×

সারাদেশ

শাশুড়ি ও শ্যালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে জামাই গ্রেপ্তার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২১, ০৫:৪২ পিএম

শাশুড়ি ও শ্যালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে জামাই গ্রেপ্তার

রুহুল আমিন সরকার আপেল

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে টানা তিন বছর শাশুড়ি ও শ্যালিকাকে ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ ও সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জামাই রুহুল আমিন সরকার আপেল (২৬) কে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। শাশুড়ি ও শ্যালিকার দায়ের কৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার ( ২৬ জুলাই) র‌্যাব-১৩ গাইবান্ধা ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে আটক করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানায় সোপর্দ করে।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে গণমাধ্যম কর্মীরা জানতে পারেন। বিষয়টি গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত গোপনীতা রক্ষা করা হয়। বিভিন্ন মহল থেকে সংবাদটি প্রচার না করার জন্য উপজেলা পর্যায়ের সাংবাদিকদের ব্যবস্থা করা হয়।

রুহুল আমিন সরকার আপেল গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুক কানুপুর ইউনিয়নের সমসপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। গ্রেপ্তার রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ভুক্তভোগি মা-মেয়ে বাদী হয়ে গোবিন্দঘ্হ থানায় পৃথক দুটি মামলা (৩৭ ও ৩৮) দায়ের করেছেন। দায়ের হওয়া দুটি মামলায় সোমবার বিকেলে রুহুল আমিনকে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের রামপুরা গ্রামে রুহুল আমিন সরকার আপেল তার শ্বশুরবাড়িতে প্রায়ই যাতায়াত করতেন। এরইমাঝে শাশুড়ির গোসলরত আপত্তিকর ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করে জামাই রুহুল আমিন। পরে ধারণকৃত ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শাশুড়ির ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও গোপনে ধারণ করে রুহুল আমিন। এরপর গত ২০১৮ সাল থেকে ৭ জুলাই ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় রুহুল আমিন ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার শাশুড়িকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে রুহুল আমিন তার স্ত্রীকে কালো কাপড় দিয়ে মুখ বেঁধে নগ্ন করে ছবি তুলে শাশুরির মোবাইল ফোনে পাঠাতো এবং ফোনকলে রেখে মেয়েকে মারপিট ও নির্যাতন করত।

অন্যদিকে, রুহুল আমিন তার নিজ শ্যালিকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে বিভিন্ন রকমের কৌশল অবলম্বন করে। রুহুল আমিন তার নিজ শ্যালিকাকেও ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এছাড়া শ্যালিকার ধর্ষণ চেষ্টার ছবি ও অশ্লীল ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করে।

প্রায় তিন বছর ধরে রুহুল আমিনের বিকৃত রুচির যৌনাচারের বিষয়টি সীমা ছাড়িয়ে গেলে মা-মেয়ে রংপুর র‌্যাব-১৩ ক্যাম্পের অভিযোগ করেন। এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাব সদস্যরা গত রোববার (২৫ জুলাই) রুহুল আমিন সরকার আপেলকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তার কাছ থেকে মোবাইলে ধারণকৃত অশ্লীল ভিডিও ও স্থিরচিত্রসহ মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আরিফুল ইসলাম জানান, আসামি রুহুল আমিনের পৃথক দুই মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে উপস্থিত করা হয়। এসময় তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন এবং রিমান্ড শুনানীর জন্য পরবর্তী দিনধার্য করেন আদালতের বিচারক।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করে ধর্ষকের ছবি ও তথ্য চাওয়া হলে তিনি বলেন, মা-মেয়ে বলে গেছে এটা একান্ত পরিবারের বিষয়। এসব সাংবাদিকদের যেন দেওয়া না হয়। ওসি আরও বলেন, তাদের অনুরোধের কারণে আমাদের পক্ষ থেকে কোন কিছু সাংবাদিকদের দেওয়া সম্ভব নয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App