নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে ব্যর্থ প্রতিবন্ধী বিপ্লব
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২১, ১১:০৩ পিএম
বিপ্লব আজাদ (৫২)
প্রতিবন্ধী বিপ্লব আজাদ (৫২)। বাবা মৃত খাদেম আলী মণ্ডল। বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার থানা বাজারে। তিনি জীবিত থেকেও কাগজে কলমে এখন মৃত। দীর্ঘদিন ধরে নানা চেষ্টা করেও তিনি কিছুতেই নিজেকে জীবিত হিসেবে প্রমাণ করতে পারেননি। ব্যর্থ হয়েছেন বারবার। ফলে অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছেন বিপ্লব আজাদ।
২০১৮ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন প্রতিবন্ধী বিপ্লব আজাদকে মৃত হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কাগজে কলমে মৃত হওয়ার কারণে তিনি ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি। বন্ধ হয়ে গেছে তার প্রতিবন্ধী ভাতাও।
প্রতিবন্ধী হয়েও বিপ্লব আজাদ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে প্রতিবন্ধী ভাতাসহ সরকারি সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। এমনকি এই ভুলের কারণে তিনি করোনাভাইরাসের টিকা পর্যন্ত নিতে পারছেন না। তিনি প্রায় দুই বছর ধরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঘোরাঘুরি করেও নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে পারেননি। বারবার ব্যর্থ হয়েছেন। বর্তমানে বিপ্লব আজাদ দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকায় মুদি ব্যবসা করছেন।
বিপ্লব আজাদ সাংবাদিকদের কাছে আক্ষেপ করে বলেন, দুই বছর ধরে নিজেকে জীবিত প্রমাণ করার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। কিন্তু কিছুতেই নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে পারছি না। উপজেলা নির্বাচন অফিসার আমাকে আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত আমি জীবিত হতে পারলাম না। জানিনা আর কখনো জীবিত হতে পারবো কিনা।
তিনি আরো বলেন, প্রতিবন্ধী পরিচয় পত্র নিয়ে ২০০৬ সাল থেকে নিয়মিত প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে আসছিলাম। কিন্তু গত দুই বছর মৃত বলে আমার ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে। বাড়ির দলিলপত্র খারিজ করাসহ প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারছি না। জীবিত থাকা সত্ত্বেও যারা তাকে মৃত বানিয়ে দিয়েছেন তাদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন তিনি।
ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম-মৃত্যু রেজিস্ট্রার থাকার পরেও এ ব্যাপারে দৌলতপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউল ইসলাম মহি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই। তবে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার বিষয়টি অবগত থাকতে পারেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম আজম বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ভুলত্রুটি হতেই পারে স্বাভাবিক। ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি হয়তো আমার নজরে আসেনি। অবগত থাকলে আগেই সংশোধনের ব্যবস্থা নেয়া যেত। ভুক্তভোগী ব্যক্তি আবেদন করলে আমরা তার ভোটার আইডি ঠিক করে দেব।