×

জাতীয়

অর্ধশতাব্দি পর এবার চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে পণ্যবাহী ট্রেন চালু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২১, ০৯:০৭ পিএম

অর্ধশতাব্দি পর এবার চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে পণ্যবাহী ট্রেন চালু

চিলাহাটি রেলস্টেশনে আসা ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রেন। ছবি: ভোরের কাগজ

দীর্ঘ ৫৬ বছর পর আবারো চালু হয়েছে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল। ভারতীয় ৪০টি বগি নিয়ে একটি মালবাহী ট্রেন এলো চিলাহাটিতে। রবিবার (১ আগস্ট) বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে ট্রেনটি ভারতের হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরে বিকেল ৫টা ২৬ মিনিটে বাংলাদেশের চিলাহাটি রেলস্টেশনে পৌছায়।

ভারতের আলিপুর দুয়ার ডিভিশনের ডোমডিং রেল স্টেশন থেকে ভারতীয় রেল ইঞ্জিনের মাধ্যমে ৪০টি পাথর বোঝাই মালবাহী ওয়াগন (বগি) হলদিবাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের চিলাহাটি রেলস্টেশনে এসে পৌছায়।

ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব নিজেও টুইটার একাউন্টে এ তথ্য নিশ্চিত করে একটি পোস্ট দেন। একই সঙ্গে ওই পোস্টে পণ্যবাহী ট্রেনটির সীমান্ত অতিক্রমণের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন।

এ পথে পণ্য পরিবহনে সাশ্রয় হবে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পথ।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে ভারতীয় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের দুটি ইঞ্জিন ভারতের নিউজলপাইগুড়ি থেকে ছেড়ে আসে। পরে হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে নীলফামারীর চিলাহাটি সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশের চিলাহাটি রেলস্টেশনে পরীক্ষামূলক যাত্রা সম্পন্ন করে পুনরায় ফিরে যায়।

চিলাহাটি ষ্টেশনে পাথরবাহী ওয়াগানগুলি রেখে ভারতীয় ইঞ্জিনসহ গার্ড মুকেশ কুমার, চালক অজিদ রায়, মনজিদ পাল ভারতে ফিরে যান। এ সময় চিলাহাটি রেলষ্টেশনে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী ডিভিশনের প্রকৌশলী-২ প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহীম,সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হাচান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম, ট্রাফিক সার্জন হাবিবুর রহমান,নীলফামারী রাজস্ব কর্মকর্তা অনির্বান কুমার শাহা, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আল-আমিন, চিলাহাটি ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা নূরুল ইসলামসহ রেলওয়ের কর্মকর্তারা। দিনাজপুরের খান এন্ড সন্স এজেন্সির আমদানীকৃত পাথরবাহী ওয়াগানগুলি বাংলাদেশের ইঞ্জিন দিয়ে চিলাহাটি থেকে যশোরের নোয়াপাড়ায় রবিবার রাত অথবা সোমবার যে কোন সময় নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গেছে ।

৫৫ বছর পর এই রেলপথ পুনরুজ্জীবিত দেখে সীমান্তে দুই বাংলার জনতা আনদ উল্লাসে মেতে উঠে।

শুরুতে পণ্যবাহী ট্রেনে ভারত থেকে পাথর ও গম আসবে বলে জানানো হয়। একই সঙ্গে এ পথে অক্সিজেনবাহী ট্রেনও চলাচল করতে পারবে। তবে আপাতত ৪০ বগির এ পণ্যবাহী ট্রেনটি দার্জিলিং এর নদী থেকে উত্তোলন করা বোল্টার পাথর বহন করবে।

রেলওয়ে সূত্রমতে, পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া রেলপথ দীর্ঘ ৫৫ বছর পর ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারতের হলদিবাড়ি পর্যন্ত পন্যবাহী ট্রেন চলাচলের উদ্ধোধন করা হয়েছিল। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্ধোধন করেছিলেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যথাক্রমে শেখ হাসিনা ও নরেদ্র মোদী। এ ছাড়া চলতি বছর ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নরেদ্র মোদি যৌথভাবে ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত আন্তদের্শীয় যাত্রীবাহী মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্ধোধন করেন। যাত্রীবাহী ট্রেনটি উদ্ধোধন করা হলেও করোনা পরিস্থিতিতে যাত্রী বাহী ট্রেনের চাকা আপাতত থামিয়ে রেখেছে। অনুকুল পরিবশে আসলেই দুই দেশের পতাকা উড়িয়ে চলাচল শুরু করবে মিতালী।

১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট পাক-ভারত বিভক্তের পরও এপথে রেল চলাচল চালু ছিল। সে সময়ে এ পথে দুই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলাচল করতো যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর বন্ধ হয় দুই দেশের মধ্যে রেল চলাচল। বন্ধ থাকা পথটি চালু করতে ৮০ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেয় বর্তমান সরকার। প্রকল্পটির মধ্যে রয়েছে চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে সীমান্ত পর্যন্ত ৬ দশমিক ৭২৪ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ ও দুই দশমিক ৩৬ কিলোমিটার লুপলাইন নির্মাণসহ অন্যান্য অবকাঠামো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App