×

মুক্তচিন্তা

স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টার জন্মদিন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২১, ১২:৫৫ এএম

স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টার জন্মদিন

গাজী হাসান মাহমুদ

[caption id="attachment_299116" align="alignleft" width="141"] গাজী হাসান মাহমুদ[/caption]

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার (২৭ জুলাই)। একইদিনে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও জননেত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন। বাংলাদেশের জন্মসাল ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধকালে এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। সে কারণে জয় বাংলাদেশেরও সমবয়সী।

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৭ জুলাই ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের একঝাঁক সাবেক নেতাদের সমন্বয়ে আহবায়ক কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে সেবা, শান্তি ও প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ গঠন করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে।

[caption id="attachment_265150" align="aligncenter" width="700"] সজীব ওয়াজেদ জয়। ফাইল ছবি[/caption] স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাথে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে জানা যায়, ১৯৩৮ সালে ব্রিটিশ ভারতের গোপালগঞ্জ মহকুমায় আসেন তৎকালীন বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও শ্রমমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী। তরুণ শেখ মুজিবুর রহমান তখন গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলের ছাত্র। সেই সময় তার নেতৃত্বে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়ে তোলা হয়। ৫০ এর দশকে গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তত্ত্বাবধানে গঠিত স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান করা হয়েছিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমানকে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার কে.এম.দাস লেনের রোজ গার্ডেনে প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের প্রধান রাজনৈতিক সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। প্রতিষ্ঠাকালীন প্রথম কাউন্সিলে জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। তখন থেকেই স্বেচ্ছাসেবীদের এই সংগঠনের সাংগঠনিক গোড়াপত্তন ঘটে। পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাংলার জনগণের আন্দোলন সংগ্রামের উত্তাল সময়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত জাতীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাককে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান করা হয়। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে এই সংগঠনের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ পুনর্গঠনে নিরলসভাবে কাজ করেন। ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে এই সংগঠনের কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে পড়ে। ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর জননেত্রী শেখ হাসিনা অনুভব করেন, মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় একটি স্থায়ী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জরুরি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৪ সালে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক নেতাদের সমন্বয়ে আহবায়ক কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে নতুন আঙ্গিকে সুদৃঢ় সাংগঠনিক কাঠামোর উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের যাত্রা শুরু হয়। আওয়ামীলীগের সাংবিধানিক সহযোগী সংগঠন হিসেবে ‘বাহিনী’ শব্দ বাদ দিয়ে ‘লীগ’ শব্দটি যুক্ত করা হয়। ছাত্রলীগ এই সংগঠনের প্রাথমিক ভিত্তি। তাই মূলনীতি হিসেবে ছাত্রলীগের মূলনীতিকে প্রাধান্য দিয়ে সেবা, শান্তি ও প্রগতি করা হয়। ২০০৩ সালের ২৭ জুলাই বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রথম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন সাবেক ছাত্রনেতা বর্তমানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সাবেক ছাত্রনেতা পংকজ দেবনাথ। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আ. ফ. ম বাহা উদ্দিন নাছিমের নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশে একঝাঁক স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশব্যাপী সুসংগঠিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সংগঠনটি পরিণত হয় নেত্রী শেখ হাসিনার বিশস্ত ভ্যানগার্ড হিসেবে। ২০১২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন এডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছার এবং সাধারণ সম্পাদক পুনঃনির্বাচিত হন পংকজ দেবনাথ। [caption id="attachment_238403" align="aligncenter" width="700"] ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ফাইল ছবি।[/caption]

তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানে স্বেচ্ছাসেবক লীগের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলন হয়। এই সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন বিপ্লবী জননেতা বাবু নির্মল রঞ্জন গুহ এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সংগ্রামী জননেতা এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু। তারা নেতৃত্ব গ্রহণের পরপরই চীনের উহান থেকে শুরু করে সারা বিশ্বে নেমে আসে কোভিড-১৯ এর কালো অন্ধকার। একে একে পৃথিবীর সকল দেশে আছড়ে পড়ে প্রাণঘাতী করোনার, থেমে যায় জীবন যাত্রা, লকডাউনে চলে যায় প্রায় প্রতিটি দেশ। বাংলাদেশেও নেমে আসে কোভিড লকডাউনের কালো অন্ধকার। থেমে যায় জীবন-জীবিকা, স্থবির হয়ে পড়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা, রোগী বহনের অ্যাম্বুলেন্স সেবায় দেখা দেয় সংকট, কৃষকের পাকা ধান মাঠে পড়ে থাকে, করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকে, সৎকারের জন্য এগিয়ে আসেনা কেউ, সংকট দেখা দেয় মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের, নিম্নবিত্ত মানুষেরা আয় রোজগার না থাকায় অভুক্ত দিন পার করছিল, অন্ধকার অমানিশায় ছেয়ে যায় দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে মানব সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়ে, সাহায্য নিয়ে ছুটে যান সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে।

করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ শুরুতেই সাধারণ জনগণকে সচেতন করতে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ শুরু করে, স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা ফ্রি টেলি-হেলথ কলসেন্টার, ফ্রি মেডিকেল সার্ভিস, ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স, ফ্রি অক্সিজেন সেবা চালু করে। করোনায় মৃত লাশ গোসল ও দাফন-কাফন, সৎকারের ব্যবস্থা করেছে, জরুরী খাদ্য সহায়তা দিতে কলসেন্টার ‘হ্যালো স্বেচ্ছাসেবক লীগ’ চালু করেছে, কৃষকদের পাকা ধান মাঠ থেকে কেটে মাড়িয়ে ঘরে তুলে দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিক মহামারী করোনায় বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে ২ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড বক্তব্য রাখেন। সংগঠনটির ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় অসামান্য ভূমিকার জন্য ১৭ টি “করোনাযোদ্ধা সম্মাননা-২০২০” প্রদান করে। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে আলোচনা সভা, দেশব্যাপী রক্তদান কর্মসূচী, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন প্রকাশ ও প্রচার কার্যক্রম, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে “স্বেচ্ছাশ্রমে বাংলাদেশ: বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ভাবনা” শীর্ষক আলোচনা সভা, ৪ দিন ব্যাপী “ইতিহাস কথা কয়” শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

[caption id="attachment_279042" align="aligncenter" width="700"] করোনা মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ফ্রী টেলিহেলথ সার্ভিস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। ফাইল ছবি[/caption]

উগ্রসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী হেফাজত দ্বারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও প্রতিরোধ সংগ্রাম, করোনা ভয়াবহতার মধ্যে শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশে হঠাৎ করে বিএনপি-জামাত গোষ্ঠী জ্বালাও-পোড়াও, নাশকতা শুরু করলে গর্জে ওঠে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলে। মুজিব শতবর্ষে ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’র যোগদানকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী হেফাজতের জ্বালাও-পোড়াও এবং নাশকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে নির্মল-বাবুর নেতৃত্বে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হন স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সংগঠনের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ এবং সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু। ইতোমধ্যে আবিষ্কৃত হয় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন, বিশ্বের পরাক্রমশালী রাষ্ট্রগুলো যেখানে ভ্যাকসিন সংগ্রহে ব্যর্থ ঠিক তখনই ভ্যাকসিন কূটনীতিতে সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শুরুতেই ভ্যাকসিন পেয়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু আমাদের দেশের বিরোধীদলগুলো ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট প্রপাগান্ডা ছড়াতে থাকে। এসময় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিতে সাধারণ জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন ক্যাম্প স্থাপন করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুসারে জননেত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের চিন্তা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী “ডিজিটাল বাংলাদেশ” আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের “ভার্চুয়াল সম্মেলন-২০২১” সফল ভাবে সম্পন্ন করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

[caption id="attachment_153162" align="aligncenter" width="700"] ধানমন্ডিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি[/caption]

২৭ জুলাই শুধু স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী নয়, সজীব ওয়াজেদ জয়েরও জন্মদিন। জন্মদিনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে জানাই “শুভ জন্মদিন”। শুধুমাত্র ডিজিটাইজেশনের ফলে দেশের অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকিং লেনদেন, অনলাইন কেনাকাটা, চিকিৎসাসেবায় অভূতপূর্ব বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। ক্রমেই কৃষিভিত্তিক সমাজ প্রযুক্তিনির্ভর সমাজে পরিণত হচ্ছে। এবারের ঈদুল আযহা উপলক্ষে সারাদেশে ডিজিটাল হাটে পশু বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৫৭৯টি, যার মূল্য ২ হাজার ৭৩৫ কোটি ১১ লাখ ১৫ হাজার ৬৭৮ টাকা। অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

বঙ্গবন্ধু একটি অসাম্প্রদায়িক, শোষণমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত ও উন্নত বাংলাদেশ গড়তে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি এদেশের স্বাধীনতার জন্য, বাংলার দুঃখী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তাঁর জীবনের ৪ হাজার ৬৮২ দিন কারাগারে কাটিয়েছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী, বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রাক্কালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দারিদ্রের হার ২০.৫ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। দেশের মাথাপিছু আয় ২২২৭ মার্কিন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য বাজেট ঘোষিত হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে, ইন্টারনেট আজ হাতের মুঠোয়, শহরের নাগরিক সুবিধা গ্রামে পৌঁছে যাওয়ায় গ্রাম পরিণত হচ্ছে শহরে। বাংলাদেশের মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কক্সবাজার-রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন, কর্ণফুলী টানেল, এলএনজি টার্মিনাল, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা বন্দর, সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের কাজ চলমান। ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডসের আদলে গ্রহণ করা শতবর্ষী ডেল্টা প্ল্যান বা ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের চাবিকাঠি। সমুদ্র বিজয়ের ফলে বাংলাদেশ ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাস উত্তোলন, মৎস্য সম্পদ আহরণ, বন্দরের সুবিধা সম্প্রসারণ ও পর্যটন কার্যক্রমের মাধ্যমে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ কোটি মার্কিন ডলার উপার্জনের সম্ভাবনা আছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) সফলভাবে অর্জন করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের সূচকে বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে এবছরের সার্বিক স্কোর ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশ।

বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে, জীবন ও জীবিকার সমন্বয় ঘটিয়ে অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে ও মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শুরু থেকেই কার্যকর ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করায় দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন নিয়ে হাহাকারের সময়েও বাংলাদেশে প্রয়োগ হচ্ছে ফাইজার, মর্ডানা, অক্সফোর্ড এস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্মা, সিনোভ্যাকের মতো বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা স্বীকৃত ভ্যাকসিন। এরই মধ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণের আওতা ১৮ বছরে নামিয়ে আনা হয়েছে। ২৫ লাখ গার্মেন্টস কর্মীকে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। মহামারী মোকাবিলায় সম্মুখসারির কর্মী, বেশ কিছু পেশাজীবী শ্রেণি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, প্রবাসী কর্মী এবং অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা নির্ধারিত বয়সসীমার শর্তের বাইরে থেকেও নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন। সম্প্রতি নিম্ন আয়ের মানুষের সহায়তায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার ৫টি নতুন প্রণোদনা প্যাকেজ এবং করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে ২৩টি প্যাকেজে ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এখন এটাই সত্য- “পিতার হাতে স্বাধীনতা, কন্যায় মুক্তি/ দৌহিত্রের জাদুস্পর্শে, স্বপ্ন আজ সত্যি।”

স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী নিরলসভাবে জনগণের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। তৃণমূলে দলকে শক্তিশালী করার জন্য সারাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নীতি, আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আজ শক্তিশালী সংগঠন। দেশমাতৃকার যে কোনো প্রয়োজনে শেখ হাসিনার নির্দেশে সেবা-শান্তি-প্রগতির বীজমন্ত্রে উদ্দীপ্ত হয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকবে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এই হোক অঙ্গীকার। বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল হোক, করোনা দুর্যোগ কাটিয়ে পৃথিবীতে উঠুক নতুন রাঙা সূর্য।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App