×

সারাদেশ

রাণীনগরে ২২ কিলোমিটার বেহাল সড়কে চরম দুর্ভোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২১, ০৩:০২ পিএম

রাণীনগরে ২২ কিলোমিটার বেহাল সড়কে চরম দুর্ভোগ

নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুর কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার বেহাল সড়ক।

রাণীনগরে ২২ কিলোমিটার বেহাল সড়কে চরম দুর্ভোগ

নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার খানা খন্দে ভরপুর বেহাল সড়কে চরম দূর্ভোগে পরেছেন উপজেলাবাসি। দীর্ঘ আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে সড়কটির কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখায় রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর দিন দিন সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা। ফলে নিত্য দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার লাখ লাখ মানুষ।

জানা যায়, উপজেলার সদর রাণীনগর থেকে আবাদপুকুর হয়ে কালীগঞ্জ পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার সড়কটি ছিল এলজিইডি’র আওতায়। সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল এবং দীর্ঘ এলাকা জুড়ে মানুষের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষে গত চার বছর আগে এলজিইডি থেকে সড়ক জনপদ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। এই সড়কটি রাণীনগর সদর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জের মধ্য দিয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সাথে মিলিত হয়েছে। সড়কটি প্রসস্ত এবং মজবুত পাকা করণের জন্য গত ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে টেন্ডার দেওয়া হয়। দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার সড়ক, ২৩টি কালভার্ট ও চারটি সেতু নির্মানে মোট ব্যয় ধরা হয় ৯১ কোটি টাকা। ২২ কিলোমিটার সড়ক এবং ২৩টি কালভাট নির্মানের জন্য কাজটি পান এক্সপেকট্রা ওয়াহিদ কনস্ট্রাকসান জয়েন্ট ভেনচার ঢাকা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আর সড়কের চারটি সেতু নির্মানের কাজ পেয়েছেন মীর হাবিবুল আলম কন্সট্রাকশন। সড়ক, কালভার্ট ও সেতু নির্মানে সময়সিমা দেয়া হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

এর মধ্যে সড়কটির কাজের ঠিকাদার কেবলমাত্র ২২ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখেন এবং আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ রাস্তার মাঝে কিছু জায়গায় পাথর ফেলেন। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদাররা একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে থাকেন। তারপর দীর্ঘ আড়াই বছরেও সড়কটির কাজ শেষ করতে না পাড়ায় চলতি বছরের ৩ মে সড়কের কাজের চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিলসহ ওই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে কর্তপক্ষ। এছাড়া দীর্ঘদিনেও কালভাট নির্মানের কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এদিকে মীর হাবিবুল আলম কন্সট্রাকশন সড়কটির সেতু নির্মাণ কাজও এখনো শেষ করতে পারেনি।

স্থানীয় উজ্জল হোসেন, এরশাদ হোসন, জাহাঙ্গীর আলম, মুন্টু জানান, উপজেলার সদর থেকে আবাদপুকুর পর্যন্ত সড়কের কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। আবাদপুকুর থেকে কালীগঞ্জ রাস্তার মাঝে কিছু জায়গায় পাথর ফেলা হয়েছে। আর বাকি রাস্তার কার্পেটিং তুলে রোলার দিয়ে ফেলে রাখেন ঠিকাদাররা। দীর্ঘ আড়াই বছরেও ঠিকাদার সড়কের কাজ সম্পন্ন না করার কারনে এবং দীর্ঘদিন এমন অবস্থায় পরে থাকায় রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্তে খানা খন্দে ভরপুর হয়ে গেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে সাধারণ জনগন। ফলে সড়কটির কারনে চরম দূর্ভোগে পরেছেন উপজেলাবাসি।

রাস্তার যাত্রী মকলেছুর রহমান, বকুল, হাসান, হাবিব, রুবেলসহ আরো অনেকেই চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই সড়কে ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ভারি মালামাল পরিবহন, জরুরী রোগী নিয়ে রাস্তায় চলাচল করা অত্যন্ত কষ্ট সাধ্য হয়ে পরেছে। সড়কটির এমন বেহাল দশার অজুহাতে পরিবহন মালিকরা দফায় দফায় বৃদ্ধি করছেন ভাড়া। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন সাধারন জনগণ। উপজেলার লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ লাগব করতে দ্রুত সড়কটির কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, সড়কটির নির্মান কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ করতে না পাড়ায় ঠিকাদারের গাফিতালির কারনে চলতি বছরের ৩ মে সড়কের কাজে চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিল করাসহ ওই প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি বলেন, সড়কটির কাজের জন্য নতুন ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান আছে। আর সড়কের সেতুর ও কালভার্ট নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App