×

সারাদেশ

স্কুলের পাশে ময়লার স্তূপ, দুর্গন্ধে ভোগান্তিতে পথচারীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২১, ০৩:২৯ পিএম

স্কুলের পাশে ময়লার স্তূপ, দুর্গন্ধে ভোগান্তিতে পথচারীরা

জায়গাটিতে দীর্ঘদিন থেকে ময়লা-আবর্জনা ফেলে আসছে রৌমারী হাট-বাজার কর্তৃপক্ষ। ছবি: ভোরের কাগজ

রৌমারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের রাস্তার পাশ ঘেঁষে আছে ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপ। সেখান থেকে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নাকে হাত দিয়ে বা কাপড় অথবা মাস্ক ব্যবহার করে চলছে পথচারীরা। এটি কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশ ঘেঁষা রাস্তার প্রতিদিনের চিত্র।

সেখানে দীর্ঘদিন থেকে ময়লা-আবর্জনা ফেলে আসছে রৌমারী হাট-বাজার কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন হাজার হাজার পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের উৎকট দুর্গন্ধ সহ্য করেই ওই রাস্তা দিয়ে পার হতে হচ্ছে। বাতাসে দুর্গন্ধযুক্ত আবর্জনা স্তূপ ছড়িয়ে পড়ছে সড়কে। এতে করে সেখানে যেমন মশা, মাছির উপদ্রব বাড়ছে, তেমনি দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

রৌমারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে রৌমারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ঘেঁষে বাজারে যান প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ। বিশেষ করে কলেজ পাড়া, বন্দবেড়, বাঘমারা, কুটিরচর, ফলুয়ারচর, চরবন্দবেড় গ্রামসহ দূর দূরান্ত থেকে আসা হাটগামী লোকজন ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রৌমারী বাজারে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা ঘেঁষে দিনের পর দিন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে কিন্তু সংশ্লিষ্ঠকর্তৃপক্ষ তা সরাতে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই রাস্তার এক পাশ ঘেঁষে ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপ। দিন যত যাচ্ছে রাস্তার পাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ ততই বাড়ছে। ওইসব ময়লা-আবর্জনার অধিকাংশই পচনশীল পদার্থ। রৌমারী হাট ও কাঁচা বাজারের নষ্ট হওয়া শাক-সবজি, হোটেলের বাসি-পঁচা খাবার, জবাই করা মুরগির পালক, নাড়িভুড়ি এবং বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনাও সেখানে ফেলা হচ্ছে।

ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই এগুলো পঁচে গিয়ে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। উৎকট গন্ধের কারণে ওই রাস্তার পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হয়। কাপড় দিয়ে বা হাত দিয়ে নাক চেপে ধরে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে ওই এলাকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য। এর পরও সেখানে প্রতিদিন ময়লা ফেলা অব্যাহত থাকায় পথচারীদের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

অন্যদিকে, পলিথিন নিষিদ্ধ হলেও ময়লার ভাগাড়ে পলিথিন আর ব্যবহার করা ওয়ান টাইম কাপের সয়লাব। পচনশীল পদার্থ পঁচে মাটির সঙ্গে মিশে গেলেও পলিথিন আর ওয়ান টাইম প্লেট থেকে যাচ্ছে অক্ষত। সেগুলো বৃষ্টির পানিতে ভেসে আশপাশের ফসলি জমিতে পড়ে জমির উর্ববরতা শক্তি নষ্ট করছে।

সেই সঙ্গে উপজেলার কাঁচারির খালে গিয়ে খালের পানি দূষিত হচ্ছে। ওই রাস্তায় হাটও বসানো হয়। সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে বিদ্যালয়ের ওই কক্ষ গুলোতে বসে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হবে না।

সেখানে স্থায়ী বসবাসকারি খোকা মিয়া বলেন, বাজারে যাওয়ার ওই রাস্তা ঘেঁষে এভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলা মোটেও ঠিক হচ্ছেনা। কারও পক্ষে নিঃশ্বাস নিয়ে এই রাস্তা পার হওয়া সম্ভব নয়। আমি নামাজ পড়তে এই রাস্তা দিয়ে যাই কিন্তু কিছু করার নাই।

কেরামত মিয়া নামের এক ভ্যানচালক বলেন, এই রাস্তা দিয়ে যেতে চাইলে যাত্রী গাড়িতে উঠতে চায় না। উৎকট দুর্গন্ধে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। সঙ্গে বমিও চলে আসে। এ রকম অবস্থা অনেক দিন থেকে চলছে। আমাদের চলাচলের অনেক কষ্ট হচ্ছে।

রৌমারী সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রা জানান, স্কুলের পাশে বাজারের ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থেকে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সরকার স্কুল খুলে দিলে বিদ্যালয়ের ওই পাশের রুম  গুলোতে বসে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হবে না। আমি অতি তাড়াতাড়ি সেখানে থাকা ময়লা আবর্জনা সরিয়ে ফেলার অনুরোধ করছি।

রৌমারী হাট ইজারাদার সোহেব আহমেদ সোহাগ বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। তাছাড়া রৌমারী বাজারে নির্দিষ্ট ময়লা আবর্জনা ফেলার যায়গাও নেই। তবে বণিক সমিতি ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য বিকল্প জায়গা খোঁজা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান জানান, সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে হবে। স্কুলের পাশে ওই রাস্তা ঘেঁষে ময়লা-আবর্জনা যেন আর না ফেলানো হয় এ জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App