×

জাতীয়

খুলল পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র, সৈকতে উচ্ছ্বাস, ভিড় নেই পার্কে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২১, ০৯:১৪ পিএম

খুলল পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র, সৈকতে উচ্ছ্বাস, ভিড় নেই পার্কে

ফাইল ছবি

করোনার বিধিনিষেধের কারণে টানা ৪ মাস ২০ দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে খুলেছে দেশের পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো। বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম দিতে তেমন চাপ দেখা যায়নি এমিউজমেন্ট পার্কগুলোতে। তবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ছিল বাঁধ ভাঙা মানুষের উচ্ছ্বাস।

ঢাকার কাছে নরসিংদীর ড্রিম হলিডে পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা জানান, প্রথম দিনে তেমন দর্শনার্থী না পেলেও এতেই তারা খুশি। কারণ, দীর্ঘ দিন পর পার্কগুলো খুলতে পেরেছেন। এতে তাদের লোকসানের পরিমাণ কমবে। এতোদিন পার্ক না চালিয়েও বিপুল পরিমাণ অর্থ লোকসান গুনতে হচ্ছিল তাদের। অনেক শ্রমিক কর্মচারী বেকার হয়ে পড়েছিল। বৃহস্পতিবার এই পার্কটিতে শ‘দুয়েক দর্শনার্থী আসেন বলে জানান তিনি।

এদিকে, ঢাকা কক্সবাজার রুটে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়েছে দেশের সব এয়ারলাইন্স। রিসোর্ট, বিনোদন পার্ক, হোটেল-মোটেলের পক্ষ থেকে চলছে প্রচার-প্রচারণাসহ নানা ছাড়ের অফার। খুলে দেয়ার প্রথম দিনেই কক্সবাজারের হোটেল-মোটেলে চাপ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ বিরতির পর অনেকেই সমুদ্র তীরে ছুটি কাটাতে যাচ্ছেন পর্যটক টানতে কক্ষ ভাড়া ও সেবার ওপর ৩০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস ও রেস্তোরাঁ মালিকরা।

ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, এ কারণে বেশ সাড়াও মিলেছে। সকালে কক্সবাজারে অনেক পর্যটক এসেছেন। এখানকার প্রায় ৪০ ভাগ হোটেলে আগাম বুকিং সম্পন্ন হয়েছে।

কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত ও অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্র দীর্ঘ নিরবতা ভেঙ্গ পর্যটকদের পদচারণায় উচ্ছসিত হয়ে উঠেছে।দীর্ঘদিন জনশূন্য থাকা কক্সবাজারের পর্যটন জোনে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে।সকাল থেকেই সৈকতে অনেক মানুষ দেখা গেছে। কক্সবাজার সৈকতের পাশাপাশি হিমছড়ি, ইনানী, সাবরাং এক্সক্লুসিভ জোন, ন্যাচারপার্ক, বার্মিজ মার্কেট, ডুলহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ অন্যান্য স্পটগুলোতেও মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় সেন্টমার্টিন যাওয়ার কোনো তোড়জোড় ছিল না।

পর্যটন চালু হওয়ায় পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির পর্যটনশিল্প সংশ্লিষ্টদের মাঝেও স্বস্তি ফিরে এসেছে। পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়ায় উচ্ছ্বসিত প্রকৃতিকন্যা খ্যাত সিলেটের পর্যটন সংশ্লিষ্টরাও। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে জল, পাহাড়-টিলা, নদী আর পাথর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সিলেটের গোয়াইনঘাটের জাফলং, বিছানাকান্দি, মিঠাপানির একমাত্র জলাবন রাতারগুল, কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর এবং উৎমাছড়ায় সবুজের সমারোহ আরো বেড়েছে। জৈন্তাপুরের সারি নদী ও নগরের এমএজি ওসমানী শিশুপার্কও খুলছে।

বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়ায় ঢাকা থেকে কক্সবাজার ও সিলেট রুটে দৈনিক ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়েছে এয়ারলাইনসগুলো। আগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইউএস বাংলা ও নভোএয়ার প্রতিদিন ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা পথে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনার করত। বৃহস্পতিবার ইউএস বাংলা গতকাল তিনটি ও নভোএয়ার ওই রুটে ৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব এমিউজমেন্ট পার্কস অ্যান্ড এট্রাকশনের (বাপা) সমন্বয়ক অনুপ কুমার সরকার জানান, নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে পার্ক চালু করা হয়েছে। তবে প্রথম দিন খুব একটা চাপ ছিল না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন কেন্দ্রগুলো চালাতে হবে বলে তারা খুব বেশি দর্শনার্থী এই মুহূর্তে প্রত্যাশাও করছেন না। এ কারণে প্রবেশ বা কক্ষ ভাড়ায় কোন ছাড় বা অফার তারা ঘোষণা করেন নি। অনেক দিন বিনোদন পার্ক বন্ধ থাকায় এ খাতের বিনিয়োগকারীরা বিপাকে পড়েছেন। এখন টিকে থাকার লড়াই চলছে। ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশ দর্শনার্থী প্রবেশ করার নিয়ম মেনে খোলা হয়েছে। পুরো বিষয় তদারকির জন্য বাপা একটি মনিটরিং সেল গঠন করেছে। এই সেলের সদস্যরা বিভিন্ন পার্ক সরেজমিন পরিদর্শন করছেন।

প্রসঙ্গত, ধারণক্ষমতার সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ দর্শনার্থী প্রবেশ ও স্বাস্থবিধি মানার শর্ত দিয়ে গত ১২ আগস্ট মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ নিষেধাজ্ঞা শিথিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে।গত বছর করোনা সংক্রমণের গোড়ার দিকে ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণা হলে বন্ধ হয়েছিল পর্যটন। এরপর সংক্রমণ কিছুটা কমে এলে গত বছরের ১৭ আগস্ট চালু হলেও চলতি বছরের ১ এপ্রিল আবার বন্ধ হয়ে যায় পর্যটনকেন্দ্র।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App