×

জাতীয়

রাজাকারের পুত্রদের দম্ভ চূর্ণ করতে হবে জনসাধারণকে: আইজিপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২১, ০৭:৩৩ পিএম

রাজাকারের পুত্রদের দম্ভ চূর্ণ করতে হবে জনসাধারণকে: আইজিপি

বুধবার পুলিশ সদরদপ্তরে 'মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ নোয়াখালী জেলা' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। ছবি: ভোরের কাগজ

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, আমরা হতভম্ব হয়ে দেখি রাজাকারের পুত্ররা দম্ভের সঙ্গে চিৎকার করে সামাজিক মাধ্যমে বলছে, আমি রাজাকার পুত্র। যারা বাংলার মাটিতে নারীর সম্ভ্রম হরণ করেছে, লাখ লাখ মানুষকে খুন করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে তাদের সন্তানরা স্বাধীনতার মাত্র পঞ্চাশ বছরের মধ্যে কিভাবে এ দম্ভ করার দুঃসাহস পায়। সামাজিক মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষের সামনে রাজাকারদের দোসরদের এ দম্ভ চূর্ণ করতে হবে এ দেশের সাধারণ মানুষকে।

বুধবার (২৮ জুলাই) দুপুরে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে ভার্চুয়ালি নোয়াখালী জেলা পুলিশ নির্মিত মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্য 'নির্ভীক', নবনির্মিত সুধারাম মডেল থানা, সোনাপুর পুলিশ ফাঁড়ি, পুলিশ লাইন্স নারী ব্যারাক ভবন উদ্বোধন এবং 'মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ নোয়াখালী জেলা' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সভাপতি হাবিবুর রহমান, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইকবাল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা নোয়াখালী জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার শহিদ আব্দুল হাকিমের মুক্তিযুদ্ধে অনবদ্য অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স প্রান্তে অতিরিক্ত আইজি ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত আইজি এস এম রুহুল আমিন, অতিরিক্ত আইজি মো. মাজহারুল ইসলাম, এটিইউ'র অতিরিক্ত আইজি মো. কামরুল আহসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রকাশিত বইটি সম্পাদনা করেছেন মো. আলমগীর হোসেন। গবেষণায় ছিলেন, এ কে এম গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ, আবু নাছের মঞ্জু ও মো. এনায়েত করিম।

আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তার আহবানে সাড়া দিয়ে আমাদের পূর্বসূরীরা যে দেশটিকে আমাদের জন্য উপহার দিয়েছেন, তাদের যে অনবদ্য আত্মত্যাগ, সে আত্মত্যাগের মর্যাদা ধরে রাখার অন্যতম উপায় হচ্ছে পরবর্তী প্রজন্মের সামনে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা। এটি একটি ঐতিহাসিক দায়, একটি ঐতিহাসিক কর্তব্য। দেশ ও মানুষের জন্য, স্বাধীনতার জন্য স্ত্রী ও সন্তানসহ স্বপরিবারে নোয়াখালী জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার আবদুল হাকিমের মহান আত্মত্যাগের কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন আইজিপি। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী নোয়াখালী জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা ও বীর পুলিশ সদস্যদের অবদানকেও সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন তিনি।

পুলিশ প্রধান বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এ দেশের মানুষ যে দুর্নিবার আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছিল আমাদেরকে সেই অহংকারের জায়গাগুলোকে আরও সুসংহত করতে হবে। এেেত্র এ ধরনের পুস্তক, ভাস্কর্য হতে পারে অন্যতম নিয়ামক, যাতে আমরা কখনো ইতিহাস বিস্মৃত না হই। তিনি বলেন, এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশের যে অবদান, ভূমিকা রয়েছে তা দুটি কারণে ডকুমেন্টেড হওয়া দরকার। একটি হলো জাতির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অংশ হিসেবে এবং বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ইতিহাস,  ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে।

আইজিপি বলেন, পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি যে যেখানে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, যেখানে যে বীরত্বগাথা রচিত হয়েছে তা তুলে আনতে হবে। বাঙালি জাতির উত্তরণের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের যে ভূমিকা রয়েছে তা ডকুমেন্টেড হতে হবে। একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে এগুলোকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে ডকুমেন্টেড করতে হবে, যাতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এর মর্যাদা অনুভব করতে পারে, অহংকার করতে পারে, একটা মর্যাদাবান জাতি হিসেবে নিজেদের তৈরি করতে পারে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে সবাইকে সচেষ্ট হওয়ার আহবান জানান আইজিপি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App