×

অপরাধ

পরীমনি কাণ্ডে ব্যবসায়ীদের ব্ল্যাকমেইল করছে একটি চক্র: পুলিশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২১, ০৭:১২ পিএম

ঢাকাই চলচ্চিত্রের নায়িকা পরীমনি ও সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া আরো দুএকজন মডেলের মামলার তদন্তের সুযোগে একটি চক্র কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে ঢাকার পুলিশ কমিশনার বলেছেন, 'ভীতসন্ত্রস্ত' হয়ে কয়েকজন ওই চক্রকে টাকাও দিয়েছেন। এই চক্রে পুলিশের সদস্য এবং গণমাধ্যমকর্মীরা যুক্ত রয়েছেন বলে দাবি করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। তবে সম্মানহানীর ভয়ে কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে সামনে এগিয়ে না আসায় কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না বলে বক্তব্য দেন তিনি।

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের কিছু প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় এসব তথ্য জানান।

গত চৌঠা অগাস্ট পরীমনির বনানীর বাসায় কয়েক ঘণ্টার অভিযানের পর তাকে র‍্যাব হেফাজতে নেয়া হয়। অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ মদ ছাড়াও এলএসডি ও আইসের মতো মাদক উদ্ধার করা হয়েছে বলে র‍্যাব দাবি করে। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা হয় এবং চারদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফায় আরো দুদিনের রিমান্ডে নেয়া হয় তাকে। সাম্প্রতিক অভিযানে আরো কয়েকজন মডেল ও চলচ্চিত্র শিল্প সংশ্লিষ্ট লোকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের বিরুদ্ধেও মাদক ও পর্নোগ্রাফির অভিযোগ আনা হয়।

পরবর্তী কয়েকদিন এসব নিয়ে ধারাবাহিকভাবে নানা প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশের গনমাধ্যমগুলো, যেগুলোর কয়েকটিতে পুলিশের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশিত হয় যে, নায়িকা ও মডেলদের সঙ্গে যাদের যোগাযোগ বা সম্পর্ক ছিল, তাদের তালিকা তৈরি করছে পুলিশ।

মঙ্গলবার পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এইরকম কোন তালিকা পুলিশ করছে না। তবে এই তালিকার খবরকে ব্যবহার করে 'একটি চক্র' ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিচ্ছে। অনেকেই ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িতে থাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের কাছে জানতে চাইছে, ভাই আমি কি বাড়িতে থাকবো? কেন? আমাকে তো ওমুক মিডিয়া থেকে ফোন করা হয়েছে যে, পরীমনি নাকি আমার নাম বলেছে। অথবা পিয়াসা আমার নাম বলেছে। আমি কি বাড়িতে থাকবো?

তিনি বলেন, আমাদের কাছে, আমাদের মন্ত্রী মহোদয়ের কাছেও অভিযোগ করেছেন যে, তার কাছে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে। আপনি যদি আমাকে এই পরিমান অর্থ না দেন, তাহলে আমাদের কাছে আপনার বিরুদ্ধে যে তথ্য আছে, সেটা দিয়ে নিউজ করে দেয়া হবে।

পরীমনির মামলার কথা উল্লেখ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, এখন মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। আমি সিআইডি চিফের সঙ্গে কথা বলেছি। উনিও পরিষ্কারভাবে বলেছেন, এই ধরনের কোন তালিকা তৈরি করার অথবা কাউকে অ্যারেস্ট করার কোন আইনগত ভিত্তি নেই এবং এই ধরনের কোন কাজ পুলিশের কোন সংস্থা করছে না। এসব নিউজ করলে সামাজিকভাবে হয়তো তাকে হেনস্থা করা হবে, কিন্তু আইনগতভাবে উনি কোন অপরাধ করেছেন বলে আমি মনে করি না।

যারা এই চাঁদাবাজি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কি? সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কমিশনার বলেন, 'মুশকিল হলো, যে ব্যক্তির কাছ থেকে চাঁদা নিয়েছে, উনি তো প্রকাশ্যে আসতে চাচ্ছেন না। সামাজিক মর্যাদার ভয়ে তিনি মামলা করছেন না। এখন যদি উনি মামলা করেন, তাহলে (তার ভয়) জানাজানি হয়ে যাবে যে, আমার সঙ্গে (ওই ব্যক্তির) নিশ্চয়ই তার সঙ্গে (নায়িকা বা মডেল) নিশ্চয়ই তার কোন সম্পর্ক ছিল, সেইজন্য আরেকজন এটা ব্যবহার করে কিছু চাঁদা নিয়ে গেছে। ফলে ওনার যে সামাজিক অবস্থান, সেই কারণে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার হলেও, তিনি মামলা করছেন না। যেহেতু কোন মামলা নেই, আমরা কীভাবে ব্যবস্থা নেবো?

এই ব্ল্যাকমেইলিংয়ের পেছনে বিভিন্ন সংস্থার, যেমন সাংবাদিক ও পুলিশেরও কোন কোন সদস্য জড়িত রয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। কিন্তু সরাসরি কেউ অভিযোগ না করায় তারা ব্যবস্থা নিতে পারছেন না বলে দাবি করেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App