×

জাতীয়

রূপগঞ্জ ট্রাজেডি: বুক খালি করার বিচার যেন শেখ হাসিনা করে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২১, ০২:১৭ পিএম

রূপগঞ্জ ট্রাজেডি: বুক খালি করার বিচার যেন শেখ হাসিনা করে

শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গের সামনে রুপগঞ্জে নিহত স্বজনদের আহাজারি। ছবি: ভোরের কাগজ

কত মায়ের বুক খালি হইছেরে, আমার বুক ওতো খালি পইড়া থাকবোরে মা। টাকা দিয়ে কি করমু, তোরেতো পামুনা কম্পা। কি আগুন লাগাইছে, তোরে দেখাই যাইবোনা। যারা আমগো বুক খালি করছে, শেখ হাসিনা যেন তাদের বিচার করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গের সামনে এভাবেই বিলাপ করছিলেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত কম্পা রানী বর্মনের (১৪) মা সুমা রানী বর্মন। পাশেই চিৎকার করে কান্না করে যাচ্ছিলেন কম্পার ফুফু পতি রানী বর্মন। তাদের গগন বিদয়ী কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে মর্গের বাতাস। তাদের মতোই কান্নায় ভেঙে পড়েন অন্য স্বজনরাও। কান্না করবেনই বা না কেন? ডিএনএ নমুনা দেয়ার পর বুকের ধন নয়নের মনির লাশ বুঝে পাওয়ার অপেক্ষার শেষ হয়েছে তাদের।

শনিবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকেই নারায়নগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ২১টি লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়। মর্গের মর্চুয়ারি থেকে লাশের কফিন বের করার সঙ্গেই আহাজারিতে ভেঙে পড়তে দেখা যায় বেশিরভাগ স্বজনদের। স্বজনদের এ কান্না আর চিৎকার মুহুর্তেই আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি করে সেখানে। কে কাকে শান্তনা দিবে, অঙ্গার হওয়া লাশের কফিনে, কেউ ও ভাই, ভাইরে, ফিরে আয় বলে মাথা ঠুকছে, কেউ সন্তানের নাম ধরে কফিনে আলিঙ্গন করার চেষ্টা করছে। এর ভিন্নতা দেখা যায়নি কম্পার মা সোমা রানীর বেলায়। মর্গ থেকে লাশ বের করতেই তার আহাজারি বেড়ে যায়। শুরু থেকে স্তব্ধ থাকলে, মেয়ের লাশের কফিন দেখে কান্না চেপে রাখতে পারেননি, কম্পার বাবা পরবাচন্দ্র বর্মনও। কফিন আলিঙ্গন করে, কম্পা কম্পা বলে কান্না করতে থাকেন।

পারবা চন্দ্র বর্মণ ভোরের কাগজকে বলেন, মৌলভীবাজারের চানপুরে তাদের গ্রামের বাড়ি। ৩ মেয়ে ২ ছেলের মধ্যে কম্পা ৩য়। স্কুল বন্ধ থাকায়, রূপগঞ্জের গাউছিয়া এলাকায় ফুফু পতি বর্মনের বাসায় বেড়াতে আসে। সেখান থেকে প্রতিবাসীদের মাধ্যমে সেজান জুস কারখানায় কাজ নিয়েছিলো কম্পা। ৭ জুলাই চাকরি নিয়ে ৮ জুলাই পুড়ে মারা যায় কম্পা। কান্না করতে করতে তিনি বলেন, আগুন লাগার আগের দিন কথা হইছে, আমারে বলে আব্বা কেমন আছো। কোরবানির সময় বাড়ি আসবো। চিন্তা কইরোনা আমার জন্য। কেন যে মেয়েটারে চাকরি করতে দিতে রাজি হইছিলাম। সোনার টুকরো মাইয়া আমার কয়লা হয়ে বাড়ি ফিরতাছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App