রূপগঞ্জ ট্র্যাজেডি: মোবাইলে মাকে খোঁজে ছোট্ট সুমাইয়া
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২১, ০৩:২১ পিএম
মায়ের লাশ নিতে ঢামেকের মর্গে সুমাইয়া। আর কখনো মায়ের চেহারা দেখা হবে না। রূপগঞ্জ অগ্নিকাণ্ডে তার মা নিহত হন। ছবি: ভোরের কাগজ
সুমাইয়া ২৭ দিন ধরে মায়ের জন্য বসে থাকে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে।
মেয়ের সঙ্গে তার চাচী তাকে শান্তনা দিচ্ছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গের পাশে বাউন্ডারির দেয়াল ঘেঁষে দাড়িয়ে আছে সুমাইয়া নামে এক মেয়ে। দুচোখের পানিতো মুখে মাস্ক ভিজে একাকার। তবুও থামছেনা অশ্রু। বাকরুদ্ধ মেয়েটি কেঁদেই চলেছে। তার পাশে বসে চোখের জল ফেলছে, চাচী ও প্রতিবেশিরা। কাছে যেতেই মেয়েটির চাচী শারমিন বলা শুরু করলেন, মেয়েটা আর কত কাঁদবে। আজ ২৭ দিন ধরে কাঁদছে।
[caption id="attachment_300807" align="aligncenter" width="555"] সুমাইয়া ২৭ দিন ধরে মায়ের জন্য বসে থাকে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে।[/caption]মোবাইলে ছবি দেখে আর মাকে ফেরত আনতে বলে। আমরা কোথায় পাবো ওর মাকে। আজ লাশ দিবে, তাও দেখা যাবেনা। অল্প বয়সী মেয়েটাকে এখন আদর করবে কে।
পাশে যেতে আরও জোরে কান্না শুরু করে মেয়েটি। পরে ধীরে ধীরে বলতে থাকে, মাকে খুব দেখতে মন চাচ্ছে। কিন্তু দেখতে পারবোনা আর কখনোই বলেই আবার কান্নায় ভেঙে পরে।
[caption id="attachment_300808" align="aligncenter" width="458"] মেয়ের সঙ্গে তার চাচী তাকে শান্তনা দিচ্ছেন।[/caption]তার চাচী শারমিন বলেন, নারায়ণগঞ্জের ভোলাকান্দা এলাকায় তাদের বাড়ি। সুমাইয়ার বাবা জাহিদ মিয়া দর্জির কাজ করেন। করোনাকালে সংসারের অভাব দূর করতে সেজান জুস কারখানায় কাজ নিয়েছিলেন ফিরোজা।
৮ম শ্রেণির ছাত্রী মেয়ে সুমাইয়া বলেন, মায়ের খুব স্বপ্ন ছিলো আমাকে ডাক্তার বানানোর। আমি যেন মানুষের সেবা করতে পারি সেই কথা বলতো। আজ কতদিন হয়ে গেলো মায়ের কাছে ঘুমাইনা। পড়াশোনা করার কথাও কেউ বলেনা।
চাচী শারমিন বলেন, ছোটবেলা থেকেই সুমাইয়া মেধাবী শিক্ষার্থী। ১ম শ্রেণি থেকে এখন পর্যন্ত ক্লাসে রোল ১। ৫ম শ্রেণিতে বৃত্তিও পেয়েছে। ফিরোজার স্বপ্ন ছিল মেয়ে ডাক্তার হবে। জানিনা ওর স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো কিনা।