দীর্ঘ ৫৫ বছর পর আজ রবিবার দুপুর বিকেল নাগাদ ভারতের আসাম প্রদেশ থেকে হলদিবাড়ি হয়ে  ৪৫টি ওয়াগান বোঝাই কয়লা নিয়ে একটি পণ্যবাহী ট্রেন বাংলাদেশের চিলাহাটি স্টেশনে এসে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে প্রকৌশলী-২ ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহিম।

রবিবার (১ আগস্ট) বিকেলে ভোরের কাগজকে জানান, প্রায় ২৫০০ টন পাথর নিয়ে ৪৫ টি ওয়াগনসহ ট্রেনটি এ সময় চিলাহাটি  স্টশনে প্রবেশ করে।

তিনি জানান, এ ট্রেনটি ভারতের আসাম প্রদেশ থেকে এ কয়লা নিয়ে সকালে রওনা দেয়। এর পরে ১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ হলদিবাড়ি কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের জন্য সেখানে দাঁড়ায়। পরে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স শেষ করে ট্রেনটি বাংলাদেশের চিলাহাটি স্টেশনে আসলে আমরা ট্রেনটিকে রিসিভ করি। ট্রেনটিতে ভারতের ট্রেন পরিচালক ও ট্রেন চালকসহ কয়েকজন কর্মকর্তা আসেন। ভারতীয় রপ্তানী কারক এ কে মিনারেল্স প্রাইভেট কোম্পানী অব কলকাতা এই আড়াই হাজার মেট্রিক টন পাথর তাদের বাংলাদেশি আমদানি কারক কোম্পানির মাধ্যমে দেশে পাঠাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশ ও ভারত মধ্যে বাণিজ্যের নতুন দুয়ার খুলবে বলে জানিয়েছেন দু’দেশের রেল কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, এ রুটটি আগেই দু দেশের প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছিলেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে বন্ধ হয়ে ছিল। আজ রুটটি পূনরায় চালু হলো, এর ফলে দু’দেশের বাণিজ্য ও পর্যটনের নতুন দুয়ার খুলে গেলো। করোনা কালে আপাতত মালবাহী ট্রেন চলবে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে এ উপলক্ষে ভারতীয় রেলওয়ের দুটি ইঞ্জিন নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছেড়ে হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে নীলফামারীর চিলাহাটি সীমান্ত অতিক্রম করে পরীক্ষামূলক যাত্রা শেষ করে পূনরায় ফিরে যায়। এ সময় ভারতীয় রেলের একটি প্রতিনিধি দলও চিলাহাটিতে আসেন। এসময় ভারতীয় প্রতিনিধিরা জানান, আজ ১ আগস্ট থেকে এই পথে দুইটি পণ্যবাহী ট্রেন চালু হবে। শুরুতে পণ্যবাহী ট্রেনে ভারত থেকে পাথর ও গম আসবে। এই পথে অক্সিজেনবাহী ট্রেনও চলাচল করতে পারে।

এ বিষয়ে আব্দুর রহিম জানান, আজ থেকে রুটটিতে পণ্যবাহি ট্রেন চলাচল শুরু হলো। এর ফলে দুদেশের ব্যবসায়ীদের বিশেষ সু্বিধা হবে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর ফের হুইসেল বাজিয়ে আজ  ৪৫টি ওয়াগন ভরে  ২৫০০ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে বাংলাদেশে এলো ভারতীয় ট্রেন। এ রেলপথে আসা ট্রেনের গন্তব্য হবে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পর্যন্ত। তবে ভারতীয় ইঞ্জিন চিলাহাটি পর্যন্ত এসে থেকে যাবে। চিলাহাটি থেকে বাংলাদেশের ইঞ্জিন ওয়াগনগুলো নিয়ে যাবে নির্দিষ্ট গন্তব্যে। পণ্য খালাস শেষে ফের ওয়াগন নিয়ে ফিরে যাবে ভারতীয় ইঞ্জিন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর চিলাহাটি থেকে হলদিবাড়ি পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেছিলেন বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। এছাড়া চলতি বছরের ২৭ মার্চ দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন করেন। যাত্রীবাহী ট্রেনটি উদ্বোধন করা হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এখনও চালু হয়নি। অনুকূল পরিবেশ এলেই দুই দেশের পতাকা উড়িয়ে চলাচল শুরু করবে মিতালী।