×

অর্থনীতি

টেকসই নদীখনন ও ব্যবস্থাপনা অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্যতম চালিকাশক্তি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২১, ০৫:১৩ পিএম

টেকসই নদীখনন ও ব্যবস্থাপনা অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্যতম চালিকাশক্তি

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি

টেকসই নদীখনন ও ব্যবস্থাপনা অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্যতম চালিকাশক্তি

অর্থনীতিতে নদীপথের অবদান বাড়ানোর লক্ষ্যে নদীপথের অভিগম্যতা বৃদ্ধি ও টেকসই নদী খনন কার্যক্রম সম্প্রসারণ, জাতীয় বাজেটে এখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, ড্রেজিং কার্যক্রমে ব্যবহৃত ক্যাপিটাল মেশিনারী আমদানিতে আমদানি শুল্ক, ভ্যাট ও অগ্রীম কর হ্রাসকরণ, নদী খনন ও ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন কার্যক্রমকে সরকারের ফাষ্ট-ট্রাক’র আওতায় অর্ন্তভুক্তিকরণ, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষনে আর্থিক প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে ডিসিসিআই।

আজ শনিবার (৩১ জুলাই) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ‘টেকসই নদী খনন: চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকার’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় সংসদের সদস্য ও এফবিসিসিআই’র প্রাক্তন সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার উক্ত ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নেন।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, অতীতে বর্ষা মৌসুমে আমাদের নদীপথের দৈর্ঘ্য ২৪,০০০ বর্গমাইল হলেও, বর্তমানে তা ৬,০০০ বর্গমাইলে নেমে এসেছে এবং শুকনো মৌসুমে এটি ৩,৬০০ বর্গমাইলে গিয়ে পৌঁছায়।

তিনি বলেন, সরকার দেশের আভ্যন্তরীন নদীপথের প্রায় ১০,০০০ কিলোমিটার ক্যপিটাল ড্রেজিং-এর মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করার কার্যক্রম গ্রহণ করলেও তা থেকে আশানুরূপ সুফল পাওয়া যায়নি। তিনি উল্লেখ করেন, নদী খনন প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করার ক্ষেত্রে যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন, নদী শাসন এবং নদী তীরবর্তী এলাকার ব্যবহার প্রভৃতি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সারাদেশে নদীরগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে এবং এলক্ষ্যে নদী ব্যবস্থাপনার প্রতি বেশি জোরারোপের পাশাপাশি বর্তমান সরকার আরো ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহে কাজ যাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, বিগত ১২ বছর ধরে সরকার প্রতিবেশি দেশগুলোর সাথে যোগাযোগ স্থাপনে কাজ করে যাচেছ এবং আশা প্রকাশ করেন, সামনের দিনগুলোতে এর ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হবে।

তিনি বলেন, সারাদেশে নদী খননে ড্রেজার ব্যবহার দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়ায় অনেকাংশে স্বচ্ছতা আনায়ন করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ইতোমধ্যে মংলা বন্দরের স্বক্ষমতা চট্টগ্রাম বন্দরের ন্যায় উন্নীত করা হয়েছে।

[caption id="attachment_300071" align="aligncenter" width="700"] ‘টেকসই নদী খনন: চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকার’ শীর্ষক ওয়েবিনারে আলোচকরা। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

 তিনি আরো বলেন, করোনা মহামারী সময়কালে বেসরকরীখাতে সহায়তার লক্ষ্যে বেশকিছু প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে এবং দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে বেসরকারীখাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যুৎখাতের সাফল্যকে উদাহরণ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে, দেশের নদ-নদী খনন ও ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সরকার যুগোপযোগী ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করছে।

বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) বলেন, এ কাজে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ড্রেজিং সাথে সম্পৃক্ত সরকারের সকল সংস্থার মধ্যকার সমন্বয় বাড়ানো একান্ত আবশ্যক।

কবির বিন আনোয়ার বলেন, যথাযথ নদী খনন কার্যক্রম বাস্তবায়নে মানব সম্পদ ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সমন্বিত নীতিমালা আবশ্যক এবং এ লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সারাদেশে নদী খনন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমাদের ৫০০টি ড্রেজারের প্রয়োজন হলেও সর্বমোট রয়েছে ১৫৬টি, এমন বাস্তবতায় সরকারের পাশাপাশি দেশের বেসরকারীখাতকে এ খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে।

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত। তিনি জানান, ড্রেজিং প্রধানত মেইনট্যানেন্স ও ক্যাপিটাল দুই ধরনের হয়ে থাকে এবং এক্ষেত্রে নদীর চ্যানেল ব্যবস্থাপনা ও গভীরতা বৃদ্ধি, বন্দর উন্নয়ন, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহার প্রভৃতি বিষয়সমূহ অতীব জরুরী।

তিনি জানান, টেকসই ড্রেজিং-এর ক্ষেত্রে সবসময়ই অর্থনীতি, সমাজ ও পরিবেশকে প্রধান্য দেওয়া হয় এবং এ বিষয়ে আমাদের আরো সচেতন হতে হবে। তিনি আরো বলেন, ড্রেজিং’র ক্ষেত্রে টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে, আমদের অর্থনীতি আরো উপকৃত হবে। বাংলাদেশের নদী ও খাল সমূহের ড্রেজিং’র জন্য একটি মাষ্টার প্ল্যান প্রণয়ন এবং এজন্য বেসরকারীখাতকে সম্পৃক্ত করা আবশ্যক বলে, তিনি মত প্রকাশ করেন।

তিনি আরো বলেন, ড্রেজিং কার্যক্রম সফল করার লক্ষ্যে দক্ষ মানবসম্পদ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সফটওয়্যার ব্যবহার এবং ট্রেজিং এর কারণে পরিবেশে কি ধরনের প্রভাব পড়বে তা নিরূপন করার বিষয়ে আমাদের আরো মনোযোগী হতে হবে।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)’র চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক, এনজিপি, এনডিসি, এনসিসি, পিএসসি, বিএন, পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড’র সহ-সভাপতি রবার্ট হেনেসি, ডিবিএল গ্রুপ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ জাব্বার এবং ইন্সটিটিউট অফ ওয়াটার মডেলিং-এর নির্বাহী পরিচালক আবু সালেহ খান অংশগ্রহণ করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App