×

বিনোদন

আড়ালে তাহসান-ফারিয়া

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২১, ০৮:৫৮ এএম

আড়ালে তাহসান-ফারিয়া

তাহসান-ফারিয়া

আড়ালে তাহসান-ফারিয়া

আমার জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান। তার সব গান আমার পছন্দের। ইভ্যালিতে তাহসান যুক্ত হয়েছেন জেনেই আমি এই প্রতিষ্ঠানে একটি এসি অর্ডার করি। কিন্তু ৪ মাস পার হলেও পণ্য কিংবা টাকা কোনোটাই পাচ্ছি না। জনপ্রিয় শিল্পীদের মুখে এমন ধোকাবাজ প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে গুণগান না করাই ভালো। কথাগুলো বলেন রাশেদ আহসান নামে এক ভুক্তভোগী।

সেলিব্রেটি বা তারকাদের নিয়ে সারা বিশ্বেই সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের উন্মাদনা কাজ করে। আর যদি সেই তারকারা জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে অবস্থান করেন, তবে তো কথাই নেই। কোনো প্রতিষ্ঠানের বা পণ্যের প্রচারণায় যখন জনপ্রিয় কোনো শিল্পী বা অভিনেত্রী থাকেন, তখন সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিবাচক ধারণা কাজ করে।

সম্প্রতি দেশের আলোচিত-সমালোচিত ই-কমার্স সাইট ইভ্যালিতে যুক্ত হয়েছেন শোবিজের দুই জনপ্রিয় তারকা তাহসান খান ও শবনম ফারিয়া। গত ১ জুন জনসংযোগ, মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস প্রধান হিসেবে যুক্ত হন দেবীখ্যাত শবনম ফারিয়া। এর আগে গত ১০ মার্চ ‘ফেস অব ইভ্যালি’ নির্বাচিত হন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী তাহসান। পাশাপাশি ‘চিফ গুডউইল অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। আগামী দুই বছরের জন্য ইভ্যালি ডটকম ডটবিডি’র ‘ফেস’ হয়ে থাকবেন বলে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। সে সময় তাহসান বলেছিলেন, ‘আমি বিলিভ (বিশ্বাস) রাখি ইভ্যালিতে। আমি বিশ্বাস করি যে, ইভ্যালি একদিন গ্লোবাল ব্র্যান্ডে পরিণত হবে।’

তাহসান ও শবনমের কাছে ইভ্যালির গুণগান শুনে সে সময় তাদের অনেক ভক্ত শুভাকাক্সিক্ষরা পণ্য কিনতে আগ্রহী হন। অনেকের মনেই এখন প্রশ্ন, কত টাকার বিনিময়ে তারা নিজেদের জনপ্রিয়তাকে বিক্রি করেছেন?

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে গত কয়েক বছরে বেশকিছু ই-কমার্স সাইট হয়েছে, যেগুলো গ্রাহকদের অবিশ্বাস্য ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রি করছে। তবে টাকা নিয়েও পণ্য সরবরাহে বারবার সময় নেয়ার অভিযোগ আছে। তাদের ব্যবসার কৌশলও স্পষ্ট নয়। এ কারণে নানা সন্দেহ-সংশয় আছে মানুষের মধ্যে।

গত ৪ জুলাই গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে অগ্রিম নেয়া ৩৩৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ কিংবা অবৈধভাবে সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা করে ইভ্যালি ডটকমের বিরুদ্ধে মামলা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে দুদক। এজন্য ৮ জুলাই দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করেছে কমিশন। টিমের আরেক সদস্য দুদকের উপসহকারী পরিচালক শিহাব সালাম। গত মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দেয়া এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

বর্তমানে ইভ্যালি অফিসে গিয়ে হতাশ হচ্ছেন গ্রাহকরা। এমনকি তাদের কলসেন্টারে ফোন দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে গ্রাহকরা আরো বেশি আতঙ্কিত হচ্ছেন। যে তারকাদের ভালোবাসায় ইভ্যালি থেকে পণ্য কিনতে আগ্রহী হয়েছেন তারাও এখন অনেকটাই গা ঢাকা দিয়েছেন। চিফ গুডউইল অফিসার তাহসান এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারিয়া বিষয়টি নিয়ে নিশ্চুপ। এমনকি তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ। ভোরের কাগজ থেকে বারবার যোগাযোগ করেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।

তবে সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফারিয়া বলেছেন, আমাদের কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস এখনো ২৪ ঘণ্টা চালু আছে। লকডাউনের কারণে আমাদের অফিসে কেউ যাচ্ছে না, আমরা হোম অফিস করছি। কিন্তু আমাদের ডেলিভারি চালু আছে এবং কাস্টমার কেয়ার ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে।

এ সময় কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে কোনো উত্তর না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ফারিয়া বলেন, আমরা খুব কঠিন সময় পার করছি। অনেকে অনেক কিছু নিয়ে ভীত, তারা ফোন করে বিভিন্ন বিষয়ে খবর জানতে চাইছে। তাই ফোন অনেক সময় ব্যস্ত দেখাচ্ছে। কিন্তু আসলে সব সময় ফোন ব্যস্ত থাকছে, বিষয়টা তেমন নয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App