×

জাতীয়

টপ সিক্রেট সিগনালে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২১, ০৮:১২ এএম

পরাধীন ব্রিটিশ-ভারত থেকে পাকিস্তানের কালো অধ্যায় পেরিয়ে জন্ম হয় বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের। এই মহান অর্জনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাসের মোড় ঘোরানো নানা ঘটনা, যার কারিগর হিসেবে কেউ আখ্যায়িত হয়েছেন নায়কের অভিধায়; কেউবা  আবির্ভূত হয়েছেন খলনায়কের চরিত্রে। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে সেসব ঘটনা ও তার নায়ক-খলনায়কদের কার কি ভূমিকা, তাই নিয়েই অধ্যাপক আবু সাইয়িদের গ্রন্থ ‘যেভাবে স্বাধীনতা পেলাম’। সম্প্রতি ভোরের কাগজ প্রকাশন থেকে বের হয়েছে বইটি। এ বই থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিদিন কিছু অংশ তুলে ধরা হচ্ছে ভোরের কাগজের পাঠকদের জন্য।

টপ সিক্রেট সিগনালে ইয়াহিয়াকে ইয়াকুব বলেছিলেন, পরিস্থিতির মিলিটারি সমাধান সম্ভব নয়। রাজনৈতিক সমাধানে না আসলে, পূর্ব পাকিস্তানে আগুন জ্বলবে। ইয়াহিয়া তখন ঢাকায় এসে কথা বলে মুজিবকে শান্ত করার সিদ্ধান্ত নেন।

ইয়াহিয়াকে ইয়াকুবের টপ সিক্রেট সিগনাল ছিল, ‘পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, এতে মিলিটারি সমাধান সম্ভব নয়। আমি চেষ্টা করেছি আপনাকে এখানে এনে একটা রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছাতে, কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছি। এ সমস্যার কোনো সামরিক সমাধান নেই। সামরিক সমাধান করতে হলে অজস্র নিরপরাধ সিভিলিয়ানকে মারতে হবে। এতে সফলতা লাভ করা যাবে না। বরঞ্চ, এর মধ্যে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে। আমি এটা মেনে নিতে পারি না। তাই আমি পদত্যাগ করেছি।’

পরিস্থিতি যাতে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, রাও ফরমানকে ৫ মার্চ রাওয়ালপিন্ডিতে পাঠানো হয়। তিনি সিএমএলএ হেড কোয়ার্টারকে অবহিত করেন যে, একটি রাজনৈতিক সমাধানে আসতে না পারলে, পূর্ব পাকিস্তানে আগুন জ্বলবে। ইয়াহিয়া তখন বুঝতে পেরেছিলেন যে, তাকে ঢাকায় গিয়ে মুজিবের সাথে কথা বলতে হবে। তাকে শান্ত করতে হবে।

৬ মার্চ, ’৭১। গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা দেবেন। এ বিষয়টি ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান তার ডায়রিতে উল্লেখ করেছেন। এই প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ জনগণের প্রত্যাশাকে সামনে রেখে এবং আওয়ামী লীগের ‘অগ্রবাহিনী’ বঙ্গবন্ধুকে চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণার। ওই দিন রাতে আওয়ামী লীগ চূেড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সামরিক আইন প্রত্যাহার, সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফেরত নেয়া সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর সভা গভীর রাতে মুলতবি হয়ে যায়। এই রাতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান দীর্ঘক্ষণ টেলিফোনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কথা বলেন ‘আপনি তাড়াহুড়া করে

কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। আমি শীঘ্রই ঢাকা আসছি এবং এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।’ সিদ্দিক সালিক তার বইতে লিখেছেন, ইয়াহিয়া খান ফোনে বলেছিলেন, আমি আপনাকে প্রতিশ্রæতি দিচ্ছি, আপনার আকাক্সক্ষা এবং জনগণের প্রতি দেয়া আপনার প্রতিশ্রুতির পুরোপুরি মর্যাদা দেব। আমার কাছে একটি পরিকল্পনা আছে- যা আপনাকে ‘ছয় দফা’ থেকেও বেশি খুশি করবে। আমি সনির্বন্ধ অনুরোধ করছি, কোনো দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন না। আগামীকাল প্রকাশিত হবে ‘শাসন করা বা শাসিত হওয়ার জন্য কেউ থাকবে না’ ‘যেভাবে স্বাধীনতা পেলাম’- বইটি পাওয়া যাচ্ছে ভোরের কাগজ প্রকাশনে (ভোরের কাগজ কার্যালয়, ৭০ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা)। এছাড়া সংগ্রহ করা যাবে ভোরের কাগজ প্রকাশানা থেকেও।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App