বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গায় লকডাউনে দুশ্চিন্তায় গরু ও ছাগলের খামারিরা
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২১, ০৫:৫৭ পিএম
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মুনাফা লাভের আশা দেখলেও লকডাউনের কারণে মাথায় হাত পড়েছে খামারিদের। ছবি: ভোরের কাগজ
ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার গরুর খামারিরা কোরবানির ঈদের আগে কঠোর লকডাউনে দুশ্চিন্তায় পড়েছে। এই দুই উপজেলার অনেক খামারি মালিকের কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গরু কিংবা ছাগল বিক্রিই তাদের উপার্জনের একমাত্র উৎস। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সারা বছর এই দুই উপজেলার শতাধিক খামারি মুনাফা লাভের আশা দেখলেও ঈদের আগে কঠোর লকডাউনের কারণে মাথায় হাত পড়েছে গরু খামারিদের।
ঈদের দিন যত এগিয়ে আসছে ততই শঙ্কা ঘিরে ধরছে খামারিদের। করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরেও ব্যবসা করতে পারেননি স্থানীয় গরু খামারি ও ব্যবসায়ীরা। এবারও যদি একই অবস্থা হয়, তাহলে পথে নামা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না বলে মনে করেন অনেক খামারি।
জানা গেছে, দুই উপজেলায় ছোটবড় মিলে প্রায় দুই শত জন খামারি আছেন যারা প্রতি বছর গরু পালন করে কোরবানির সময় বিক্রয় করে থাকেন। কিন্তু এ বছর মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের কাজ না থাকায় তাদের হাতে অর্থ নেই। তাই গরু কোরবানির জন্য ক্রেতাদের মধ্য তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। ফলে হতাশার মধ্যে দিনযাপন করছেন খামারিরা।
কঠোর লকডাউনের পর ঈদের আগে এক সপ্তাহেরও কম সময় থাকে। ওই সময়ে একটি হাটে সব গরু প্রকৃত মূল্যে বিক্রি করা যাবে কি-না, গরুর হাটে ক্রেতাদের আধিক্য থাকবে কি-না, এ শঙ্কায় অনেক খামারি মালিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের ঠিকানা সংবলিত খামারের গরুর ছবি প্রকাশ করছেন।
বোয়ালমারী ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন পৌর বাসিন্দা মো. ছিদ্দিক মোল্যা নামে এমন একজন গরুর মালিক জানান, করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর গরুর হাট বসে কি-না এই দুশ্চিন্তায় গরু বিক্রির খবর ফেসবুকে দিয়েছি। যাতে মানুষ জানতে পারে।
অনুরূপ মত প্রকাশ করেন আলফাডাঙ্গা উপজেলার জয়দেবপুর গ্রামের রহিমা বেগম। তিনি জানান, তার ২২টি উৎকৃষ্ট ছাগল আছে। ঈদে বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে হাট না বসার আশঙ্কায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আগ্রহী ক্রেতাদের যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের শিরগ্রাম নিবাসী কাজী শহিদুল ইসলাম সজলের খামারে ২৬টি গরু ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন। তিনিও হতাশ। আদৌ সবগুলো গরু বিক্রি হবে কি-না এবং হলে প্রকৃত দাম পাবেন কি-না এ নিয়ে রয়েছে সংশয়। ঈদে গরুগুলো বিক্রি না হলে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানান। তিনিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন গরু বিক্রির জন্য। তবে তিনি বলেন, স্বাস্থবিধি মেনে গরুর হাট বসানো সম্ভব হলে ভালো হয়।