×

অর্থনীতি

অর্থনীতির প্রধান চার খাতের তিনটিতেই অবদান রেখে চলেছি: গভর্নর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২১, ০৬:৪২ পিএম

অর্থনীতির প্রধান চার খাতের তিনটিতেই অবদান রেখে চলেছি: গভর্নর

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে গভর্নর। ছবি: ভোরের কাগজ

বঙ্গবন্ধু প্রধানত দেশের স্বাধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য আজীবন জীবনবাজীর সংগ্রাম করেছেন। আমরা তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে বদ্ধ পরিকর বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।

দেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল ও উন্নয়নশীল দেশের সব শর্ত পূরণের একেবারে দ্বারপ্রান্তে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, অর্থনীতির প্রধান চারটি খাতের তিনটি খাতেই আমরা অবদান রেখে চলেছি। তিনি আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স- এসব খাতে ভূমিকা পালনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সব বিদেহী আত্মার মুক্তি ও শান্তি কামনা করেন।

করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়। আজ রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বরে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর ফজলে কবির এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জনাব আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, এ. কে. এম সাজেদুর রহমান খান এবং আবু ফরাহ মো. নাছের। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ব্যাংকের সব সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি বিশেষভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশত বার্ষিকী ও মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটির নেতৃত্বে পরিচালিত হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। অতঃপর বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বরে স্থাপিত জাতির পিতার ভাস্কর্যে গভর্নর ও ডিপুটি গভর্নরবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল, সিবিএ, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কমান্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক ক্লাব, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, বঙ্গমাতা পরিষদ, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মচারী সমবায় ঋণদান সমিতি লিঃ, ঢাকা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি, ঢাকা অধিকোষ ও স্বাধীনতা আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকেও পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় এবং সংক্ষিপ্ত আকারে ১৫ আগস্টে সব শাহাদত বরণকারীর আত্নার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে ‘মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটি’ কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, ব্যাংক চত্বরে বিশেষ আলোচনা সভা, ব্যাংকের কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল এবং দরিদ্রদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

আলোচনা সভায় ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, আজ থেকে ৪৬ বছর পূর্বে যে বিপথগামী ও বিশ্বাস ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে স্বাধীন বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এই বাংলাদেশ কখনো শেষ হবার নয়। মুজিব মানেই বাংলাদেশ। ডেপুটি গভর্নর এ. কে. এম. সাজেদুর রহমান খান বলেন, ‘১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির সবচেয়ে শোকাবহ দিন। এদিন বাংলাদেশ হারিয়েছে জাতির পিতাকে। এমনকি শিশু সন্তান শেখ রাসেলকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর সকল চিহ্ন চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল ঘাতকেরা। কিন্তু বাংলাদেশ ও বিশ্বের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু চিরদিন অমর হয়ে থাকবেন।

ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, ১৫ আগস্ট বাংলার ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। এটি বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত বেদনার। জাতির পিতার নিজের ও পরিবারের ১৬জন সদস্যের রক্তের বিনিময়ে রক্ষা করেছেন এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নের জন্য আমরা গভর্নর মহোদয়ের নেতৃত্বে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাব। এদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য আমাদের কর্ম-অবদানে অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর আত্মা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে।” ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল তাঁর আলোচনায় ১৫ আগস্টে সকল শাহাদত বরণকারী ও একাত্তরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

তিনি বলেন, হেনরী কিসিঞ্জার বলেছিল- বাংলাদেশ একদিন ভাগাড়ে পরিণত হবে, কিন্তু এই বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনীতি, উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা সৌভাগ্যবান যে, এই উন্নয়নের ধারায় আমরা সম্পৃক্ত হতে পেরেছি। সকলে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করলে অবশ্যই আমরা বঙ্গবন্ধুর আকাঙ্খা বাস্তবায়ন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফসল পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারবো।

মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মো. নেছার আহাম্মদ ভূঁঞা গভর্নর মহোদয়কে মানবিক গভর্নর আখ্যা দিয়ে ইতিহাসের মহামানব বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীকার অর্জন ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করে মুক্তি অর্জন করার জন্য বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। এদেশের মাটি ও মানুষকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন বলেই বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মহুতি দিতে হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ তাঁর সুযোগ্য কন্যা বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিরন্তরভাবে কাজ করে চলেছেন বলে তিনি তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন। তিনি দৃঢ় আশা প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার হয়েছে, রায় কার্যকর হয়েছে, তবে এখনো যারা বাকি আছে এই বাংলার মাটিতে তাদের বিচার হবেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App