×

সারাদেশ

সিআরবি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো হবে চার লাখ স্বাক্ষর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২১, ১০:০৪ পিএম

সিআরবি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো হবে চার লাখ স্বাক্ষর

সিআরবি রক্ষায় গণস্বাক্ষর কর্মসূচি। ছবি: ভোরের কাগজ

‘ আমরা অন্তত: চার লাখ মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাবো। তিনি নিশ্চয়ই পুনর্বিবেচনা করবেন। যে নেত্রী বিশ্ব পরিবেশ রক্ষার জন্য সংগ্রাম করে চলেছেন, তিনি চট্টগ্রামের সিআরবির প্রকৃতি বিনষ্টকারী হাসপাতাল নির্মাণের প্রকল্প অবশ্যই বাতিল করবেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সিআরবিতে নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রাম আয়োজিত সিআরবি থেকে হাসপাতাল প্রকল্প অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন কালে বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, শতবর্ষী বৃক্ষরাজি পাহাড়, টিলা ও উপত্যকায় ঘেরা বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য মণ্ডিত অনন্য প্রাকৃতিক স্থান সিআরবি ধ্বংসের পাঁয়তারা কোন ভাবেই চট্টগ্রামবাসী মেনে নেবে না। এ চট্টগ্রাম মাস্টার দা সূর্যসেনের চট্টগ্রাম। সূর্যসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম তিন দিন স্বাধীন ছিল। বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা প্রথম ঘোষণা করেছিলেন এ চট্টগ্রামে। আজ সিআরবির প্রাকৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করার জন্য আমরা রাজপথে নেমেছি। আমজনতা আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে এই আন্দোলনে।

নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের সদস্য সচিব এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চেওধুরী বাবুলের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সদস্যসচিব এডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, যেদিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাজ করতে আসবে, সেদিন আমাদের লাশের উপর দিয়ে তাদের কাজ করতে হবে। আমরা জীবন দেবো, কিন্তু এই সিআরবি কোন বেনিয়া গোষ্ঠীকে ভাড়া দিতে দেবো না।

মহানগর আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বিশিষ্ট নারী নেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন বলেন, আমরা লক্ষ কোটি গাছ লাগাচ্ছি, অন্যদিকে হাসপাতালের নামে সিআরবিকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছি। আমরা হাসপাতাল চাই। কিন্তু যেখানে আমাদের বাচ্চারা খেলাধুলা করে, আমরা একটু নি:শ্বাস ফেলার জন্য ছুটে আসি, সেখানে কিছুতেই হাসপাতাল চাই না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের এ প্রকল্প বাতিল করবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস।

প্রফেসর ডা. ইমরান বিন ইউনুস বলেন, শয়তানের সঙ্গে লড়াই করতে আমাদের তৈরি থাকতে হবে। সিআরবি রক্ষায় যে প্লাবন শুরু হয়েছে তাকে জনস্রোতে পরিণত করতে হবে। আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ চারদিকে ছড়িয়ে দিতে হবে।

প্রফেসর ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, রেলের জায়গা বলে কোন জায়গা নেই। সব জায়গা জনগণের সম্পত্তি। চাইলেই রেল এ জায়গা দিয়ে দিতে পারে না। আমাদের বিশ্বাস আছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপর। তাঁর হাত দিয়ে পরিবেশ বিধ্বংসী কোন কাজ হতে পারে না।

একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্য ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার বলেন, একটি ধ্বংস প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে আজ আমরা একত্র হয়েছি। আমরা দেখেছি আউটার স্টেডিয়ামসহ আশেপাশে সব জায়গা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এখন হেরিটেজ খ্যাত সিআরবি ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে। এটা একটা বিদ্বেষমূলক কাজ হচ্ছে। এ দু:সাহস তারা কোথ্থেকে পায় তা আজ চট্টগ্রামবাসী জানতে চায়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মনজুরুল আলম বলেন, আমাদের বিশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যথাসময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা মনে করি, চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই সিআরবিকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে একটি মহল। ডিসি হিল ধ্বংস করার পর তাই তারা সিআরবির দিকে হাত বাড়িয়েছে। এসময় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নাগরিকগন উপস্থিত থেকে গনস্বাক্ষর কর্মসুচ সফল করতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

এদিকে চট্টগ্রামে এসএসসি-৮৭ ও এইচএসসি-৮৯ বন্ধুরা সিআরবি তে হাসপাতাল ও কলেজ নির্মাণ বন্ধে ও শতবছরে সৃজিত ঐতিহ্য সিআরবি এর প্রাকৃতিক প্রতিবেশ রক্ষায় চলমান আন্দোলন সংহতি প্রকাশ করে মানব বন্ধন ও বৃক্ষরোপণ করে। সমাবেশ আরো সংহতি প্রকাশ করে ফ্রেন্ড ৮৭,চট্টগ্রাম কলেজ ফাউন্ডেশন। শারুদ নিজামের সঞ্চালনায় সমাবেশ বক্তব্য রাখেন নারীনেত্রী সৈয়দা রিফাত আক্তার,হামিদা নীরু, ডা সালাম ওসমানী, ডা রাব্বী, লেখক-নাট্যকর্মী কর্মী শারদ মাযহার, পারভিন মিমি, ক্যাডেট নুপূর, গান পরিবেশন করেন পপলু, নাসরীন সুলতানা সোমা ও নৃত্য পরিবেশন করেন সেতুলী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App