×

জাতীয়

ঢাকায় ফিরতে পথে পথে ভোগান্তি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২১, ১১:৫২ এএম

ঢাকায় ফিরতে পথে পথে ভোগান্তি

রবিবার সদরঘাট এলাকায় লকডাউনে ফেরা পোশাক শ্রমিকদের ভোগান্তির চিত্র। ছবি: ভোরের কাগজ

ঢাকায় ফিরতে পথে পথে ভোগান্তি

বুধবার যানবাহন চালু করার পরেও কর্মস্থলে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিকদের। ছবি: ভোরের কাগজ

শিল্প কারখানার শ্রমিকদের কর্মস্থ‌লে ফির‌তে দূরপাল্লার গণপ‌রিবহন চালু হওয়ায় পরেও পথে পথে ভোগান্তি কমছে না। ফেরি এবং লঞ্চে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। বিধিনিষেধের মধ্যে স্বল্পসময়ের জন্য গণপরিবহন চলাচল এর অনুমতির পরেও দেশের অনেক জেলা থেকেই দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচল করেনি। এসব কারণে শ্রমিকদের ভোগান্তি এড়িয়ে ঢাকায় ফেরার যে উদ্যোগ নেয়া হয় তা সফল হয়নি।

[caption id="attachment_300209" align="alignnone" width="1280"] রবিবার যানবাহন চালু করার পরেও কর্মস্থলে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিকদের। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

শনিবার (৩১ জুলাই) রাত থেকেই দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়। এরপরই সব জেলার বাস টার্মিনালগুলোতে ঢাকামুখী মানুষের ঢল নামে। যাত্রী নিয়ে বাসগুলো রাজধানীর দিকে রওনা হয়। কিন্তু বাসে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ ছিলো না। ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক আসনে যাত্রী পরিবহন করতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে সরকারের নির্দেশনা কোন বাস মানেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে শতভাগ আসনে যাত্রী নিয়ে বাসগুলো ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর পথে পথে থামিয়ে আরো যাত্রী তুলে দাঁড় করিয়ে আনা হয়।

উত্তরবঙ্গ থেকে আসা যানবাহনের চাপে ঢাকা টাঙ্গাই‌ল মহাসড়‌কে ২০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়ার পর আজ সকাল ১০ টার দিকে এলেঙ্গা থেকে রাবনা বাইপাস পর্যন্ত এই সড়কে যানজটের কারণে থেমে থেমে যানবাহন চলছে। অন্যসব মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহনের চাপ বেড়েছে। সেতুর পূর্ব পাশ, এ‌লেঙ্গা, পুং‌লি, রাবনা বাইপাস এলাকায় থে‌মে থেমে যানবাহন চলছে। এই সড়কে যানবাহনের চাপ সকাল থেকে আরও বাড়ায় যাত্রী ও চালকরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কের বি‌ভিন্ন স্থানে কর্মস্থ‌লে ফেরা মানুষ‌দের উপ‌চে পড়া ভিড় রয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে পর্যাপ্ত গণপরিবহন না থাকায় মানুষ ট্রাক, মিনি ট্রাক, পিকআপ, প্রাইভেটকার, সিএনজি ও মোটরসাইকেলে গাদাগাদি করে ঢাকায় ফিরছে। চাকরি বাঁচাতে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভার আগুনেও ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ।

গণপরিবহন চলাচল করায় ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-মাওয়া সড়কেও ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ বেড়েছে।

যানবাহন এবং মানুষের চাপে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে মুন্সীগঞ্জে শিমুলিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় সব ফেরিগুলো ধারণক্ষমতার তিন চার গুণ বেশি যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পদ্মা পাড়ি দিয়ে শিমুলিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটে ফিরছে। উভয় ঘাটে ১৬টি করে ফেরি চলাচল করলেও মানুষের ভিড় কমছে না। শহীদ বরকত নামের একটি ফেরি আজ সকালে প্রায় তিন হাজার যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া ঘাট এসে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। যাত্রীর চাপে এই ফেরিতে একটি মোটরসাইকেল পর্যন্ত তোলা সম্ভব হয়নি। উভয় নৌরুটে লঞ্চে যাত্রী পারাপার চলতে থাকায় ফেরিতে ভিড় কিছুটা কম। তাড়াতাড়ি পারাপারের আশায় যাত্রীরা লঞ্চে উঠছেন। লঞ্চগুলোতে ও ধারণক্ষমতার কয়েকজন যাত্রী পারাপার করা এখানেও যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচলের অনুমতি থাকলেও তো চলাচল করেনি। সদরঘাট থেকে প্রতিদিন ৪০টি নৌরুটে লঞ্চ চলাচল করে। কিন্তু শনিবার রাতে চলাচলের অনুমতি দেয়ার পর থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত মাত্র চারটি রুটে লঞ্চ চলাচল করেছে। পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি, হুলারহাট, ভান্ডারিয়া সহ দূরের লঞ্চঘাট থেকে শনিবার রাতে কোন লঞ্চ ছাড়েনি। আজ সকালে সকাল ঘাট বাস টার্মিনালে ঢাকার নিকটবর্তী কিছু রুটে লঞ্চ চলাচল করেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, লকডাউন শুরুর পর থেকে দুই থেকে তিন জন লোক দেখাশোনার জন্য লঞ্চের অবস্থান করে। অন্য স্টাফরা বাড়িতে চলে যায়। হঠাৎ করে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হলেও প্রস্তুতি না থাকায় লঞ্চগুলো ঘাট ছাড়েনি। এছাড়া যে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে এই সময়সীমার মধ্যে লঞ্চগুলো ঢাকায় এসে আবার ফিরেও যেতে পারবে না।

এদিকে রাজধানীর ভেতরের সড়কের সব রুটে গণপরিবহন চলাচল করেছে। বাসের সঙ্গে সিএনজি অটোরিকশা ও অন্যান্য গণপরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়। তবে সংখ্যাই খুবই ছিলো। মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য চলাচলের অনুমতি দেয়ায় অনেক মালিক তাদের বাস রাস্তায় নামতে দেয়নি। আবার বেশিরভাগ পরিবহন শ্রমিকরা ঢাকার বাইরে থাকায় অনেক মালিক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় বাস নামাতে পারেনি। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে রজনীগন্ধা, মিডওয়ে, সিটি বাস চলাচল করেছে। মালিবাগে রাইদা পরিবহনের চালক হাবিবুর জানান, স্বাস্থ্য বিধি মেনে সকাল থেকে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্তু জাতি একেবারেই কম।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App