×

জাতীয়

‘রাষ্ট্র পরী মনিকে হেনস্তার দায়িত্ব হাতে তুলে নিয়েছে’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২১, ১০:২৬ পিএম

পরী মনিকে নানা কারণে, নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তাঁকে হেনস্তা করার দায়িত্বটা রাষ্ট্র নিজের হাতেই তুলে নিয়েছে বলে রাজধানীর শাহবাগে এক সমাবেশে বক্তারা বলেছেন।

বক্তারা বলেন, পরী মনিকে কেন বারবার এভাবে রিমান্ডে যেতে হবে, উচ্চ আদালত কেন পুলিশের বিরুদ্ধে একটা সুয়োমোটো জারি করবে না?

রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক নাগরিক সমাবেশে নির্মাতা, শিল্পী, শিক্ষক ও মানবাধিকারকর্মীরা এসব কথা বলেন।

শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক রবিন আহসান ও অ্যাকটিভিস্ট আকরামুল হকের উদ্যোগে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকজন’ ব্যানারে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে বক্তব্য মাদক মামলায় গ্রেপ্তার চিত্রনায়িকা পরী মনির জন্য ন্যায়বিচার ও অবলিম্বে পরী মনির জামিন দাবি করেন।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।

তিনি বলেন, একটি স্বাধীন দেশে একজন মানুষের সুবিচারের জন্য আমাদের মানববন্ধন বা সমাবেশ করতে হচ্ছে, এর থেকে বিব্রতকর, লজ্জাজনক ও দুঃখজনক ঘটনা কোনো সমাজে বোধ হয় আর হতে পারে না।

একটি মানুষ যিনি একসময় কোনো একটা অপরাধের শিকার হয়ে মামলা করেছিলেন, সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নানাভাবে তাঁর পরিচয় সামনে নিয়ে আসা হয়েছে, নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তাঁকে হেনস্তা করার দায়িত্বটা রাষ্ট্র নিজের হাতেই তুলে নিয়েছে।

কিন্তু একজনকে, বিশেষ করে অত্যন্ত অল্প বয়সী পেশাজীবী একজন নারীকে, যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা সংগত হয়নি।

সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে নারীবিদ্বেষ ঢুকে গেছে বলে মন্তব্য করেন সুলতানা কামাল। বিনোদনশিল্পের কোনো নারীর বিরুদ্ধে বলার সুযোগটা তারা হাতছাড়া করে না।

সে কারণেই বিচার শুরু হওয়ার আগেই পরী মনিকে অভিযুক্তের মতো কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে প্রতিনিয়ত তাঁর বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করা হচ্ছে, কুৎসা রটানো হচ্ছে, নিকৃষ্ট কথাবার্তা বলা হচ্ছে। এসবের সুযোগ করে দেওয়ার দায়দায়িত্ব রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে নিতে হবে।

সুলতানা কামাল বলেন, পরী মনির জামিনের আবেদনটি অত্যন্ত অন্যায়ভাবে শোনা হচ্ছে না। তাঁর আইনজীবীকে জামিনের আবেদন করতে দেওয়া হয়নি, আইনজীবীকে পরীমনির সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি।

এটা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কোনো আদালত এটি করতে পারেন না। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে তাদের আচরণ সংযত করতে হবে এবং পরীমনির বিরুদ্ধে বিচার পরিচালনা করতে হলে তা আইন অনুযায়ী করতে হবে।

যা কিছু করবেন, আইন অনুযায়ী সংস্কৃতভাবে, সংযতভাবে, সাংবিধানিকভাবে ও সর্বোপরি মানুষের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষা করে করতে হবে। অন্যথা হলে আমরা তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হব।

এদিকে মাদকের মামলার গ্রেফতার চিত্রনায়িকা পরীমনিকে বারবার রিমান্ডে নেওয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধন করেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী ও স্পিকার নারী; তারপরও নারীকে কেন অপমানিত হতে হবে? পরীমনিকে কেন বারবার রিমান্ডে নিতে হবে? কেন আদালত পুলিশের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো জারি করবে না?   ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকজন’র আয়োজনে এ সমাবেশে এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, আদালতের রায়ের আগেই সোশাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে পরীমনিকে অপরাধী সাব্যস্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শাহরিয়ার কবির। নারীদের প্রতি বিদ্বেষমূল সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সংবাদ মাধ্যমকে সংযত হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে যুবনেতা খান আসাদুজ্জামান, কবি শতাব্দী ভব ও কাজী নুসরাত, ছাত্রনেতা গোলাম মোস্তফা ও সুমাইয়া সেতু, নির্মাতা রাশীদ পলাশ ও অপরাজিতা সঙ্গীতা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App