×

সারাদেশ

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে বিনা চিকিৎসায় শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ (ভিডিও)

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২১, ১২:২০ পিএম

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে বিনা চিকিৎসায় শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ (ভিডিও)

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে শ্রমিকদের অবস্থান। ছবি: ভোরের কাগজ

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষের অবহেলায় শহীদুল ইসলাম (৩৮) নামে এক নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় লাশ আটকে রেখে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা খনির ভেতরে বিক্ষোভ করে।

শহীদুল ইসলাম বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। শনিবার (১৮ জুলাই) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তিনি খনির ভেতরে ডরমেটরিতে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার আব্দুলপুর গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেনের ছেলে।

নিরাপত্তা কর্মী শওকত আলী জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত খনিতে দায়িত্ব পালন করেন শহীদুল ইসলাম। পরে সে ডরমেটরীতে নির্ধারিত স্থানে ঘুমিয়ে পড়ে। দুপুর ১টার দিকে ঘুম থেকে উঠে অসুস্থবোধ করলে দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য খনির ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) ইমাম হাসানের কাছে এ্যাম্বুলেন্স চায় শহীদুলের সহকর্মীরা।

তিনি জানান, খনির নিজস্ব এ্যাম্বুলেন্স না দেওয়ায় বাহির থেকে অটোবাইক এনে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্ঠা করা হয়। কিন্তু খনি কর্র্তৃপক্ষ অটোবাইকটি ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়নি। ফলে পৌনে ৪টার দিকে তার কোলেই মারা যায় সহকর্মী শহীদুল। মৃত্যুর এক ঘণ্টা পর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে এ্যাম্বুলেন্স পাঠায় খনি কর্তৃপক্ষ।

নিরাপত্তাকর্মী শহীদুলের মৃত্যুর ঘটনায় আউটসোর্সিং হিসেবে কর্মরত প্রায় ২৫০ জন শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী বিক্ষুব্ধ হয়ে খনির ভেতরে বিক্ষোভ করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাশিদ কায়সার রিয়াদ, পুলিশের ফুলবাড়ী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান আসাদ খনিতে এসে বিক্ষুব্ধ শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শান্ত করেন। পরে পার্বতীপুর উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আউটসোর্সিং শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর ইউনিয়নের ৫ নেতাকে নিয়ে খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসে।

বৈঠক থেকে বাহির হয়ে রাত ৯টার দিকে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাশিদ কায়সার রিয়াদ জানান, আউটসোর্সিং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি দাওয়ার বিষয়টি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানাবে খনি কর্তৃপক্ষ। আর কর্মচারীর মৃত্যুর বিষয়টি খনি কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কামরুজ্জামান জানান, এ্যাম্বুলেন্স দেরিতে আসার বিষয়ে কোনো গাফিলতি আছে কি-না, তা খতিয়ে দেখা হবে।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি আউটসোর্সিং কর্মকর্তা-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, খনি কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই বিনা চিকিৎসায় শহীদুলের মৃত্যু ঘটেছে। দীর্ঘদিন থেকে গেট বন্ধ রেখে শ্রমিকদের ভেতরে রেখে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। খনির ভেতর দীর্ঘদিন আটকে থেকে মানসিক ও শাররীকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন তারা। এই অবস্থায় খনির গেট খুলে দেওয়া, চাকরি স্থায়ীকরণ ও শহীদুলের মৃত্যুর উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ দিতে হবে।

https://youtu.be/1d6n4fZPQI8

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App