কালীগঞ্জে অসময়ের শিম চাষে বাজিমাত
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২১, ১০:৩৬ পিএম
শিম ক্ষেত
মাঠের পর মাঠ জুড়ে সিম ক্ষেত। সেই ক্ষেতেই সদ্য ফোটা সিম ফুলে যেন এক অপরুপ সৌন্দর্ন্দে্যর সৃষ্টি হয়েছে। ছড়ায় ছড়ায় ঝুলছে শিম। সেই ক্ষেতে কাজ করছেন কৃষকেরা। মহামারি করোনার ভয়াবহতার মধ্যেও তাদের কণ্ঠে যেন বইছে আনন্দের সুর। চোখে পড়ার মতো এমন দৃশ্যটি এখন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সুবিতপুর গ্রামের মাঠে। ক্ষেতে কাজে এসে প্রচণ্ড রোদে পুড়লেও নেই তাদের কোন ক্লান্তি। কারণ অসময়ের শিম চাষে বাম্পার মূল্য পাচ্ছেন কৃষকেরা।
কৃষকদের ভাষ্য, এ শিমগাছ বৃষ্টি সহিঞ্চু। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি সিম ১০০ থেকে ১২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ হিসাবে প্রতি বিঘায় খরচ বাদে প্রায় লাখ টাকা আয় করবেন বলে তারা আশাবাদী।
সরেজমিনে উপজেলার রাখালগাছী ইউনিয়নের সুবিতপুর গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক কৃষকই তাদের ক্ষেতে অসময়ের শিমের চাষ করেছেন। ওই গ্রামের সবজি চাষি বাপ্পারাজ জানান, সিম সাধারণত শীতকালীন সবজি। এর আগে বর্ষাকালে চাষ হতো না। কিন্ত ভিন্ন জাতের এ সিম এখন বারোমাস চাষ করা যায়। তিনি এবার ৪ বিঘা জমিতে এ ভিন্ন জাতের সিম চাষ করছেন। তার গ্রামের কৃষক রফি উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম, হাসেম আলী, ইমরান হোসেন, হারুন অর রশিদ, রহমত, পান্নু রহমান,আব্দুল সাত্তার সহ অনেক কৃষক প্রায় অর্ধশত বিঘা জমিতে গ্রীস্মকালীন এ জাতের শিম চাষ করছেন।
ওই গ্রামের শহিদুল ইসলামসহ সিম আবাদ করা কৃষকরা জানান, অসময়ের আবাদ করা এ শিম নতুন সবজি হিসেবে বাজারে বেশ চাহিদা। দামও বেশি থাকে। ক্ষেতেও ভালো ফলন হচ্ছে। তারা জানায়, প্রতি বিঘা শিম আবাদে বীজ, সার, কীটনাশক ও মাঁচার টাল দেওয়া বাবদ প্রায় ১৫/২০ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। শ্রাবণ মাসের প্রথম দিকে এ শিমের বীজ বপন করতে হয়। পরবর্তীতে চারা গজানোর ২৫ থেকে ৩০ দিনের মাথায় ফুল আসে। এরপর দেড় মাস পর থেকেই শিম তোলা শুরু হয়। একটানা ৬ মাস পর্ষন্ত ক্ষেত থেকে শিম উঠানো যায়।
কৃষকরা আরো জানায়, বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি শিম ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে শীত মৌসুম শুরু হলেই এ শিমের বাজার মূল্য কমে যাবে। তারপরও সব মিলিয়ে তাদের জমিতে অসময়ের এ শিম চাষে বিঘা প্রতি প্রায় লাখ টাকা মুনাফা পাবেন বলে আশাবাদী।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিকদার মোহায়মেন আক্তার জানান, এ বছর উপজেলার বেশ কিছু এলাকার কৃষকেরা জমিতে শিমের চাষ করেছেন। অসময়ের শিম হওয়ায় দামও ভালো পাচ্ছেন। ফলে কৃষকেরা দিন দিন শিম চাষে ঝুঁকছেন।