস সহায়ক পদে, বড় মেয়ে বেবির স্বামী রতনকে ক্যান্টিন ম্যানেজার হিসেবে, ভাগ্নে সোহেল শিকারীকে ড্রাইভার পদে, ভায়রা মাহবুবকে ড্রাইভার পদে ও নিকট আত্মীয় কামাল পাশাকে অফিস সহায়ক পদে স্বাস্থ্য অধিদফতরের চাকরি দিয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App