×

অর্থনীতি

বন্দর থেকেই আমদানি পণ্য খালাস নিতে চায় বিজিএমইএ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২১, ০৫:৫৮ পিএম

বন্দর থেকেই আমদানি পণ্য খালাস নিতে চায় বিজিএমইএ

পণ্য খালাস কার্যক্রম দ্রুততরকরণ এবং অতিরিক্ত খরচ থেকে রক্ষা করতে বেসরকারি আইসিডি (ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো) থেকে নয়, চট্টগ্রাম বন্দর থেকেই আমদানি পণ্যের কন্টেইনার খালাস নিতে চায় তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। চট্টগ্রাম বন্দরের তুলনায় আইসিডি থেকে পণ্য খালাসে কন্টেইনার প্রতি প্রায় ৬৫ ভাগ খরচ বেশি এবং দ্বিগুণ সময় লাগে।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল এম. শাহজাহান এর সঙ্গে তার চট্টগ্রামস্থ কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান তাকে এ আনুরোধ জানান।

এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরের তুলনায় আইসিডি থেকে পণ্য খালাসে কন্টেইনার প্রতি প্রায় ৬৫ ভাগ খরচ বেশি এবং দ্বিগুণ সময় লাগে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার বরাবর গত ১২ আগস্ট একটি চিঠি দেয় বিজিএমইএ। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক তানভীর আহমেদ, আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, হারুন অর রশিদ, নাভিদুল হক, রাজীব চৌধুরী, মোঃ ইমরানুর রহমান, মোঃ এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ আবদুস সালাম, তানভির হাবিব, এ.এম. শফিউল করিম (খোকন), মোঃ হাসান (জ্যাকি), এম, এহসানুল হক, মোহাম্মদ মিরাজ-ই-মোস্তফা (কায়সার), সাবেক ১ম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক ১ম সহ-সভাপতি মঈন উদ্দিন আহমেদ (মিন্টু), সাবেক পরিচালক ও কাস্টমস (সমুদ্র) বিষয়ক বিজিএমইএ’র স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান অঞ্জন শেখর দাশ, সাবেক পরিচালক ও কাস্টম (বন্ড) বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সদস্য (প্রশাসন) মোঃ জাফর আলম, সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, সচিব মোঃ ওমর ফারুক, পরিচালক পরিবহন এনামুল করিম, টার্মিনাল ম্যানেজার মোঃ কুদরত-ই-খুদা মিল্লাত প্রমুখ। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিশ্বের নানা দেশ থেকে আমদানি করা কাঁচামালবাহী কন্টেইনার বন্দরের ইয়ার্ড থেকে খালাস করতে পোশাক মালিকদের পূর্বে সময় লাগতো ২ দিন। বর্তমানে বেসরকারি আইসিডিগুলো থেকে সেই কন্টেইনার খালাস করতে সময় লাগছে ৬ থেকে ৭ দিন। পন্য খালাসের বিলম্বের কারনে পোশাক উদ্যোক্তাদেরকে আর্থিক মাশুল দিতে হচ্ছে। আবার বেসরকারি আইসিডি’তে প্রতি কন্টেইনারের জন্য যে পরিমান অর্থ আদায় করা হচ্ছে, তার বন্দরের তুলনায় কয়েকগুন বেশি। এতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। পোশাক শিল্প যখন কোভিড-১৯ মাহামারির প্রভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রামে লিপ্ত, তখন চট্রগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্য খালাসে এই অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ ও বাড়তি চার্জ আদায় শিল্পের স্বাভাবিক গতিকে ব্যাহত করছে। বিজিএমইএ সভাপতি আরো বলেন, আসন্ন মাসগুলোতে পোশাক রপ্তানি আরো বাড়বে বলে আশা করছি। এ বিষয়টিকে সামনে রেখে চট্রগ্রাম বন্দরের সামর্থ্য বাড়ানোর বিষয়ে একটি যথাযথ পরিকল্পনা প্রনয়ণ করে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধও তিনি জানান।

বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম কোভিড-১৯ মহামারিকালীন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার প্রেক্ষিতে আর্ন্তজাতিক বাজারে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে সম্পাদনের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল এম. শাহজাহান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পোশাক শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে সম্পাদন করছে। সভায় তিনি বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন। এ’লক্ষ্যে বিজিএমইএসহ সব ষ্টেক-হোল্ডারদের সহযোগিতা কামনা করেন। উল্লেখ্য, পোশাক শিল্পে রপ্তানি ও আমদানি পণ্যের জাহাজীকরণ নির্বিঘ্ন ও সময়সাশ্রয়ী করার জন্য বিজিএমইএ এর গৃহীত উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, বন্দরের ইয়ার্ডে কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতা ৪৯ হাজার ১৮ টিইইউস (টুয়েন্টি ফুট ইকুইভ্যালেন্ট ইউনিট)। গত ১২ আগস্ট পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে ছিলো ৩৫ হাজার ৪১৯ টিইইউস। ১৯টি বেসরকারি আইসিডিতে কন্টেইনার ধারণক্ষমতা ৭৮ হাজার ৭০০ টিইইউস। ১৪ আগস্ট পর্যন্ত আইসিডিগুলোতে কন্টেইনার ছিলো ৫৬ হাজার ৫৯৭ টিইইউস। এর মধ্যে আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ১৪ হাজার ৪৪১ টিইইউস, রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ৭ হাজার ৬১৩ টিইইউস এবং খালি কন্টেইনার ৩৪ হাজার ৫৭৩ টিইইউস।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App