×

খেলা

লর্ডসে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এগিয়ে গেল ভারত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২১, ০১:২০ এএম

লর্ডসে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এগিয়ে গেল ভারত

লর্ডসে ইংল্যান্ডকে ১৫১ রানে হারিয়ে আনন্দে মাতোয়ারা বিরাট কোহলি

সোমবার লর্ডসে ভারত ইংল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্টটি বেশ জমে উঠেছিল। এইদিন বিরাট কোহলিরা তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। প্রথম ইনিংসে ভারত করেছিল ৩৬৪ রান। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৩৯১ রান। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসে,জয়ের জন্য তাদের সামনে টার্গেট ছিল ২৭২ রানের। ভারতীয় বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে সামনে কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারেনি ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ১২০ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিক ইংল্যান্ডের ইনিংস। লর্ডস টেস্টে ভারত জয় পায় ১৫১ রানে। বিশাল ব্যবধানে জয়ের ফলে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বিরাট কোহলিরা। ২৫ আগস্ট হেডিংলিতে শুরু হবে তৃতীয় টেস্ট। লর্ডসে নান্দনিক সেঞ্চুরি হাঁকানোর সুবাদে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন লোকেশ রাহুল।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টের পঞ্চম দিনে ভারতের কঠিন মুহূর্তে হাল ধরেন দুই পেসার মোহাম্মদ শামী ও জাসপ্রিত বুমরাহ। একটা সময়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে রবিশাস্ত্রীর শিষ্যরা। সেখান থেকে তাদের শক্ত অবস্থানে পৌঁছে দেন শামী ও বুমরাহ। যেখানে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি ম্যাচটির দ্বিতীয় ইনিংসে ৩১ বল খেলে ২০ রান করেন, সেখানে শামী ৭০ বল খেলে ৫৬ রান করেন। এর মাধ্যমে তিনি দলের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান করেন। এমনকি জাসপ্রিত বুমরাহও কোহলির চেয়ে বেশি রান করেছেন। তিনি ৬৪ বল খেলে ৩৪ রান করেন। তাদের নবম উইকেটে অপ্রতিরোধ্য পার্টনারশিপের বদৌলতে ইংলিশদের ২৭২ রান টার্গেট দিতে সমর্থ হয় ভারত। এই রান তাড়া করে খেলতে নেমে ইংল্যান্ড দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে।

ইংলিশদের যে ১০টি উইকেটের পতন ঘটেছে তা ভাগাভাগি করে নেন চার ভারতীয় বোলার। মোহাম্মদ সিরাজ ৩২ রান দিয়ে তুলে নেন ৪ উইকেট। বুমরাহ ৩৩ রানে ৩ উইকেট এবং ইশান্ত শর্মা ১৩ রান খরচ করে ২ উইকেট লাভ করে এবং হাফসেঞ্চুরি হাঁকানো শামী তুলে নেন অপর উইকেটটি।

ম্যাচটির প্রথম ইনিংসে ভারত সব উইকেট হারিয়ে ৩৬৪ রান করে। জবাবে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৩৯১ রান করে। এরপর ভারত নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৮ রান করে। এতেই ইংল্যান্ডের সামনে ২৭২ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা দাঁড় হয়ে যায়।

লর্ডস টেস্টের চতুর্থদিনও মনে হয়েছিল যে টেস্টটি ড্র হবে। চতুর্থদিন শেষে ভারত ছয় উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান করে। এরপর সোমবার দলের রানের খাতায় ২০৯ রান হতেই আটটি উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। তখন মনে হচ্ছিল ভারতের ব্যাটিং একটু পরে শেষ হবে। কিন্তু শামী ও বুমরাহ মিলে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের বেকায়দায় ফেলে দেন।

ম্যাচের চতুর্থ দিন অপরাজিত ছিলেন ঋসভ পন্ত ও ইশান্ত শর্মা। এদিন ঋসভ পন্ত ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। অপরদিকে ইশান্ত শর্মা ৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। কিন্তু গতকাল চতুর্থদিন তারা বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। ঋসভ পন্ত ৪৬ বল খেলে ২২ রান করার পর অলি রবিনসনের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। তখন ভারতের সংগ্রহ ১৯৪ রান। পন্ত আউট হওয়ার পর ইশান্ত শর্মাও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনি ২৪ বল খেলে ১৬ রান করে সেই অলি রবিনসনের বলেই আউট হন।

এদিকে কোহলি বেশ কয়েকদিন যাবৎ নিজের ফর্ম ফিরে পাচ্ছেন না। টেস্টে তিনি বাজে পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন। আর কোহলির এমন পরাস্ত হওয়ার কারণ বের করেছেন ব্যাটিং কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার। এ ব্যাপারে তিনি বলেন ‘টেস্টে কোহলি ৮ হাজারের ওপর রান করেছে। এটা সে নিশ্চয়ই একটা পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই করতে পেরেছে। ইদানিং দেখছি সে অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে আবারো খোঁচা দেয়া শুরু করেছে। পা থাকছে এক জায়গায়, ব্যাট চলে যাচ্ছে আরেক জায়গায়। সে আসলে কী ভাবছে? সে অবশ্যই চায় রান করতে। কিন্তু ভাবনাতেই পার্থক্যটা তৈরি হয়ে যায় এক ব্যাটসম্যানের সঙ্গে অন্যজনের।’

লর্ডস টেস্টে প্রথম ইনিংসে ১০৩ বলে ৪২ রান করেছিলেন কোহলি। সে ইনিংসে নিজেকে বেশ গুটিয়ে রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে তাকে অনেকটাই ইতিবাচক দেখাচ্ছিল। ৩১ বলে ২০ রান করে ফেলেছিলেন। গাভাস্কার মনে করেন, কোহলি দ্বিতীয় ইনিংসে আরো একটু ধরে খেললেই পারতেন। টেস্টের মেজাজ বুঝেই তার ব্যাট চালানো উচিত ছিল।

প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে গিয়েই কোহলি বিপদ ডেকে আনছেন বলে মনে করেন গাভাস্কার, ‘প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা ভালো। কিন্তু সেটি অবশ্যই নিজের ক্ষতি করে নয়। অনেক সময় প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে গিয়ে নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনেন ব্যাটসম্যানরা। কোহলির ক্ষেত্রেও সেটিই হয়েছে। প্রতিটি ব্যাটসম্যানেরই উচিত নিজের মতো করে উপায় খুঁজে বের করা। এটাই টেস্ট ক্রিকেট। ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টির চেয়ে এটি আলাদা। টেস্টে পুরনো ধ্যান-ধারণার ক্রিকেটটাই খেলতে হয়।’

এদিকে দুই দলের প্রথম ম্যাচটি ড্র হয়। নটিংহ্যামে হওয়া সে ম্যাচটিতে জয়ের দ্বারপ্রান্তে ছিল ভারত। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি ড্র হয়। যদি ওই ম্যাচটিতে বৃষ্টি বাগড়া না দিত তাহলে ভারত সিরিজে এগিয়ে যেত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App