×

জাতীয়

লকডাউনের পর বিচার চায় সিনহার পরিবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২১, ০৯:০৪ এএম

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় মহামারি নিয়ন্ত্রণের লকডাউনে সাক্ষ্যগ্রহণ আটকে গেলেও আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে দ্রুত বিচার কাজ দেখতে চায় পরিবার।

এই মামলায় গত ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই সাক্ষ্য গ্রহণের দিন থাকলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।

হত্যাকাণ্ডের এক বছরের মাথায় মামলার বাদী সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বলেন, লকডাউন উঠে গেলে আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে বিচার কাজ দ্রুতই শেষ হবে আশা করি। আমাদের প্রত্যাশা লকডাউন শেষে দ্রুততার সাথে সাক্ষ্য শেষ হবে। মহামারির কারণে লকডাউন দীর্ঘ হলে মামলার বিচার কাজেও ধীরতা আসতে পারে। এসময়ে সাক্ষীদের সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। হত্যাকণ্ডের পর থেকে চার্জশিট দেওয়ার সময় পর্যন্ত খুব দ্রুতই মামলার কার্যক্রম এগিয়েছে। পরবর্তীতে করোনাভাইরাস মহামারীর ফলে দেওয়া লকডাউন ও অন্যান্য কারণে কিছুটা দেরি হয়েছে। এরপরও এক বছরে অভিযোগ গঠন হয়ে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে এসেছে।

গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা। তিন বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া সিনহা ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য এর আগে প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন।

কক্সবাজারের পুলিশ ওই সময় বলেছিল, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে তল্লাশিতে বাধা দেন। পরে পিস্তল বের করলে চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে বলে জানানো হয়। পুলিশ সেদিন ঘটনাস্থল থেকেই সিফাতকে গ্রেপ্তার করে। পরে নীলিমা রিসোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শিপ্রাকে।

পরে সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনা এবং গাড়ি থেকে মাদক উদ্ধারের অভিযোগে টেকনাফ থানায় আলাদা দুটি মামলা করে পুলিশ। মামলায় সিনহা এবং তার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আসামি করা হয়। আর নীলিমা রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে গ্রেপ্তার করার সময় মাদক পাওয়া যায় অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে রামু থানায় আরেকটি মামলা করে পুলিশ।

কিন্তু পুলিশের দেওয়া ঘটনার বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতবছর ২ অগাস্ট উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তখন পুলিশের বিরুদ্ধে বিচার বহির্ভূত হত্যার অভিযোগ ওঠে।

এরপর নিহত সিনহার বোন শারমিন ৫ অগাস্ট টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে আদালতে মামলা করলে র‌্যাবকে তদন্তভার দেন বিচারক।

সিনহা হত্যা মামলার প্রধান আসামি টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।সিনহা হত্যা মামলার প্রধান আসামি টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

গতবছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫ তে দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম আলোচিত এ মামলায় ১৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

আসামিরা হলেন: টেকনাফ থানার সেসময়ের পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, মোহাম্মদ মোস্তফা, এপিবিএন এর তিন সদস্য এসআই মোহাম্মদ শাহজাহান, কনস্টেবল মোহাম্মদ রাজীব ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, পুলিশের মামলার তিন সাক্ষী নুরুল আমিন, নেজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াজ, টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মা এবং সাবেক এএসআই সাগর দেব।

মামলায় গ্রেপ্তার ১৪ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। তাদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল ছাড়া ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

অন্যদিকে সিনহার সঙ্গী সিফাত ও শিপ্রার বিরুদ্ধে মাদক আইনে পুলিশের করা দুটি মামলায় অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি জানিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App