×

খেলা

ওমের জোবের তাণ্ডবে দুইয়ে শেখ জামাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২১, ০৮:৪০ পিএম

ওমের জোবের তাণ্ডবে দুইয়ে শেখ জামাল

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে উত্তর বারিধারার বিপক্ষে গোল করার পর শেখ জামালের সুলেমান সিলাহকে ঘীরে সতীর্থদের উল্লাস।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে বৃহস্পতিবার (১২ আগষ্ট) বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উত্তর বারিধারার বিপক্ষে তাণ্ডব চালিয়েছেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ওমর জোবে। তিনি একাই ম্যাচটিতে চারটি গোল করেছেন। তার এমন অসাধারণ পারফরমেন্সে শেখ জামাল পেয়েছে ৫-১ গোলের বড় ব্যবধানের জয়। আর তারা ওঠে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে। শেখ জামালের হয়ে অপর গোলটি পেয়েছেন সুলেমান সিলাহ। প্রিমিয়ার লিগে অপর ম্যাচে বসুন্ধরা কিংস ১-০ গোলে হারিয়েছে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘকে। বসুন্ধরার হয়ে একমাত্র গোলটি করেন বিপলু আহমেদ।

একদিন বিরতির পর ফের মাঠে গড়ায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। দিনের প্রায় একই সময় বিকাল ৪টায় উত্তর বারিধারা ক্লাব শেখ জামাল ধানমন্ডির মোকাবিলা করতে নামে। দিনের অন্য ম্যাচে বসুন্ধরা কিংস নামে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের বিপক্ষে।

এদিকে গত মঙ্গবার (১০আগষ্ট) টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে ছিল শেখ জামাল। বসুন্ধরা কিংস ইতোমধ্যে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করে শিরোপা জয় করে নিয়েছে। ফলে এখন প্রিমিয়ার লিগে হচ্ছে দ্বিতীয়স্থানের লড়াই। যেহেতু শেখ জামালের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ শেষ, তাই তাদের লক্ষ্য এখন দ্বিতীয় হওয়া। আজ উত্তর বারিধারার বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয়স্থান পুনরুদ্ধার করার মিশনে নেমেছিল শেখ জামাল, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এ মিশনে তারা বেশ ভালোভাবেই সফল হয়েছে।

অপরদিকে আজ একই সময় ঢাকার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে খেলতে নামে চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। তবে ম্যাচটিখেলাতে আরামবাগের বিপক্ষে জয় তুলে নিতে ঘাম ছুটেছে বসুন্ধরার। একেবারে শেষ মুহূর্তে একটি গোল করে আরামবাগের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে ক্লাবটি।

প্রিমিয়ার লিগের চলমান মৌসুমে যে দল দ্বিতীয়স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করতে পারবে, তারা সামনে এশিয়ান ফুটবলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লিগ এএফসি কাপের প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে। প্লে-অফে জায়গা করে নেয়ার লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয়স্থানের লড়াইটাও বেশ জমে ওঠেছে। এ লড়াইটা সবচেয়ে বেশি হচ্ছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের মধ্যে। তবে গত মঙ্গলবার নিজ নিজ খেলায় জয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয়স্থানে থেকে লিগ শেষ করার সম্ভাবনা তৈরি করেছে চট্টগ্রাম আবাহনী আর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবও। শেখ জামাল ধানমন্ডি ২০ ম্যাচ থেকে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। ঢাকা আবাহনী ২০ থেকে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়স্থানে আছে, চট্টগ্রাম আবাহনী ২০ ম্যাচে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থস্থানে। আর ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান ২০ ম্যাচ খেলে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে পঞ্চমস্থানে।

এই চার দলের মধ্যে এখন পয়েন্টের ব্যবধান কাছাকাছি অবস্থায় আছে। দুই আবাহনী ও মোহামেডানের চারটি করে ম্যাচ বাকি আছে, শেখ জামালের ম্যাচও বাকি চারটি। এখন দ্বিতীয়স্থান নিয়ে এ চারটি দলের মধ্যে বেশ ভালো একটি লড়াই হবে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

অপরদিকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা নিশ্চিত হওয়ার পর এখন বসুন্ধরা কিংস অনেকটা নির্ভার। তাদের লক্ষ্য এখন এএফসি কাপ। ঘরোয়া ফুটবলে ভালো করার পর এশিয়ান ফুটবলে উন্নতি করার নজর ক্লাবটির। আর এজন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে তারা। গতকাল আরামবাগের বিপক্ষে বড় বিদেশি তারকাদের মাঠে নামায়নি তারা। এমনকি নিয়মিত গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোও ছিলেন বিশ্রামে। রবিনহো দলে থাকলেও তাকে মাঠে নামাননি কিংস কোচ। বড় তারকাদের ছাড়া খেলতে নামা বসুন্ধরার এ কারণে হয়তো জয়টা পেতে কষ্ট হয়েছে।

বসুন্ধরা কিংস এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে খেলতে নামবে আগামী ১৮ আগস্ট। নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা মোকাবিলা করবে মার্জিয়া এফসির। তাদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে ২১ আগস্ট। যদিও বসুন্ধরার এ ম্যাচটির প্রতিপক্ষ এখনো নির্ধারিত হয়নি। ২৪ আগস্ট গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারতীয় ক্লাব মোহনবাগানের বিপক্ষে খেলবে তারা।

ফুটবলএ ক্লাবগুলোর বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে গ্রুপ পর্বের শীর্ষে থাকতে পারলে বা গ্রুপ রানার্সআপ হতে পারলে পরবর্তী রাউন্ডে যেতে পারবে বসুন্ধরা কিংস। এএফসি কাপে ভালো করার জন্য গত বছর মেসির আর্জেন্টাইন সতীর্থকে এনেছিল বসুন্ধরা। কিন্তু একটি ম্যাচ খেলার পর করোনা হানা দেয়। বন্ধ হয়ে যায় এএফসি কাপও। বসুন্ধরা গত মৌসুমের এএফসি কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৫-০ গোলের জয় পেয়েছিল। এতে বোঝা গিয়েছিল বেশ শক্তিশালী দল নিয়ে এএফসি কাপে গিয়েছিল বসুন্ধরা। কিন্তু করোনার থাবার কারণে নিজেদের প্রমাণ করতে পারেনি কিংস। এবার তাদের সামনে সে সুযোগ রয়েছে। এখন দেখার বিষয় বসুন্ধরা কতদূর যেতে পারে।

প্রিমিয়ার লিগে বসুন্ধরা কিংসের পারফরমেন্স দেখলে বোঝা যায় এএফসি কাপেও তারা বেশ ভালোই করবে। বসুন্ধরা কিংসের দেশীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই জাতীয় দলের হয়ে খেলে থাকেন। বিদেশি খেলোয়াড় যারা রয়েছেন তাদের দক্ষতাও বেশ। মাঠের পারফরমেন্স ও ভাগ্য সব মিলিয়ে যদি খাপে খাপে মিলে যায় তাহলে বসুন্ধরা এশিয়ান ফুটবলেও বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে সমর্থ হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App